ঢাকা, ২৮ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস) : মোজাম্বিকের উত্তরাঞ্চলে চলমান সশস্ত্র বিদ্রোহ দমনে একসঙ্গে কাজ করতে একটি ‘শান্তি ও নিরাপত্তা’ চুক্তি সই করেছে রুয়ান্ডা ও মোজাম্বিক। মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল চ্যাপো বুধবার রুয়ান্ডা সফরের সময় এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
কিগালি থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
রুয়ান্ডার প্রতিরক্ষা বাহিনী (আরডিএফ)-এর মুখপাত্র রোনাল্ড রুইভাঙ্গার সঙ্গে এএফপির পক্ষ থেকে যোগাযোগ করা হলে তিনি চুক্তি সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানাননি। তবে এই চুক্তি এমন এক সময়ে হলো, যখন মোজাম্বিকে জঙ্গী হামলা বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব হামলার কারণে বিপুল সংখ্যক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে এবং গ্যাসসমৃদ্ধ উত্তরাঞ্চল থেকে বিদেশি কোম্পানিগুলোর তেল ও গ্যাস উত্তোলন কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
রুয়ান্ডার রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরবিএ জানায়, মোজাম্বিকের প্রেসিডেন্ট ড্যানিয়েল চ্যাপো বলেছেন, ‘দুই দেশের প্রতিনিধিদলের বৈঠকের সময় আমরা শান্তি ও নিরাপত্তা চুক্তি স্বাক্ষরের সাক্ষী হয়েছি। মোজাম্বিকে থাকা রুয়ান্ডা সেনাদের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল।’
রুয়ান্ডার প্রেসিডেন্ট পল কাগামে এই চুক্তিকে স্বাগত জানিয়েছেন। এসময় তিনি দুই দেশের ‘সুদৃঢ় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের’ প্রশংসা করেন। রুয়ান্ডার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জুভেনাল মারিজামুন্দা এবং তার মোজাম্বিকের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ক্রিস্টোভাও আর্থার চুমে এই চুক্তিতে সই করেন।
চ্যাপো দক্ষিণ আফ্রিকার গ্রেট লেকস অঞ্চলের দেশ রুয়ান্ডায় দুই দিনের রাষ্ট্রীয় সফরে রয়েছেন।
২০২১ সাল থেকে রুয়ান্ডা দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী (আরডিএফ) ও পুলিশের (আরএনপি) প্রায় ১ হাজার সদস্যকে মোজাম্বিকে মোতায়েন করেছে। কারণ, মোজাম্বিকের কাবো ডেলগাদো প্রদেশটি ২০১৭ সাল থেকে ইসলামিক স্টেট (আইএস) সংশ্লিষ্ট একটি জঙ্গী গোষ্ঠীর হামলার শিকার হচ্ছে।
মোজাম্বিক ও রুয়ান্ডার সেনারা উত্তরের বিদ্রোহপ্রবণ জেলা ও পালমা বন্দরের কাছে টোটালএনার্জিসের পরিকল্পিত কারখানার আশেপাশে অবস্থান নিয়েছে।
এই চুক্তি এমন সময়ে হলো, যখন নতুন করে হামলার কারণে পালমা এলাকায় ফরাসি জ্বালানি কোম্পানি টোটালএনার্জির ২০ বিলিয়ন ডলারের তরল প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) প্রকল্পের কাজ পুনরায় শুরু করার আশা হুমকির মুখে পড়েছে।
২০২১ সালের মার্চে এক মারাত্মক হামলার পর ওই প্রকল্পের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। সংঘাত পর্যবেক্ষণকারী সংস্থা এসিএলইডি’র মতে, ওই হামলায় টোটালএনার্জির কয়েকজন ঠিকাদারসহ ৮০০ জনেরও বেশি মানুষ হতাহত হয়েছিল।
পরামর্শক গ্রুপ ডেলয়েটের ২০২৪ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০১০ সালে মোজাম্বিকে বিশাল গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়। দারিদ্র্যসীমার নিচে ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ বসবাসকারী এ দেশে এই গ্যাস সম্পদ দক্ষিণ আফ্রিকার এই দেশটিকে বিশ্বের শীর্ষ ১০ উৎপাদনকারীর মধ্যে স্থান করে নিতে পারে।