ঢাকা, ৭ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগ্রাসী বাণিজ্যনীতি এ সপ্তাহে একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্বে প্রবেশ করছে। চুক্তি না হলে শিগগিরই বিশ্বের বহু অর্থনীতির ওপর পুনরায় উচ্চ হারে শুল্ক আরোপের হুমকি দিয়েছেন তিনি।
ওয়াশিংটন থেকে এএফপি জানায়, সোমবার দুপুর (স্থানীয় সময়) থেকে ট্রাম্প বিশ্বের প্রায় ১৫টি বাণিজ্য অংশীদার দেশের কাছে চিঠি পাঠাতে যাচ্ছেন। এতে জানানো হবে, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সমঝোতায় না এলে আমদানি পণ্যের ওপর উচ্চ হারে শুল্ক পুনরায় কার্যকর হবে।
যুক্তরাষ্ট্রের অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট বলেছেন, আগামী ১ আগস্ট থেকে এসব শুল্ক কার্যকর হবে, ফলে আপাতত চুক্তির জন্য কিছুটা সময় হাতে থাকছে।
চলতি বছরের এপ্রিল মাসে প্রায় সব অংশীদার দেশের ওপর ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেন ট্রাম্প। তবে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ কিছু দেশের ক্ষেত্রে এই হার আরও বাড়ানোর পরিকল্পনা ছিল। তখন বাজারে ব্যাপক ধস নামলে ট্রাম্প শুল্ক বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত স্থগিত করেন। এই বিরতির সময়সীমা শেষ হচ্ছে বুধবার।
সিএনবিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বেসেন্ট বলেন, ‘আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কয়েকটি ঘোষণা আসবে। অনেক দেশের পক্ষ থেকে নতুন প্রস্তাব এসেছে। আমার ইনবক্স ছিল প্রস্তাবে ভরা।’
তিনি জানান, ট্রাম্পের পক্ষ থেকে পাঠানো চিঠিতে জানিয়ে দেওয়া হবে, সংশ্লিষ্ট দেশের পণ্য আমদানিতে কত শতাংশ শুল্ক আরোপ হবে, যদি না তারা আলোচনায় ফিরে আসে।
ট্রাম্প প্রশাসন আশা করছিল, জুলাইয়ের শুরুর দিকেই বহু দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পন্ন হবে। কিন্তু এ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্র শুধুমাত্র যুক্তরাজ্য ও ভিয়েতনামের সঙ্গে চুক্তি করেছে। চীন ও যুক্তরাষ্ট্র পরস্পরের ওপর আরোপিত তিন অঙ্কের শুল্ক কিছুটা কমাতে সম্মত হলেও সেটিও সাময়িক।
বেসেন্ট বলেন, ‘আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে আমি চীনা প্রতিনিধির সঙ্গে সাক্ষাৎ করব।’
চীন ও যুক্তরাষ্ট্র ইতোমধ্যে জেনেভা ও লন্ডনে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক করেছে। তবে দ্বিপক্ষীয় শুল্ক বিরতির সময়সীমা আগস্টের মাঝামাঝি শেষ হবে।
এ পর্যন্ত কমসংখ্যক চুক্তি হওয়া নিয়ে হতাশ কিনা জানতে চাইলে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বাণিজ্য উপদেষ্টা পিটার নাভারো বলেন, ‘আমরা অগ্রগতিতে সন্তুষ্ট। যেসব দেশের সঙ্গে আমাদের বড় বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তারা আলোচনায় সক্রিয়।’
রোববার রাতে ট্রাম্প তাঁর ‘ট্রুথ সোশ্যাল’ প্ল্যাটফর্মে লেখেন, সোমবার বিভিন্ন দেশে ‘শুল্ক চিঠি’ বা চুক্তির প্রস্তাব পাঠানো হবে।
তিনি আরও হুমকি দেন, যেসব দেশ উদীয়মান অর্থনৈতিক জোট ব্রিকসের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে এবং তাঁর ভাষায় ‘আমেরিকাবিরোধী নীতি’ গ্রহণ করছে, তাদের ওপর অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হবে।
তবে অনেক দেশ এখনো ট্রাম্পের হুমকির শুল্ক এড়ানোর চেষ্টায় ব্যস্ত।
ইউরোপীয় কমিশন জানিয়েছে, কমিশনের প্রধান উরসুলা ফন ডের লায়েন রোববার ট্রাম্পের সঙ্গে ফোনে বাণিজ্য বিষয়ে ‘গঠনমূলক আলোচনা’ করেছেন।
এদিকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা রোববার বলেছেন, ‘ওয়াশিংটনের সঙ্গে বাণিজ্য আলোচনায় আমি সহজে ছাড় দেব না।’