ঢাকা, ১৪ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে জিম্মি ও বন্দী বিনিময়ের কয়েক ঘন্টা পর, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আঞ্চলিক নেতারা গাজায় যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে একটি ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেছেন। ট্রাম্প এটিকে ‘মধ্যপ্রাচ্যের জন্য অসাধারণ দিন’ বলে অভিহিত করেছেন।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
ট্রাম্প ইসরাইলে এক অসাধারণ সফর করেন। সেখানে তিনি পার্লামেন্টে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর প্রশংসা করেন। এরপর তিনি গাজা শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে মিশরে যান।
গতকাল সোমবার তিনি এবং মিশর, কাতার ও তুরস্কের নেতারা যুদ্ধবিরতি চুক্তির গ্যারান্টি হিসেবে ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করেন।
ট্রাম্প বলেন, ‘এটি বিশ্বের জন্য একটি অসাধারণ দিন, এটি মধ্যপ্রাচ্যের জন্য একটি অসাধারণ দিন।’ শার্ম আল শেখের রিসোর্টে দুই ডজনেরও বেশি বিশ্বনেতা আলোচনায় যোগদান করেন।
পরে তিনি ঘোষণা করেন, ‘সবাই যা অসম্ভব বলে মনে করেছিল, সমবেত নেতারা তা অর্জন করেছেন।’
ট্রাম্প এক বক্তৃতায় বলেন, ‘অবশেষে, মধ্যপ্রাচ্যে আমাদের শান্তি আছে।’
ঘোষণাপত্র অনুসারে, স্বাক্ষরকারীরা ‘এই অঞ্চলে শান্তি, নিরাপত্তা ও সমৃদ্ধির একটি বিস্তৃত দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করার’ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন এবং ‘গাজা উপত্যকায় ব্যাপক ও টেকসই শান্তি ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠায় অর্জিত অগ্রগতি’কে স্বাগত জানিয়েছেন।
তবে সোমবার রাতে হোয়াইট হাউস কর্তৃক প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ফিলিস্তিনসহ ইসরাইলের প্রতিবেশীদের মধ্যে শান্তির পথ সম্পর্কে অস্পষ্টতা ছিল।
বিবৃতিটিতে এক বা দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের কোনও উল্লেখ ছিল না।
হোয়াইট হাউসে ফেরার পথে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা গাজা পুনর্নির্মাণের কথা বলছি। আমি একক রাষ্ট্র বা দ্বি-রাষ্ট্রের কথা বলছি না।’
মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেছেন, গাজা চুক্তি ‘মানব ইতিহাসের একটি বেদনাদায়ক অধ্যায়ের সমাপ্তি ঘটিয়েছে’ এবং দ্বি-রাষ্ট্রীয় সমাধানের মঞ্চ তৈরি করেছে।
গাজা যুদ্ধের অবসান ঘটানোর ট্রাম্পের পরিকল্পনার অংশ হিসেবে, সোমবার হামাস গাজায় দুই বছর বন্দী থাকার পর বেঁচে থাকা ২০ জন বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে। বিনিময়ে ইসরাইল তাদের কারাগারে বন্দী এক হাজার ৯শ’ ৬৮ জন ফিলিস্তিনি বন্দীকে মুক্তি দিয়েছে।
ট্রাম্প ইসরাইলের সংসদে বলেন, ‘এই ভূখণ্ড জুড়ে এত পরিবারের জন্য, বছরের পর বছর ধরে সত্যিকারের শান্তির একটি দিনও আসেনি।’
তিনি আরো বলেন, ‘শুধু ইসরাইলিদের জন্য নয়, ফিলিস্তিনিদের জন্যও এবং আরও অনেকের জন্যও, দীর্ঘ ও বেদনাদায়ক দুঃস্বপ্ন অবশেষে শেষ হয়েছে।’
অধিকৃত পশ্চিম তীরের রামাল্লাহ শহরে, প্রথম বন্দীদের স্বাগত জানাতে অনেক মানুষ জড়ো হয়। এদের মধ্যে কেউ কেউ ‘আল্লাহু আকবার’ বা আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ ধ্বনি দেয়।
অধিকৃত পশ্চিম তীর শহর রামাল্লায় প্রথম বন্দীদের বাড়িতে স্বাগত জানাতে বিশাল জনতা জড়ো হয়েছিল, এদের মধ্যে কেউ কেউ ‘আল্লাহু আকবার’ বা আল্লাহ সর্বশ্রেষ্ঠ স্লোগান দেয়।
দক্ষিণ গাজা শহর খান ইউনিসে, বাসিন্দারা ধীরগতিতে চলমান রেড ক্রস বাসের ধারে উঠে বন্দীদের বহনকারী তাদের প্রিয়জনদের আলিঙ্গন বা চুম্বনের মাধ্যমে স্বাগত জানায়।