ঢাকা, ৭ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : পূর্ব ইন্দোনেশিয়ার একটি আগ্নেয়গিরি থেকে সোমবার ভয়াবহ অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে, যার ফলে আকাশে ১৮ কিলোমিটার (১১ মাইল) উঁচু ছাইয়ের স্তম্ভ তৈরি হয়েছে বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। কয়েক সপ্তাহ আগেও এই আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের কারণে জনপ্রিয় পর্যটন দ্বীপ বালিতে বহু ফ্লাইট বাতিল হয়েছিল।
জাকার্তা থেকে এএফপি জানায়, ফ্লোরেস দ্বীপে অবস্থিত ১,৫৮৪ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট মাউন্ট লেওতোবি লাকি-লাকি সকাল ১১টা ৫ মিনিটে (স্থানীয় সময়) অগ্ন্যুৎপাত করে বলে জানায় দেশটির ভলক্যানোলজি সংস্থা।
সংস্থাটির বিবৃতিতে বলা হয়, ‘লেওতোবি লাকি-লাকি আগ্নেয়গিরিতে অগ্ন্যুৎপাত হয়েছে ছাইয়ের স্তম্ভ প্রায় ১৮,০০০ মিটার উচ্চতায় উঠেছে।’
তারা আরও সতর্ক করে বলেছে, ভারী বৃষ্টিপাত হলে আগ্নেয়বাহিত কাদাপানির বন্যা (লাহার) হতে পারে, যা আশেপাশের নদীঘেঁষা জনপদের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে।
তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ক্ষয়ক্ষতি বা প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি।
ভূতাত্ত্বিক সংস্থার প্রধান মুহাম্মদ ওয়াফিদ বলেন, আগ্নেয়গিরির সক্রিয়তার মাত্রা ‘খুবই উচ্চ’, যা বিস্ফোরণধর্মী অগ্ন্যুৎপাত ও টানা কম্পনের মাধ্যমে চিহ্নিত হচ্ছে।
তিনি বাসিন্দাদের অন্তত ছয় কিলোমিটার দূরে থাকতে এবং ছাই থেকে রক্ষায় মুখে মাস্ক পরার আহ্বান জানান।
গত মাসেও এই আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতে বালিগামী ও বালি থেকে ছাড়া বহু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল হয়। ছাইয়ের বৃষ্টি স্থানীয় কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্তত একটি গ্রাম থেকে লোকজনকে সরিয়ে নিতে হয়।
২০২৪ সালের নভেম্বরেও লেওতোবি লাকি-লাকি একাধিকবার অগ্ন্যুৎপাত করে, যেখানে নয়জন নিহত হয় এবং হাজার হাজার মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়। তখনও বহু আন্তর্জাতিক ফ্লাইট বাতিল করা হয়।
তবে সোমবারের অগ্নুৎপাতের পর তাৎক্ষণিকভাবে কোনো ফ্লাইট বাতিলের খবর পাওয়া যায়নি।
বালির নুরাহ রাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের একজন গ্রাহকসেবা প্রতিনিধি এএফপিকে জানান, অগ্নুৎপাতের পরও বিমানবন্দর স্বাভাবিকভাবে চালু রয়েছে।
দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি।
‘লাকি-লাকি’ শব্দের অর্থ ইন্দোনেশীয় ভাষায় ‘পুরুষ’, আর এর পাশাপাশি রয়েছে অপেক্ষাকৃত শান্ত কিন্তু উঁচু ১,৭০৩ মিটার উচ্চতার ‘পেরেম্পুয়ান’ আগ্নেয়গিরি, যার অর্থ ‘নারী’।
উল্লেখ্য, ইন্দোনেশিয়া প্রশান্ত মহাসাগরীয় ‘রিং অব ফায়ার’-এ অবস্থিত হওয়ায় সেখানে ঘনঘন ভূমিকম্প ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত ঘটে।