সেনা প্রত্যাহারে ইসরাইলের অনীহায় আটকে গেছে গাজা যুদ্ধবিরতি আলোাচনা

বাসস
প্রকাশ: ১২ জুলাই ২০২৫, ১৭:৪৩

ঢাকা, ১২ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : গাজায় চলমান যুদ্ধবিরতি চুক্তি নিয়ে হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে কাতারে পরোক্ষ আলোচনা ইসরাইলের সেনা প্রত্যাহারে অনীহার কারণে আটকে গেছে বলে শনিবার ফিলিস্তিনি দুইটি সূত্র এএফপিকে জানিয়েছে।

গত রোববার কাতারে শুরু হওয়া এই আলোচনার লক্ষ্য ছিল অক্টোবর ২০২৩ সালের ৭ তারিখ হামাসের হামলার মাধ্যমে শুরু হওয়া ২১ মাসব্যাপী যুদ্ধের একটি সাময়িক বিরতি।

হামাস ও ইসরাইল উভয়েই জানিয়েছিল, যদি ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির বিষয়ে সমঝোতা হয়, তবে ১০ জন জীবিত জিম্মিকে মুক্তি দেওয়া হবে, যাদের ওই হামলার দিন ধরে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বৃহস্পতিবার বলেন, তিনি ‘কয়েক দিনের মধ্যেই’ একটি চুক্তি প্রত্যাশা করছেন, যা দীর্ঘমেয়াদে যুদ্ধের অবসানেও সহায়ক হতে পারে।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ফিলিস্তিনি সূত্র বলেন, হামাসের দাবিমতো গাজা থেকে পুরোপুরি সেনা প্রত্যাহারে ইসরাইলের অনীহা অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অন্য এক সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ দোহায় পৌঁছানো পর্যন্ত মধ্যস্থতাকারীরা আলোচনা মুলতবি রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।

সূত্রটি আরও জানায়, ‘দোহায় আলোচনা এখন একটি কঠিন পর্যায়ে রয়েছে। ইসরাইল একটি ‘সেনা প্রত্যাহার মানচিত্র’ উপস্থাপন করলেও সেটি মূলত সেনা পুনঃবিন্যাস ও মোতায়েনের প্রস্তাব। এতে প্রকৃত অর্থে কোনো প্রত্যাহার নেই।’

ফিলিস্তিনি সূত্র মতে, ইসরাইল গাজার ৪০ শতাংশেরও বেশি ভূখণ্ডে সেনা রাখার প্রস্তাব দিয়েছে, যা বাস্তবে লাখো বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিকে রাফাহ অঞ্চলে সীমাবদ্ধ করে রাখবে।

তিনি বলেন, ‘হামাস এই ছক গ্রহণ করবে না। এতে গাজার প্রায় অর্ধেক পুনর্দখলের বৈধতা দেওয়া হচ্ছে এবং গাজাকে বিচ্ছিন্ন ছিটমহলে পরিণত করা হচ্ছে।’

দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি সূত্র বলেন, ‘ইসরাইলি প্রতিনিধি দল কোনো বাস্তব ক্ষমতা ছাড়াই এসেছে এবং কৌশলে আলোচনা বিলম্বিত করে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে চাচ্ছে।’

৭ অক্টোবর ২০২৩-এ হামাসের হামলায় অন্তত ১,২১৯ ইসরাইলি নিহত হয়, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক। ওইদিন ২৫১ জনকে জিম্মি করা হয়, যাদের মধ্যে এখনও ৪৯ জন জিম্মি রয়েছে, ২৭ জন ইতোমধ্যে নিহত বলে জানায় ইসরাইলি সেনাবাহিনী।

গাজার হামাস-নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানায়, যুদ্ধের শুরু থেকে এখন পর্যন্ত অন্তত ৫৭,৮২৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

গাজার নাগরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা শনিবার জানায়, সর্বশেষ ইসরাইলি হামলায় কমপক্ষে ১৪ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর আগের দিন শুক্রবার মারা যান আরও ৩০ জন, যাদের মধ্যে ১০ জন সহায়তার জন্য অপেক্ষায় ছিলেন।

ইসরাইলি সেনাবাহিনী শনিবার জানিয়েছে, গত ৪৮ ঘণ্টায় তারা গাজাজুড়ে আনুমানিক ২৫০টি ‘সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তু’তে হামলা চালিয়েছে। এসবের মধ্যে রয়েছে: অস্ত্রভাণ্ডার, টানেল, স্নাইপার পোস্ট, এবং ‘বিস্ফোরক জড়ানো স্থাপনা’।

এর আগের দুই দফা যুদ্ধবিরতি (নভেম্বর ২০২৩ ও জানুয়ারি ২০২৪-এ) শতাধিক ফিলিস্তিনি বন্দির বিনিময়ে ১০৫ জন জিম্মি মুক্তির পথ তৈরি করেছিল।

দ্বিতীয় ফিলিস্তিনি সূত্র জানায়, ‘বর্তমান আলোচনায় ফিলিস্তিনি বন্দি মুক্তি এবং গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশের বিষয়ে কিছু অগ্রগতি হয়েছে।’

তবে নেতানিয়াহু জোর দিয়ে বলেন, ‘হামাসকে সামরিক হুমকি থেকে নিস্ক্রিয় করা ছাড়া দীর্ঘমেয়াদে কোনো শান্তি আলোচনা সম্ভব নয়।’

তিনি আরও জানান, হামাস যদি অস্ত্র ত্যাগ না করে, তবে ইসরাইল জোরপূর্বক তাদের নিরস্ত্র করবে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
সত্য প্রকাশ করলে ক্ষমা পাবেন ‘রাজসাক্ষী’ চৌধুরী মামুন
শিল্পকলায় জুলাই পুনর্জাগরণ উপলক্ষ্যে ‘ড্রোন শো ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান’ ১৪ জুলাই
চাঁদপুরে খতিব হত্যাচেষ্টায় অভিযুক্ত আসামিকে জেলে প্রেরণ
প্রকৃত অপরাধীদের বের করে শান্তির ব্যবস্থা করুন : মির্জা ফখরুল 
দেশে ষড়যন্ত্র শেষ হয়নি, ষড়যন্ত্র আরও শুরু হয়েছে : তারেক রহমান
আমিষ ও প্রোটিন নিশ্চিত করা হলে কমবে চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা : মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা
এক মৌসুম পর ফিওরেন্টিনায় ফিরলেন কোচ পিওলি
২০৩০ বিশ্বকাপ ভেন্যুর তালিকা থেকে মালাগার নাম প্রত্যাহার
খুলনায় জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদ ও আহতদের পরিবারের সঙ্গে জামায়াতের মতবিনিময়
বেসবল কোচেস এবং আম্পায়ারস ক্লিনিক শুরু
১০