ঢাকা, ১ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ফোনালাপ ফাঁসের ঘটনায় থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পেতংতার্ন সিনাওয়াত্রাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন দেশটির সাংবিধানিক আদালত। একই দিনে তার বাবা থাকসিন সিনাওয়াত্রার বিরুদ্ধে রাজদ্রোহ সংক্রান্ত মামলার বিচার শুরু হয়েছে।
ব্যাংকক থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
এক বছরও হয়নি পেতংতার্ন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেন। কম্বোডিয়ার সঙ্গে সীমান্ত বিরোধ নিয়ে কূটনৈতিক টানাপোড়েনের মধ্যে সম্প্রতি তিনি দেশটির সাবেক প্রধানমন্ত্রী হুন সেনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন। ফোনালাপে পেতংতার্ন থাইল্যান্ডের এক সেনা কর্মকর্তার সমালোচনা করেন এবং হুন সেনকে ‘আংকেল’ বলে ডেকে তার প্রতি অতিমাত্রায় নমনীয় আচরণ করেন বলে জনগণের মধ্যে বিরূপ ধারণা তৈরি হয়। এরপরই পেতংতার্নের পদত্যাগের দাবিতে রাস্তায় নামে মানুষ। সাংবিধানিক আদালতে পিটিশন দায়ের করা হয়।
ফোনালাপে পেতংতার্ন মন্ত্রীসভার নৈতিকতা ভঙ্গ করেছেন কি না, তা তদন্তের জন্য সাংবিধানিক আদালত তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছে।
ব্যাংককের গভর্নমেন্ট হাউসে সাংবাদিকদের পেতংতার্ন বলেন, তিনি আদালতের রায় মেনে নিয়েছেন।
তিনি বলেন, দেশের জন্য সর্বোত্তম কিছু করাই সবসময় আমার লক্ষ্য ছিল। এই ঘটনায় যেসব থাই নাগরিক হতাশ হয়েছেন, আমি তাদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করছি।
এই তদন্ত প্রক্রিয়া কয়েক সপ্তাহ বা মাস লেগে যেতে পারে বলে জানিয়েছে স্থানীয় গণমাধ্যম। আপাতত তার নিজের দল ‘ফেউ থাই পার্টি’ থেকে ডেপুটি প্রাইম মিনিস্টার সুরিয়া জুনগ্রুংরেয়াংকিত দায়িত্ব নিতে পারেন।
এদিকে প্রধান বিরোধী দল থাইল্যান্ডে নতুন নির্বাচনের আহ্বান জানিয়েছেন। বিরোধী দল ‘পিপলস পার্টি’র ডেপুটি লিডার রাংশিমান রোম বলেন, পেতংতার্ন তার ‘নৈতিক কর্তৃত্ব হারিয়েছেন’ এবং এই রায় ‘আশ্চর্যজনক নয়’। এখন পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়াই একমাত্র সমাধান।
একই দিনে পেতংতার্নের বাবা ও সিনাওয়াত্রা পরিবারের প্রধান থাকসিন ব্যাংককের একটি ফৌজদারি আদালতে হাজির হন। তার বিরুদ্ধে দেশটির কঠোর রাজদ্রোহ আইনে মামলা চলছে। এ আইন রাজাকে সমালোচনার হাত থেকে রক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয়।
থাই রাজনৈতিক বিশ্লেষক থিতিনান পংসুধিরাক বলেন, এই দুই মামলার মধ্যে সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে। তার মতে, সিনাওয়াত্রা পরিবারের রাজনৈতিক ব্র্যান্ড ‘গভীর সংকটে’ পড়েছে।