‘গাজা থেকে তোমাদের জন্য ভালোবাসা পাঠাচ্ছি’: ফিলিস্তিনিবাসী

বাসস
প্রকাশ: ০৯ অক্টোবর ২০২৫, ২০:০২

ঢাকা, ৯ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : বৃহস্পতিবার ইসরাইল ও হামাস দুই বছরের ভয়াবহ যুদ্ধের অবসান ঘটাতে যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হওয়ার পর দক্ষিণ গাজার ফিলিস্তিনিরা ভোরের অন্ধকারে হাততালি, উল্লাস এবং নাচা-নাচিতে বিভোর ছিল। 

গাজার খান ইউনিস থেকে এএফপি এ খবর জানিয়েছে।

খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের বাইরে যখন একজন ব্যক্তি আনন্দে আত্মহারা হয়ে অন্য এক জনকে কাঁধে তুলে নিয়ে নাচা-নাচি করছিলেন। তখন প্রায় এক ডজন তরুণের ভিড় আনন্দে ‘আল্লাহু আকবর’, যার অর্থ আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ, ধ্বনি দিচ্ছিল।

সাংবাদিকের প্রেস জ্যাকেট পরা একজন ব্যক্তিকে ভিড়ের ওপরে তুলে মাইক্রোফোনে কথা বলতে দেখা গেছে।

দক্ষিণ গাজার বাসিন্দা আবদেলমাজিদ আবেদরাব্বো বলেছেন, ‘এই যুদ্ধবিরতির জন্য আল্লাহকে ধন্যবাদ, রক্তপাত এবং হত্যাকাণ্ডের অবসানের জন্য ধন্যবাদ’।
তিনি আরো বলেছেন, ‘আমি একা খুশি নই, পুরো গাজাবাসী খুশি, সমস্ত আরব জনগণ যুদ্ধবিরতিতে খুশি।’ 

‘যারা আমাদের সাথে দাঁড়িয়ে রক্তপাত বন্ধে ভূমিকা রেখেছেন এবং গাজা থেকে আপনাদের ভালোবাসা পাঠিয়েছেন, তাদের সকলকে ধন্যবাদ এবং ভালোবাসা।’

ইসরাইল এবং হামাস বৃহস্পতিবার গাজা যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হয়েছে যা কয়েক দিনের মধ্যে অবশিষ্ট জীবিত জিম্মিদের মুক্তি দিতে পারে। এই যুদ্ধে হাজার হাজার মানুষকে হত্যা এবং মানবিক সংকট সৃষ্টিকারী যুদ্ধের অবসানের একটি বড় পদক্ষেপ।

বৃহস্পতিবার স্বাক্ষরিত এই চুক্তিতে ইসরাইলকে কয়েকশ’ ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দেওয়ার পাশাপাশি ২০২৩ সালের অক্টোবরে ইসরাইলের ওপর হামাসের অতর্কিত আক্রমণের ফলে শুরু হওয়া দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধের পর গাজায় সাহায্যের আহ্বান জানানো হয়েছে।

- ‘আমরা খুশি’ -

আয়মান আল-নাজ্জার খান ইউনিসে এএফপি’কে বলেছেন, ‘সমস্ত আহত এবং হত্যাকাণ্ড এবং প্রিয়জন এবং আত্মীয়স্বজনদের হারানো সত্ত্বেও যুদ্ধবিরতিতে আমরা আজ খুশি’।

তিনি আরো বলেছেন, ‘আমি আমার চাচাতো ভাইবোন এবং কিছু বন্ধুকে হারিয়েছি এবং এক সপ্তাহ আগে আমি আমার প্রিয় দাদাকে হারিয়েছি। তার আত্মা শান্তিতে থাকুক।

কিন্তু আজ এবং এত কিছুর পরেও আমরা খুশি’।

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর, ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাসের ইসরাইলের ওপর আক্রমণের ফলে   গাজায় যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। ইসরাইলি সরকারি পরিসংখ্যানেরওপর ভিত্তি করে এএফপি’র হিসাব অনুসারে ১,২১৯ জন নিহত হয়েছিল। এদের বেশিরভাগই বেসামরিক নাগরিক।

হামাস-নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মতে, গাজায় ইসরাইলের প্রতিশোধমূলক অভিযানে কমপক্ষে ৬৭,১৮৩ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি নাগরিক নিহত হয়েছেন। যার বেশিরভাগই নারী ও শিশু। 

হামাস গাজায় ২৫১ জনকে জিম্মি করে, যেখানে ৪৭ জন এখনো রয়ে গেছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী বলেছে এর মধ্যে ২৫ জন মারা গেছে।

- ‘অবর্ণনীয়’ -

যুদ্ধবিরতি চুক্তিটি গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক ঘোষিত গাজার জন্য ২০-দফা শান্তি পরিকল্পনা অনুসরণ করে।

ওয়ায়েল রাদওয়ান বলেছেন, ‘আল্লাহকে ধন্যবাদ। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুদ্ধের সমাপ্তি ঘোষণা করেছেন। আমরা খুবই খুশি’।

‘আমরা আমাদের ভাইদের এবং যারা এই যুদ্ধ এবং এই রক্তপাত বন্ধ করার জন্য শুধু কথা বলেও অংশগ্রহণ করেছিলেন তাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই।’

মধ্য গাজা উপত্যকার আল-মাঘজাইতে বাস্তুচ্যুত ২৬ বছর বয়সী খালেদ আল-নামনাম বলেছেন, তিনি এই খবরটি আশা করেননি।

তিনি টেলিফোনে এএফপি’কে বলেছেন, ‘হঠাৎ, সকালে ঘুম থেকে উঠে আমি অবিশ্বাস্যভাবে সুন্দর খবর পেলাম। সবাই যুদ্ধের সমাপ্তি, সাহায্য আসা এবং ক্রসিং খোলার কথা বলছিল। আমি অপরিসীম আনন্দ অনুভব করলাম’।

‘দুই বছর ধরে বোমা হামলা, ভয়, সন্ত্রাস এবং ক্ষুধার পর এটি একটি অদ্ভুত অনুভূতি যা অবর্ণনীয়। সত্যিই, মনে হচ্ছে আমরা আবার জন্মগ্রহণ করছি।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
মিরপুরে মাদক বিরোধী অভিযান : ২৩ জনকে কারাদণ্ড
ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন করায় ডিএমপিতে ৩৮৪৮ মামলা
বিশ্ব দৃষ্টি দিবস উপলক্ষে খুলনায় বিনামূল্যে চক্ষু সেবা প্রদান
ভান্ডারিয়া পৌরসভা নির্বাচনের নতুন গেজেট প্রকাশ : মাহিবুল হোসেনকে মেয়র ঘোষণা
কক্সবাজারে প্রথম প্লাস্টিক রিসাইক্লিং কারখানার যাত্রা শুরু
ডিগ্রি পাস ও সার্টিফিকেট কোর্স ২য় বর্ষ পরীক্ষার ফল প্রকাশ
১২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে বিনামূল্যে টাইফয়েড টিকাদান ক্যাম্পেইন
অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে চার জেলায় দুদকের অভিযান
দল হিসেবে আওয়ামী লীগের বিচার হওয়া প্রয়োজন : উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
শেষ মুহূর্তের গোলে বাংলাদেশের স্বপ্নভঙ্গ
১০