ঢাকা, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ (বাসস): গাজায় চলমান নয় দিনের যুদ্ধবিরতি নিয়ে রোববার নতুন করে দ্বন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। ইসরাইলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হামাসের হামলার জবাবে গাজার দক্ষিণাঞ্চলে বিমান হামলা চালিয়েছে।
অন্যদিকে হামাস জানিয়েছে, তারা যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে এবং ইসরাইল ‘আবারও হামলার অজুহাত তৈরি করছে’।
গাজা শহর থেকে এএফপি জানায়, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দপ্তর জানায়, তিনি নিরাপত্তা বাহিনীকে নির্দেশ দিয়েছেন ‘গাজা উপত্যকায় সন্ত্রাসী লক্ষ্যবস্তুগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে’।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যস্থতায় ১০ অক্টোবর থেকে কার্যকর এই যুদ্ধবিরতি ইসরাইল ও হামাসের মধ্যে দুই বছরেরও বেশি সময় ধরে চলা বিধ্বংসী যুদ্ধের অবসান ঘটায়।
এই চুক্তিতে বন্দি ও কয়েদি বিনিময়ের পাশাপাশি গাজার ভবিষ্যতের একটি রূপরেখাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।তবে বাস্তবায়নের শুরু থেকেই তা নানা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে।
ইসরাইলি সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানায়, আজ সকালে রাফাহ এলাকায় সন্ত্রাসী অবকাঠামো ধ্বংসে অভিযান চালানোর সময় সন্ত্রাসীরা অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক ক্ষেপণাস্ত্র নিক্ষেপ করে ও গুলি চালায়। সেনারা জবাবে যুদ্ধবিমান ও আর্টিলারি হামলা চালায়।
একজন ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা জানান, হামাস যোদ্ধারা ইসরাইল নিয়ন্ত্রিত এলাকায় একাধিক হামলা চালিয়েছে।
ফিলিস্তিনি প্রত্যক্ষদর্শীরা বলেন, রাফাহ শহরে ইসরাইলি নিয়ন্ত্রণাধীন এলাকায় সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে।
এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, হামাস স্থানীয় একটি ফিলিস্তিনি গ্যাং আবু শাবাব দলের সঙ্গে লড়াই করছিল, কিন্তু হঠাৎ তারা ইসরাইলি ট্যাঙ্কের মুখোমুখি হয়। বিমান বাহিনী আকাশ থেকে দুটি হামলা চালিয়েছে।
এই সংঘর্ষের সময় প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু তার সরকারের মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। বৈঠকের পর কয়েকজন মন্ত্রী হামাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পুনরায় শুরু করার আহ্বান জানান।
জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রী ইতামার বেন গাভির বলেন, হামাস অনুতপ্ত হবে বা চুক্তি মেনে চলবে — এমন ভ্রান্ত ধারণা আমাদের নিরাপত্তার জন্য বিপজ্জনক প্রমাণিত হচ্ছে। হামাসকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করতে হবে।
অন্যদিকে, হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য ইজ্জাত আল-রিশক এক বিবৃতিতে বলেন, হামাস যুদ্ধবিরতি মেনে চলছে, কিন্তু ইসরাইল ‘‘চুক্তি লঙ্ঘন করছে এবং অপরাধের অজুহাত তৈরি করছে।’
হামাসের সামরিক শাখা জানায়, তারা যুদ্ধবিরতির প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং রাফাহে কোনো সংঘর্ষের বিষয়ে অবগত নয়।
মার্কিন শান্তি দূত স্টিভ উইটকফ আগামী সপ্তাহে মধ্যপ্রাচ্যে আসছেন যুদ্ধবিরতির অগ্রগতি পর্যবেক্ষণের জন্য।
ট্রাম্পের ২০ দফা পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইসরাইলি বাহিনী তথাকথিত ‘ইয়েলো লাইন’-এর বাইরে সরে গেছে।
তবে এখনও গাজার প্রায় অর্ধেক এলাকা ও সীমান্ত অঞ্চলসহ তাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।
হামাস এরই মধ্যে ২০ জন জীবিত জিম্মি মুক্ত করেছে এবং নিহতদের মরদেহ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া চালাচ্ছে।