ঢাকা, ৭ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): ডেমোক্র্যাট-নেতৃত্বাধীন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য ইলিনয় গতকাল সোমবার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শিকাগোতে শত শত ন্যাশনাল গার্ড সেনা মোতায়েনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে।
অপরাধ এবং অননুমোদিত অভিবাসীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের অংশ হিসেবে ওরেগনের একজন ফেডারেল বিচারক রিপাবলিকান প্রেসিডেন্টকে রাজ্যের বৃহত্তম শহর পোর্টল্যান্ডে সৈন্য পাঠানো থেকে সাময়িকভাবে বাধা দেওয়ার একদিন পর এই মামলাটি দায়ের করা হল।
শিকাগো থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
মেয়র এবং গভর্নর জেবি প্রিটজকারসহ নির্বাচিত ডেমোক্র্যাট নেতাদের বিরোধিতা সত্ত্বেও ট্রাম্প সপ্তাহান্তে শিকাগোতে ৭শ’ ন্যাশনাল গার্ড সৈন্য মোতায়েনের অনুমোদন দিয়েছেন।
ইলিনয়ের ফেডারেল আদালতে দায়ের করা একটি মামলায় রাজ্যের অ্যাটর্নি জেনারেল কোয়ামে রাউল এবং শিকাগোর আইনজীবী ট্রাম্পকে ‘তার রাজনৈতিক শত্রুদের শাস্তি দেওয়ার জন্য’ মার্কিন সেনা ব্যবহার করার অভিযোগ করেছেন।
তারা বলেছেন, ‘আমেরিকান জনগণ তারা যেখানেই থাকুক না কেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনীর দখলদারিত্বের হুমকির মধ্যে বসবাস করা উচিত নয় বিশেষ করে শুধু এই কারণে নয় যে, তাদের শহর বা রাজ্যের নেতৃত্ব প্রেসিডেন্টের অনুগ্রহের বাইরে চলে গেছে’।
তারা লিখেছেন, ‘শিকাগো অঞ্চলে জননিরাপত্তা প্রচার করা তো দূরের কথা, ‘ট্রাম্পের ‘উস্কানিমূলক এবং স্বেচ্ছাচারী পদক্ষেপ জনসাধারণের বিক্ষোভের সূত্রপাত করে জননিরাপত্তাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার হুমকি দিয়েছে।’
তারা আরো বলেছেন, ‘ইলিনয় এই আদালতকে এই পদক্ষেপগুলোকে বেআইনি ঘোষণা করতে এবং তাৎক্ষণিকভাবে এবং স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধ করার জন্য অনুরোধ করেছে’।
স্বরাষ্ট্র নিরাপত্তা সচিব ক্রিস্টি নয়েম শিকাগোতে সেনা পাঠানোর পরিকল্পনার পক্ষে যুক্তি দিয়ে বলেছেন, ফক্স নিউজের অনুষ্ঠান ‘ফক্স অ্যান্ড ফ্রেন্ডস উইকেন্ড’-এ দাবি করেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের তৃতীয় বৃহত্তম শহরটি ‘একটি যুদ্ধক্ষেত্র’।
সিএনএন-এর প্রতিক্রিয়ায় প্রিটজকার রিপাবলিকানদের ‘যুদ্ধক্ষেত্র তৈরির’ চেষ্টা করার অভিযোগ করেছেন, যাতে তারা আরো বেশি সৈন্য পাঠাতে পারে।
রোববার প্রকাশিত সিবিএসের এক জরিপে দেখা গেছে, ৫৮ শতাংশ আমেরিকান মার্কিন শহরগুলোতে ন্যাশনাল গার্ড মোতায়েনের বিরোধিতা করছেন।
কিন্তু ট্রাম্প গত সপ্তাহে ‘ভিতর থেকে যুদ্ধ’ করার জন্য সেনাবাহিনী ব্যবহার করার কথা বলেছিলেন। তিনি পিছু হটার কোনো লক্ষণ দেখাচ্ছেন না।
রোববার তিনি মিথ্যা দাবি করেছেন যে, ‘পোর্টল্যান্ড মাটিতে পুড়ে যাচ্ছে। সর্বত্র বিদ্রোহীরা।’
- ‘সামরিক আইন নয়, সাংবিধানিক আইন’ -
স্বদেশের মাটিতে সেনাবাহিনী ব্যবহার করার ট্রাম্পের প্রচারণা শনিবার পোর্টল্যান্ডে বাধার মুখে পড়ে যখন একটি ফেডারেল আদালত এই মোতায়েনের পদক্ষেপকে বেআইনি বলে রায় দেন।
ট্রাম্প বারবার পোর্টল্যান্ডকে ‘যুদ্ধবিধ্বস্ত’ বলে অভিহিত করেছেন, কিন্তু জেলা বিচারক কারিন
ইমারগুট সেনা মোতায়েনের ওপর একটি অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞা জারি করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্টের সিদ্ধান্ত বাস্তবতার সাথে অসঙ্গত ছিল।’
ইমারগুট লিখেছেন, ‘এটি সাংবিধানিক আইনের একটি জাতি, সামরিক আইন নয়’।
তিনি বলেছেন যদিও পোর্টল্যান্ডে ফেডারেল অফিসার এবং সম্পত্তির ওপর বিক্ষিপ্ত আক্রমণ দেখা গেছে, প্রশাসন ‘সহিংসতার সেই পর্বগুলো সম্পূর্ণরূপে সরকারকে উৎখাত করার একটি সংগঠিত প্রচেষ্টার অংশ ছিল’ তা প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
দেশজুড়ে অভিবাসন এবং শুল্ক প্রয়োগকারী সংস্থার অভিযানে মূলত ডেমোক্র্যাটদের পরিচালিত শহরগুলোতে মুখোশধারী, সশস্ত্র ব্যক্তিদের একটি দলকে আবাসিক এলাকা এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোকে লক্ষ্য করে বিক্ষোভ দেখাতে দেখা গেছে। এর ফলে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে।
শনিবার শিকাগোতে উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি সহিংস হয়ে ওঠে যখন একজন ফেডারেল অফিসার একজন মোটরচালককে গুলি করে হত্যা করেন। যাকে হোমল্যান্ড সিকিউরিটি বিভাগ বলেছে, মোটরসাইকেল আরোহী সশস্ত্র ছিল এবং তাদের একটি গাড়িতে ধাক্কা দেয়।