ঢাকা, ৮ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : পুরুষের তুলনায় নারীর জিনগত ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বেশি থাকে, বুধবার অস্ট্রেলিয়ান গবেষকদের প্রকাশিত এক গবেষণায় এ তথ্য জানা যায়। গবেষণার এই ফলাফল উক্ত ব্যাধির চিকিৎসা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে পারে।
এ ধরণের অন্যতম সর্ববৃহৎ হিসেবে বিবেচিত এই গবেষণায়, বিজ্ঞানীরা প্রায় ২ লাখ বিষণ্নতায় আক্রান্ত ব্যক্তির ডিএনএ পরীক্ষা করে দেখেছেন, তাদের জেনেটিক ফ্ল্যাগ (পারিবারিক ইতিহাস বা শারীরিক বৈশিষ্ট্যের লক্ষণ জিনগতভাবে প্রভাবিত কোনও অবস্থা) তুলে ধরে।
অস্ট্রেলিয়ার বার্গোফার মেডিকেল রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণা অনুসারে, পুরুষের তুলনায় নারীর মধ্যে বিষণ্নতার সঙ্গে সম্পর্কিত জেনেটিক মার্কারগুলো প্রায় দ্বিগুণ।
গবেষক জোডি টমাস বলেন, ‘পুরুষদের তুলনায় নারীদর মধ্যে বিষণ্নতার জিনগত উপাদান বেশি।’
‘পুরুষ ও নারীর মধ্যে ভাগ করা ও অনন্য জেনেটিক কারণগুলো উন্মোচন করলে আমাদের বিষণ্নতার কারণ সম্পর্কে একটি পরিষ্কার চিত্র পেতে পারি এবং এতে করে আরো ব্যক্তিগত চিকিৎসার দরজা খুলে যায়।’
এটা অনেক আগে থেকেই জানা গেছে যে, নারীদের মধ্যে বিষণ্নতা বেশি দেখা যায়, কিন্তু জৈবিক কারণগুলো এখনো রহস্যের মতো।
গবেষকরা জানান, নারীদের মধ্যে বিষণ্নতার সঙ্গে প্রায় ১৩ হাজার জেনেটিক মার্কার যুক্ত, যেখানে পুরুষদের ক্ষেত্রে এই সংখ্যা ৭ হাজার।
এই জিনগত পরিবর্তনগুলোর মধ্যে কিছু বিপাক বা হরমোন উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত জৈবিক পথ পরিবর্তন করতে পারে।
টমাস বলেন, ‘আমরা কিছু জেনেটিক পার্থক্য খুঁজে পেয়েছি যা ব্যাখ্যা করতে সাহায্য করতে পারে যে কেন বিষণ্নতায় আক্রান্ত নারীরা প্রায়শই ওজন পরিবর্তন বা শক্তির স্তর পরিবর্তনের মতো বিপাকীয় লক্ষণগুলো অনুভব করেন।’
গবেষক ব্রিটানি মিশেল বলেন, এই ফলাফলগুলো নারীদের মধ্যে বিষণ্নতার চিকিৎসার পদ্ধতিতে পরিবর্তন আনতে পারে।
তিনি বলেন, ‘এখন পর্যন্ত, জেনেটিক্সের সম্ভাব্য ভূমিকাসহ, বিষণ্নতা কেন নারী ও পুরুষের ভিন্নভাবে প্রভাবিত করে তা ব্যাখ্যা করার জন্য খুব বেশি ধারাবাহিক গবেষণা হয়নি।’
ক্লিনিক্যাল ডিপ্রেশন বা মেজর ডিপ্রেশনাল ডিসঅর্ডার, বিশ্বের সবচেয়ে সাধারণ মানসিক ব্যাধিগুলোর মধ্যে একটি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, বিশ্বজুড়ে ৩০ কোটিরও বেশি মানুষ বিষণ্নতায় ভুগছে।
গবেষণাটি নেচার কমিউনিকেশনস নামক পিয়ার-রিভিউ জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।