
ঢাকা, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস): হামাসের কাছে জিম্মি থাকা আমিরাম কুপার ও সাহার বারুচের দেহাবশেষ বৃহস্পতিবার শনাক্ত করেছে ইসরাইল। হামাস গতকাল সকালে তাদের মৃতদেহ ফিরিয়ে দিয়েছে।
জেরুজালেম থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফরেনসিক মেডিসিন’ থেকে শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হওয়ার পর নিহতদের পরিবারকে অবহিত করা হয়েছে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার সময় তারা ২৫১ জনকে জিম্মি করে নিয়ে যায়। এরপর গাজায় ব্যাপক আক্রমণ শুরু করে ইসরাইল।
কিবুতজ বেইরি থেকে সাহার বারুচকে গাজায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং দুই মাস পর একটি ব্যর্থ সেনাবাহিনীর উদ্ধার অভিযানের সময় তাকে হত্যা করা হয়। মারা যাওয়ার সময় তার বয়স ছিল ২৫ বছর।
৮৪ বছর বয়সি আমিরাম কুপারকে তার স্ত্রী নুরিত কুপারের সঙ্গে কিবুতজ নির ওজে তাদের বাড়ি থেকে অপহরণ করা হয়েছিল।
২০২৪ সালের জুনে হামাসের হাতে বন্দি অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
ইসরাইলের সঙ্গে মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তির অংশ হিসেবে হামাস যে ২৮ জন নিহত জিম্মিকে হস্তান্তর করতে সম্মত হয়েছিল, তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত হামাস ১৭ জনের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দিয়েছে।
প্রচারণা গোষ্ঠী হোস্টেজেস অ্যান্ড মিসিং ফ্যামিলিজ ফোরাম এক বিবৃতিতে কুপার ও বারুচের পরিবারের প্রতি সমর্থন জানিয়েছে এবং বাকি মৃত জিম্মিদের দেহাবশেষ ফিরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডের দক্ষিণে এক হামলায় একজন ইসরাইলি সেনা নিহত হওয়ার পর গত মঙ্গলবার থেকে বুধবার রাতভর গাজায় ইসরাইল হামলা চালিয়েছে । 
হামাস কর্তৃপক্ষের অধীনে একটি উদ্ধারকারী বাহিনী হিসেবে কাজ করা গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, গত ১০ অক্টোবর যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার পর থেকে সবচেয়ে ভয়াবহ রাতের এই বোমা হামলায় শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে, তাদের মধ্যে কিছু সংখ্যক শিশুও রয়েছে।
ইসরাইল জানিয়েছে, তারা বুধবার সকাল থেকে পুনরায় ‘যুদ্ধবিরতি বজায়’ রেখেছে এবং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও আঞ্চলিক মধ্যস্থতাকারী কাতার উভয়ই বলেছে— তারা এটি বজায় থাকবে বলে আশা করছে।
যুদ্ধবিরতির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করে হামাস জানিয়েছে, রাফায় গুলি চালানোর ঘটনার সঙ্গে তাদের যোদ্ধাদের কোনো সম্পর্ক নেই।
তারা আরো বলেছে, যেকোনো ‘উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে মৃতদেহ অনুসন্ধান, খনন ও উদ্ধারে বাধা সৃষ্টি হবে।’
সোমবার হামাস পূর্বে উদ্ধার হওয়া একজন বন্দির আংশিক দেহাবশেষ ফেরত দেওয়ার পর ইসরাইলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয় এবং ইসরাইল একে যুদ্ধবিরতির লঙ্ঘন আখ্যায়িত করে।
হামাস বলেছে, ওই দেহাবশেষ ছিল ইসরাইলকে ফেরত দেওয়া ১৬তম মৃতদেহ।
তবে ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় জানায়, তাদের ফরেনসিক পরীক্ষায় দেখা গেছে— তা ছিল একজন জিম্মির আংশিক দেহাবশেষ, যার মৃতদেহ প্রায় দুই বছর আগে ইসরাইলে ফিরিয়ে আনা হয়েছিল।
এই মাসে যুদ্ধবিরতি শুরু হওয়ার পর হামাস তাদের হেফাজতে থাকা ২০ জন জীবিত বন্দিকে ফিরিয়ে দিয়েছে এবং মৃত জিম্মিদের মৃতদেহ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
ইসরাইল দ্রুত জিম্মিদের মৃতদেহ ফিরিয়ে না দেওয়ায় অভিযোগ করছে যে, হামাস চুক্তি ভঙ্গ করেছে। কিন্তু হামাসের দাবি, গাজার ধ্বংসাবশেষে চাপা পড়া দেহাবশেষ খুঁজে পেতে সময় লাগবে।