
ঢাকা, ৩১ অক্টোবর, ২০২৫ (বাসস) : চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিং ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার দক্ষিণ কোরিয়ার বুসানে বৈঠক করেছেন। এসময় তারা দু’দেশের মধ্যে চলমান বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমনে একমত হয়েছেন।
বুসান থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, যুক্তরাষ্ট্র কিছু শুল্ক কমাবে এবং চীন গুরুত্বপূর্ণ বিরল খনিজ সরবরাহ অব্যাহত রাখবে বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে।
ছয় বছর পর সি’র সঙ্গে প্রথম বৈঠককে ট্রাম্প ‘বড় সফলতা’ হিসেবে দেখছেন। আর চীনা প্রেসিডেন্ট জানান, তারা একটি ‘গুরুত্বপূর্ণ ঐকমত্যে’ পৌঁছেছেন, যা একটি অর্থনৈতিক বিরোধ সমাধানের পথে এগিয়ে যেতে সহায়তা করবে।
দক্ষিণ কোরিয়ায় আলোচনার পর ট্রাম্প সি’কে ‘একটি অত্যন্ত শক্তিশালী দেশের অসাধারণ নেতা’ হিসেবে প্রশংসা করেন এবং জানান তিনি এপ্রিল মাসে চীন সফরে যাবেন।
ট্রাম্প বলেন, আমি মনে করি এটি একটি অসাধারণ বৈঠক ছিল।
ট্রাম্প আরও জানান, চুক্তির আওতায় চীন যুক্তরাষ্ট্র থেকে ‘বিপুল পরিমাণে সয়াবিন ও অন্যান্য কৃষিপণ্য’ কিনবে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, আলোচনার ফলে চীনের গুরুত্বপূর্ণ বিরল খনিজ সরবরাহ নিয়ে এক বছরের নবায়নযোগ্য চুক্তি হয়েছে। এ খনিজ বিভিন্ন শিল্পে ব্যবহৃত উন্নত ইলেকট্রনিক উপাদানের জন্য অপরিহার্য।
বেইজিংয়ের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ও নিশ্চিত করেছে, তারা এক বছরের জন্য কিছু রপ্তানি নিষেধাজ্ঞা স্থগিত করবে, যার মধ্যে বিরল খনিজ উপাদানও রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্টকে বহনকারী বিমান এয়ার ফোর্স ওয়ানে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, বিরল খনিজের বিষয়টি সমাধান করা হয়েছে এবং এটি বিশ্বের জন্যও প্রযোজ্য।
সি বলেন, একটি ‘ঐকমত্যে’ পৌঁছানো গেছে এবং চুক্তিটি চূড়ান্ত করতে ‘যত দ্রুত সম্ভব পরবর্তী পদক্ষেপ’ নিতে হবে।
ট্রাম্প আরও বলেন, চীনা নেতা প্রাণঘাতী ওপিওয়েড ফেন্টানিলের সরবরাহ ‘বন্ধ করতে কঠোরভাবে কাজ করার বিষয়ে’ সম্মত হয়েছেন।
তিনি বলেন, আমি চীনের ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করেছিলাম। কারণ ফেন্টানিল আসছিল এবং আজ সি’র বক্তব্যের ভিত্তিতে আমি তা ১০ শতাংশ কমিয়ে দিচ্ছি।
দুই নেতার কেউই আলোচনার পরপরই তাৎক্ষণিক কোনো প্রকাশ্য মন্তব্য করেননি। তবে প্রায় এক ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর তারা গণমাধ্যমে কথা বলেন।
ট্রাম্প সরাসরি এয়ার ফোর্স ওয়ানে উঠে পড়েন এবং বিমানে ওঠার সময় হাত নাড়িয়ে ও মুষ্টিবদ্ধ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। বিমানটি কিছুক্ষণের মধ্যেই উড়াল দেয়। সি’কে বৈঠকস্থল থেকে বেরিয়ে তার লিমুজিনে উঠতে দেখা যায়।
আলোচনা শুরুর আগে সি স্বীকার করেন, উভয় পক্ষ সবসময় একমত না হলেও তাদের ‘অংশীদার ও বন্ধু’ হওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালানো উচিত।
বৈঠকে দুই নেতা মুখোমুখি বসেছিলেন এবং তাদের পাশে ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও, অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট ও বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক।
অপরদিকে সি’র দলে ছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই, বাণিজ্যমন্ত্রী ওয়াং ওয়েনতাও এবং ভাইস প্রিমিয়ার হ্য লিফেং।