ঢাকা, ৯ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : ইউরোপীয় পার্লামেন্টে আজ দু’টি আস্থা ভোটের মুখোমুখি হচ্ছেন ইউরোপী ইউনিয়ন (ইইউ) প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন। এমন পদক্ষেপ তার নেতৃত্বের জন্য গুরুতর কোনো হুমকি সৃষ্টি করছে না।
ফ্রান্সের স্ট্রাসবার্গ থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
উরসুলার বিরুদ্ধে কট্টর-বাম ও কট্টর-ডানপন্থীরা দু’টি নিন্দা প্রস্তাব আনে। তাদের অভিযোগ, উরসুলা ইউরোপীয় কমিশনে স্বচ্ছতার বজায় রাখছেন না। এছাড়া তার বাণিজ্য নীতির ব্যাপারেও তাদের আপত্তি রয়েছে।
তবে, আস্থা ভোটে উরসুলা উতরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও, এ ধরনের পদক্ষেপ তার নেতৃত্বের প্রতি ক্রমবর্ধমান অসন্তোষকে প্রতিফলিত করে এবং তার রক্ষণশীল ইউরোপীয় পিপলস পার্টির (ইপিপি) নেতৃত্বাধীন জোটের সমর্থনও পরীক্ষা হবে।
গত জুলাইয়ে তাকে ক্ষমতা থেকে সরাতে পূর্ববর্তী উগ্র-ডানপন্থী প্রচেষ্টা থেকে উরসুলা বেঁচে যান। কিন্তু ভোটের ফলে উরসুলার তথাকথিত ইউরোপপন্থী শিবিরের মিত্রদের জন্য তাদের নিজস্ব অভিযোগ প্রকাশের দরজা খুলে দেয়।
বাম ও মধ্যপন্থী সমালোচকরা উরসুলার সমালোচনা করে বলেছেন, তিনি পরিবেশ আইন মেনে চলা থেকে বিচ্যুত হয়েছেন।
গত সোমবার চেম্বারে এক উত্তপ্ত বিতর্কের সময় মধ্যপন্থী রিনিউ গ্রুপের নেতা ভ্যালেরি হায়ার অভিযোগ করেন, আমরা আসলে বলতে পারি না যে— এই পার্লামেন্টে কোনো অগ্রগতি হয়েছে।
তিনি আরো বলেন, ইউরোপপন্থী সংখ্যাগরিষ্ঠরা যারা আপনাকে নির্বাচন করেছেন, তারা এখনো সঠিকভাবে কাজ করছেন না।
উরসুলাকে একটি সতর্কতামূলক বার্তা দিয়েছেন ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য ইরাটক্সে গার্সিয়া পেরেজ।
তিনি সংসদে বলেন, যারা আপনার মিত্র এবং যারা আমাদের মিত্র নয়, তাদের মধ্য থেকে যেকোনো এক পক্ষকে আপনাকে বেছে নিতে হবে।
সোমবারের বিতর্কে উভয় দলই উরসুলার বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ সুষ্টি করেছে এবং তাকে পদত্যাগ করার আহ্বান জানিয়েছে।
ফ্রান্সের কট্টর-বামপন্থী আইনপ্রণেতা মানন আউব্রি গাজায় গণহত্যার ব্যাপারে তিনি নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করেছেন বলে অভিযুক্ত করেছেন। অন্যদিকে কট্টর-ডানপন্থী প্যাট্রিয়টস গ্রুপের প্রধান জর্ডান বারডেলা যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ইউরোপের বাণিজ্য ‘আত্মসমর্পনের’ সমালোচনা করেন।
তবে, নিজেরা হতাশ হওয়া সত্ত্বেও সমাজতন্ত্রী বা মধ্যপন্থী কারোরই উরসুলার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করার সম্ভাবনা কম।
সমালোচিত হয়েও উরসুলা গত জুলাইয়ের তুলনায় এবার অনেক বেশি সমঝোতার সুরে কথা বলছেন। তিনি সমালোচকদের রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের ভক্ত বলে রসিকতা করেছেন।
সোমবার তিনি আইনপ্রণেতাদের বলেন, আমি জানি আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ আছেন, যারা এখনো নিশ্চিত না যে, এই সপ্তাহের শেষের দিকে কীভাবে ভোট দেবেন।
কমিশনের সভাপতি ঐক্যের আহ্বান জানিয়েছেন এবং ইউক্রেনের যুদ্ধ ও রাশিয়ার বৃহত্তর হুমকিসহ জোটের সামনে থাকা চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলার ওপর জোর দেন।
তিনি বলেন, ‘সত্যি হলো-প্রতিপক্ষরা কেবল আমাদের যেকোনো বিভাজনকে কাজে লাগাতে প্রস্তুতই নয়, তারা আগে থেকেই বিভেদগুলো উস্কে দিচ্ছে।’