কোভিড টিকা ক্রয়ে ইইউ প্রধানের গোপন বার্তা, মামলায় রায় আজ

বাসস
প্রকাশ: ১৪ মে ২০২৫, ১২:৫১

ঢাকা, ১৪ মে, ২০২৫ (বাসস) : ইউরোপীয় কমিশন কোভিড-১৯ টিকা সংগ্রহের সময় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়েছিল কি না, সে বিষয়ে বুধবার রায় দিতে যাচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের শীর্ষ আদালত। বিশেষ করে কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ফন ডার লিয়েন ও ফাইজারের প্রধান নির্বাহী আলবার্ট বোরলার মধ্যে পাঠানো খুদে বার্তাগুলো প্রকাশ না করায় এ প্রশ্ন ওঠে। 

ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিচার আদালত (ইইউসিজে)-র মামলাটি কমিশন প্রেসিডেন্টের শাসনব্যবস্থায় স্বচ্ছতা ও জবাবদিহি বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। কারণ, অনেকে তার প্রশাসনের বিরুদ্ধে ‘একরোখা ও অস্বচ্ছ’ সিদ্ধান্ত গ্রহণের অভিযোগ তুলেছে।

মামলার অভিযোগ করা হয়, ২০২১ সালে কোভিড টিকা কেনার জন্য ফাইজারকে প্রধান সরবরাহকারী হিসেবে বেছে নেয় ইউরোপীয় ইউনিয়ন। তখন ফন ডার লাইয়েন ও বোরলার মধ্যে যে ব্যক্তিগত খুদে বার্তা চালাচালি হয়, সেগুলো পরে প্রকাশ করা হয়নি।

২০২৩ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস তথ্য অধিকার আইনের আওতায় বার্তাগুলো দেখতে চেয়েছিল। কিন্তু কমিশন জানায়, তারা বার্তাগুলো খুঁজে পাচ্ছে না, কারণ সেগুলো সংরক্ষণ করা হয়নি। তাদের দাবি, বার্তার বিষয়বস্তু 'গুরুত্বপূর্ণ' না হলে তা রেকর্ড করা হয় না।

একজন ইইউ কর্মকর্তা বলেন, “কমিশন বার্তাগুলোর অস্তিত্ব কখনোই অস্বীকার করেনি, বরং বলেছে সেগুলোতে তেমন গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ছিল না।” তবে নিউ ইয়র্ক টাইমস মামলায় বলেছে, এই বার্তাগুলো না দেওয়া স্বচ্ছতা লঙ্ঘনের শামিল। 

২০২০ সালে কোভিড ছড়িয়ে পড়ার পর ইউরোপীয় ইউনিয়ন দ্রুত সদস্য দেশগুলোর জন্য টিকা সংগ্রহের পদক্ষেপ নেয়। তবে ফাইজার থেকে টিকা কেনার বিষয়ে বহু তথ্য গোপন রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। এর জেরে বেলজিয়াম ও ইইউ আদালতগুলোতে একাধিক মামলাও চলছে।

নিউ ইয়র্ক টাইমস-এর আইনজীবী বন্ডিন ক্লুস্ট্রা বলেন, “এই মামলায় গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হলো ইইউ কর্মকর্তারা কি ইচ্ছাকৃতভাবে স্বচ্ছতা এড়িয়ে যেতে পারেন, যদি তারা টেলিফোন ও বার্তার মাধ্যমে যোগাযোগ করেন আনুষ্ঠানিক চিঠিপত্রের বদলে?”

ইইউ পক্ষের আইনজীবীরা দাবি করছেন, ওই খুদে বার্তাগুলো মূল আলোচনার বিষয় নয় বরং সময় নির্ধারণ বা সাক্ষাৎকারের বিষয়ে তা হতে পারে।

কমিশনের কর্মকর্তারা বলেন, প্রতিটি ইমেইল, টেক্সট বা মেসেজ সংরক্ষণ করা বাস্তবে সম্ভব নয়। এমনকি ইমেইলের বার্তাও স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছয় মাস পর মুছে যায়।
তবে, কমিশনের সিদ্ধান্ত বা কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত এবং দীর্ঘস্থায়ী গুরুত্ব রাখলে বার্তা সংরক্ষণ বাধ্যতামূলক। বার্তাগুলো গুরুত্বপূর্ণ কি না, তা আগে যিনি পাঠান বা পান, তিনিই ঠিক করেন। এই ঘটনায় তা নির্ধারণ করেন ফন ডার লিয়েন।

কমিশনের আইনজীবী পাওলো স্তাঙ্কানেল্লি জানান, কমিশনের প্রধানের দফতরে নিউ ইয়র্ক টাইমস যোগাযোগ করার পর, বিভিন্ন বিভাগকে বার্তাগুলো খুঁজে বের করতে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে তারা তা খুঁজে পায়নি।

২০২২ সালের জানুয়ারিতে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের ন্যায়পাল এই ঘটনাকে ‘অর্ব্যবস্থাপনা’ হিসেবে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, এসব বার্তা জনস্বার্থে প্রকাশযোগ্য সরকারি নথি হিসেবে বিবেচিত হওয়া উচিত ছিল।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
শেরপুরে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও পরিবহনের দায়ে কারাদণ্ড
বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের জন্য চার মাসব্যাপী বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ শুরু
গণমাধ্যম পুরস্কার পেলেন ১৫ সাংবাদিক
ঢাকায় সার্ক কৃষি কেন্দ্রের পরিচালনা পর্ষদের ১৭তম সভা শুরু
গুয়াতেমালার কারাগার থেকে যুক্তরাষ্ট্রের কালো তালিকাভুক্ত ২০জন পালিয়েছে
গাজায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৭ হাজার ৮৬৯
নবীন কর্মকর্তাদের হতে হবে জনবান্ধব ও সেবামুখী : ভূমি সচিব
ঝালকাঠিতে দুদকের ১৮৬তম গণশুনানি 
আসন্ন নির্বাচনে পুলিশ পক্ষপাতদুষ্ট আচরণ করলে কঠোর বিভাগীয় ব্যবস্থা : ডিএমপি কমিশনার
ইতালিতে এফএও সদর দপ্তরে প্রধান উপদেষ্টাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা
১০