ঢাকা, ৫ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : গাজায় প্রায় দুই বছরের যুদ্ধের অবসান ঘটানোর লক্ষ্যে আলোচনার আগে রোববার কায়রোতে আলোচকরা একত্রিত হচ্ছেন। ইসরাইলি নেতা আশা প্রকাশ করেছেন যে ফিলিস্তিতে আটক জিম্মিদের কয়েক দিনের মধ্যে মুক্তি দেওয়া হবে।
ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাস বন্দীদের মুক্তি এবং যুদ্ধোত্তর গাজা পরিচালনার জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের রোডম্যাপের প্রতি ইতিবাচক সাড়া দেওয়ার পর এই কূটনৈতিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। খবর বার্তসংস্থা এএফপি’র।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু শনিবার বলেছেন, তিনি মিশরে আলোচকদের ‘কারিগরি বিবরণ চূড়ান্ত করার’ নির্দেশ দিয়েছেন। অন্যদিকে কায়রো নিশ্চিত করেছে যে ‘সমস্ত ইসরাইলি বন্দী ও ফিলিস্তিনি বন্দীদের বিনিময়ের স্থল পরিস্থিতি ও বিবরণ’ নিয়ে আলোচনার জন্য হামাসের একটি প্রতিনিধিদলকেও আমন্ত্রন জানানো হবে।
মিশরের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম পূর্বে জানিয়েছিল যে যুদ্ধরত পক্ষগুলো রোববার ও সোমবার পরোক্ষ আলোচনা করবে।
হোয়াইট হাউসের তথ্য অনুযায়ী, ট্রাম্প শনিবার মিশরে দুজন দূত-তাঁর জামাতা জ্যারেড কুশনার ও মধ্যপ্রাচ্যের প্রধান আলোচক স্টিভ উইটকফকে পাঠিয়েছেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট সতর্ক করে দিয়েছেন যে তিনি হামাসের কাছ থেকে ‘বিলম্ব সহ্য করবেন না, দলটিকে দ্রুত একটি চুক্তির দিকে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ‘অন্যথায় সমস্ত বাজি বন্ধ হয়ে যাবে।’
শনিবার টেলিভিশনে দেওয়া এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহু হামাস বন্দীদের মুক্তি দিতে রাজি হওয়ায়, ‘সামরিক ও কূটনৈতিক চাপকে কারণ বলে উল্লেখ করেন।
নেতানিয়াহু সোমবার থেকে শুরু হওয়া এবং এক সপ্তাহ ধরে চলা ইহুদি উৎসবের কথা উল্লেখ করে বলেন, ‘আমি আশা করি আগামী দিনে আমরা সুক্কোতের ছুটির সময় আমাদের সমস্ত জিম্মিকে ফিরিয়ে আনতে সক্ষম হব।’
শুক্রবার রাতে, হামাস ‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রস্তাবে অন্তর্ভুক্ত বিনিময় চুক্তি অনুসারে সমস্ত জীবিত জিম্মিকে মুক্ত ও মৃতদের দেহাবশেষ ফেরত দেওয়ায় তাদের সম্মতি ঘোষণা করে।’
ট্রাম্প তাৎক্ষণিকভাবে এই বিবৃতিকে দলটি ‘স্থায়ী শান্তির জন্য প্রস্তুত’ থাকার বলে প্রমাণ অভিহিত করে একে স্বাগত জানান। তিনি ইসরাইলকে বোমা হামলা বন্ধ করারও আহ্বান জানান।
এদিকে, নেতানিয়াহু শনিবার তার বক্তব্যে হামাসকে নিরস্ত্র করা হবে বলে জোর দিয়ে বলেন, ট্রাম্পের পরিকল্পনার মাধ্যমে কূটনৈতিকভাবে অথবা সামরিকভাবে হামাসকে নিরস্ত্র করা হবে।
শনিবার রাতে, তেল আবিব ও জেরুজালেমে জনতা যুদ্ধ বন্ধের আহ্বান জানাতে এবং ট্রাম্পকে একটি চুক্তি নিশ্চিত করার আহ্বান জানাতে জড়ো হয়।
হামাসের, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ওপর হামলার দ্বিতীয় বার্ষিকীর দুই দিন আগে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে, যা সংঘাতের সূত্রপাত করেছিল।
-হামলা অব্যাহত -
ট্রাম্পের অভিযান স্থগিত করার আহ্বান সত্ত্বেও, ইসরাইল শনিবার গাজা জুড়ে মারাত্মক হামলা চালিয়েছে।
হামাস কর্তৃপক্ষের অধীনে পরিচালিত বেসামরিক সিভিল ডিফেন্স সংস্থার মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বলেন, আজ ভোর থেকে চলমান ইসরাইলি বোমা হামলায় ৫৭ জন নিহত হয়েছে, যার মধ্যে কেবল গাজা সিটিতেই ৪০ জন নিহত হয়।’
ইসরাইলি বাহিনী সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোয় নগরীর চারপাশে ব্যাপক বিমান ও স্থল হামলা চালিয়েছে।