ঢাকা, ৫ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : দক্ষিণ কোরিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের অস্ত্র মজুদের জবাবে উত্তর কোরিয়া ‘বিশেষ অস্ত্র’ মোতায়েন করেছে বলে জানিয়েছেন দেশটির নেতা কিম জং উন। রোববার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কেসিএনএ এ তথ্য জানিয়েছে।
সিওল থেকে এএফপি জানায়, দক্ষিণ কোরিয়ায় প্রায় ২৮ হাজার ৫০০ মার্কিন সেনা মোতায়েন রয়েছে। তাদের দায়িত্ব হলো পারমাণবিক শক্তিধর উত্তর কোরিয়ার হুমকি মোকাবিলা করা। এদিকে গত মাসে যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান যৌথ সামরিক মহড়া চালিয়েছে।
পিয়ংইয়ং নিয়মিতভাবে এসব মহড়াকে আগ্রাসনের প্রস্তুতি বলে অভিযোগ করে আসছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্ররা বলছে, এগুলো কেবল সম্পূর্ণ প্রতিরক্ষামূলক অনুশীলন।
শনিবার পিয়ংইয়ংয়ে একটি অস্ত্র প্রদর্শনী উদ্বোধনকালে কিম বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র-দক্ষিণ কোরিয়া পারমাণবিক জোট দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। তারা নানা ধরনের মহড়া চালাচ্ছে যাতে তাদের ভয়ংকর পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা যায়।’
তিনি আরও বলেন, ‘দক্ষিণ কোরিয়ায় মার্কিন অস্ত্র বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে আমাদের কৌশলগত উদ্বেগও বেড়েছে। সে অনুযায়ী আমরা গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আমাদের বিশেষ অস্ত্র মোতায়েন করেছি।’
কিম জানান, তিনি সীমান্তের ওপারে সামরিক পরিস্থিতি ‘নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ’ করছেন।
তিনি বলেন, ‘শত্রুপক্ষকে ভাবতে হবে, তাদের নিরাপত্তা পরিস্থিতি কোন দিকে যাচ্ছে।’
তবে ‘বিশেষ অস্ত্র’ বলতে তিনি কী বোঝাতে চেয়েছেন, তা স্পষ্ট করেননি।
কেসিএনএ’র ছবিতে দেখা যায়, এক প্রদর্শনী কেন্দ্রে উত্তর কোরিয়ার জেনারেলদের সঙ্গে অস্ত্রের পাশে হাঁটছেন কিম। সেখানে একটি ক্ষেপণাস্ত্রও প্রদর্শিত হয়।
গত মাসে কিম জানান, তিনি যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় আগ্রহী। তবে শর্ত ছিল, উত্তর কোরিয়াকে পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করতে হবে না।
প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে ‘স্মরণীয় সময়’ কাটানোর কথা উল্লেখ করেন কিম। ট্রাম্পের প্রথম মেয়াদে কিমের সঙ্গে তিন দফা শীর্ষ বৈঠক হয়েছিল।
তবে ২০১৯ সালে হ্যানয়ে বৈঠক ভেস্তে যায়। কারণ ছিল, পারমাণবিক অস্ত্র বিষয়ে পিয়ংইয়ং কতটা ছাড় দিতে প্রস্তুত— সে বিষয়ে মতবিরোধ।
যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, উত্তর কোরিয়াকে নিষিদ্ধ অস্ত্র পরিত্যাগ করতে হবে। এ নিয়ে দুই দেশের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে মতবিরোধ চলছে।
জাতিসংঘের একাধিক নিষেধাজ্ঞার আওতায় রয়েছে পিয়ংইয়ং। কারণ, দেশটির পারমাণবিক ও ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি।
২০১৯ সালের ব্যর্থ বৈঠকের পর উত্তর কোরিয়া বারবার বলেছে, তারা কখনোই পারমাণবিক অস্ত্র ত্যাগ করবে না। এমনকি নিজেদের ‘অপরিবর্তনীয় পারমাণবিক রাষ্ট্র’ হিসেবে ঘোষণা করেছে।