ঢাকা, ২৯ জুন, ২০২৫ (বাসস) : আগাম নির্বাচনের দাবিতে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টির লক্ষে ছাত্রদের নেতৃত্বে সার্বিয়ার রাজধানী বেলগ্রেডে প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার বিক্ষোভকারী সমাবেশ করেছেন। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় এটাই দেশটির সবচেয়ে বড় গণসমাবেশ।
বেলগ্রেড থেকে এএফপি জানায়, অর্ধ বছরেরও বেশি সময় ধরে ছাত্র-নেতৃত্বাধীন বিক্ষোভের মধ্যে এই সমাবেশ ছিল বৃহত্তম। নভেম্বরে উত্তরাঞ্চলীয় নগরী নোভি সাদে একটি রেল স্টেশনের ছাদ ধসে ১৬ জনের মৃত্যুর পর থেকে ব্যাপকভাবে দুর্নীতির অভিযোগ এনে বিক্ষোভ শুরু হয়।
শনিবার দিনের শুরুতেই, বেলগ্রেডের বৃহত্তম স্কোয়ার ব্যাপক হারে বিক্ষোভকারীদের আগমনে যেন জনসমুদ্রে পরিণত হয়। আশেপাশের বেশ কয়েকটি রাস্তায়ও মানুষের ঢল নামে।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট প্রোটেস্ট মনিটর, আর্কাইভ অফ পাবলিক গ্যাদারিংস-এর, তথ্য অনুযায়ী এই বিক্ষোভে আনুমানিক মানুষের সংখ্যা প্রায় ১ লাখ ৪০ হাজার, তবে পুলিশের আনুমানিক তথ্যে ৩৬ সহস্রাধিক বলে উল্লেখ করা হয়।
সার্বিয়ার পতাকা উড়িয়ে দেশের বিভিন্ন নগরী ও শহরের নাম সম্বলিত ব্যানার তুলে ধরে জনতার কন্ঠে ‘আমরা নির্বাচন চাই" স্লোগানে এলাকাটি মুখোরিত হয়ে ওঠে।
অর্ধ বছরেরও বেশি সময় ধরে, শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় অবরোধ করেছে এবং মৃত্যুর স্বচ্ছ তদন্তের দাবিতে সারা দেশে বিশাল বিক্ষোভের আয়োজন করেছে।
পূর্ববর্তী সমাবেশগুলো ছিল শান্তিপূর্ণ, তবে পক্ষান্তরে এই সমাবেশে বিক্ষোভকারী ও দাঙ্গা পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষ হতে দেখা যায়।
সার্বিয়ার রাজধানীতে বিশাল সমাবেশের পর বেশ কয়েকটি সংঘর্ষে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের সারি লক্ষ্য করে আগুনের শিখা ছুঁড়ে মারলে পুলিশকে তাদের ওপর কাঁদানে গ্যাস ও স্টান গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে দেখেছেন এএফপির সাংবাদিকরা।
পুলিশ পরিচালক ড্রাগান ভাসিলজেভিচ বলেন, হামলার শিকার হওয়ার পর অফিসাররা লাঠিচার্জ করেছেন তবে জনতা ছত্রভঙ্গ করার জন্য ‘রাসায়নিক এজেন্ট’ মোতায়েন করার কথা অস্বীকার করেছেন।
ভাসিলজেভিচ আরো বলেন, কয়েক ডজন বিক্ষোভকারিকে আটক করা হয়েছে, সহিংসতায় ছয়জন কর্মকর্তা এবং দুইজন আহত হয়েছেন।
‘দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমরা যতক্ষণ সময় লাগে সমাবেশ করব।’
শনিবারের বিক্ষোভের আগে, আয়োজকরা প্রেসিডেন্ট আলেকজান্ডার ভুসিককে স্থানীয় সময় রাত ৯টা (গ্রিনীচ মান সময় ১৯০০ টা)- এর মধ্যে নির্বাচন ঘোষণা করার জন্য ‘আল্টিমেটাম’ জারি করেন। এই দাবি ভুসিক প্রত্যাখ্যান করেছেন।
বিক্ষোভ শেষ হওয়ার পর, আয়োজকরা জনতার উদ্দেশ্যে এক বিবৃতিতে, সার্বিয়ানদের ‘স্বাধীনতা নিজের হাতে নেওয়ার’ আহ্বান জানান।
সমাবেশের পরে ইনস্টাগ্রামে এক বিবৃতিতে আয়োজকরা বলেন, দাবি পূরণ ও উত্তেজনা রোধ করার জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার যথেষ্ট সময় ছিল কিন্তু পরিবর্তে, তারা নাগরিকদের বিরুদ্ধে সহিংসতা ও দমন-পীড়নের পথ বেছে নিয়েছে। পরিস্থিতির যেকোনো অস্থিতিশীলতার দায় তাদের।’
সরকার-পন্থী গণমাধ্যম জানায়, ভুসিক রোববার সকাল ১১ টায় (গ্রিনিচ সময় সকাল ৯ টায়) জনসাধারণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন, তবে এ সম্পর্কিত বিস্তারিত আর কোনও তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি।