ঢাকা, ৮ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্ট স্যামসাং ইলেকট্রনিকস মঙ্গলবার জানিয়েছে যে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে তাদের অপারেটিং মুনাফা প্রায় ৫৬ শতাংশ হ্রাস পেতে পারে, যার জন্য মূলত চীনের উদ্দেশে উন্নত এআই চিপ রফতানির উপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞাকে দায়ী করা হয়েছে।
সিউল থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, স্যামসাং গ্রুপের এই প্রধান সহযোগী প্রতিষ্ঠানটি দক্ষিণ কোরিয়ার সবচেয়ে প্রভাবশালী পরিবার-নিয়ন্ত্রিত শিল্পগোষ্ঠীগুলোর মধ্যে বৃহত্তম।
প্রতিষ্ঠানটি জানায়, এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তাদের অপারেটিং মুনাফা ৪.৬ ট্রিলিয়ন ওনে (প্রায় ৩.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার) নামতে পারে, যা এক বছর আগের তুলনায় ৫৫.৯৪ শতাংশ কম এবং গত প্রান্তিকের তুলনায় ৩১ শতাংশ কম।
দক্ষিণ কোরিয়ার ইয়োনহাপ বার্তা সংস্থার তথ্য অনুযায়ী, এই পূর্বাভাস বাজারের গড় অনুমানের চেয়ে ২৩.৪ শতাংশ কম, যেটা তাদের নিজস্ব আর্থিক বিশ্লেষণ সংস্থা উদ্ধৃত করেছে।
স্যামসাং জানায়, এই প্রান্তিকে তাদের বিক্রয় ৭৪ ট্রিলিয়ন ওনে পৌঁছাতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে, যা গত বছরের তুলনায় প্রায় অপরিবর্তিত (০.০৯ শতাংশ কম) এবং আগের প্রান্তিক থেকে ৬.৫ শতাংশ কম।
তবে প্রতিষ্ঠানটি এখনো নিট আয় বা বিভিন্ন বিভাগের বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেনি।
একটি পৃথক বিজ্ঞপ্তিতে, স্যামসাং ব্যাখ্যা করেছে কেন এই ফলাফল বাজারের প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। তারা বলেছে, তাদের প্রধান সেমিকন্ডাক্টর ও ডিসপ্লে ইউনিটের মুনাফা কমেছে, যার পেছনে রয়েছে ইনভেন্টরির মূল্য হ্রাস এবং চীনে উন্নত চিপ রফতানির ওপর মার্কিন বিধিনিষেধ।
ওয়াশিংটনের মতে, চীনের হাতে এসব উন্নত চিপ গেলে তা সামরিক ও অন্যান্য প্রযুক্তি খাতে ব্যবহারের মাধ্যমে নিরাপত্তার ঝুঁকি তৈরি করতে পারে। এর ফলে স্যামসাং-এর উচ্চ প্রযুক্তির কারখানাগুলোর উৎপাদন ক্ষমতার ব্যবহার উল্লেখযোগ্যভাবে কমে গেছে।
তবে, কোম্পানিটি আশাবাদী যে বছরের দ্বিতীয়ার্ধে ধীরে ধীরে চাহিদা পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে অপারেটিং ক্ষতি হ্রাস পাবে।
এদিন সিউলে বাজার খোলার সময় স্যামসাং-এর শেয়ারের দাম এক শতাংশেরও বেশি পড়ে গেছে।
এছাড়াও, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কের হুমকি স্যামসাং-এর মতো বৈশ্বিক নির্মাতাদের ওপর আরও চাপ সৃষ্টি করেছে। ট্রাম্প সম্প্রতি দক্ষিণ কোরিয়ার উপর ২৫ শতাংশ নতুন শুল্ক আরোপের হুমকি দেন এবং বারবার দাবি করেন বৈশ্বিক প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো যেন তাদের উৎপাদন আমেরিকায় স্থানান্তর করে। যদিও অনেক বিশেষজ্ঞ এই দাবিকে অবাস্তব বলে অভিহিত করেছেন।
দক্ষিণ কোরিয়া ইতোমধ্যেই ইস্পাত ও গাড়ি খাতে মার্কিন শুল্কের কারণে ভোগান্তির শিকার হয়েছে। দেশটি মঙ্গলবার জানিয়েছে, নতুন শুল্ক এড়াতে তারা ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।