
ঢাকা, ৬ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : লেবানন ও ইসরাইলের মধ্যে যেকোনো রাজনৈতিক আলোচনার সম্ভাবনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে হিজবুল্লাহ। বৃহস্পতিবার সংগঠনটি জোর দিয়ে বলেছে, তাদের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে।
বৈরুত থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানায়।
হিজবুল্লাহর রাজনৈতিক নেতৃত্বের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ও মিশর সম্প্রতি লেবাননের নেতাদের আলোচনায় বসতে চাপ দেওয়ার কারণে এ ঘোষণা দিয়েছে হিজবুল্লাহ।
লেবানন ও ইসরাইলের মধ্যে এখনও আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধাবস্থা বিরাজ করছে। তবে সাম্প্রতিক সকল সশস্ত্র সংঘাতে হিজবুল্লাহ নেতৃত্ব দিয়েছে, লেবাননের সেনাবাহিনী নয়।
ইসরাইল ও লেবাননের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে কূটনৈতিক যোগাযোগ হয়ে থাকে। এতে যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স এবং জাতিসংঘ জড়িত রয়েছে। এই কমিটি নিয়মিতভাবে লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে জাতিসংঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর সদর দপ্তরে বৈঠক করে। তবে লেবানন ও ইসরাইলের পক্ষগুলো সরাসরি একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করে না।
১৯৭৫ থেকে ১৯৯০ সালের গৃহযুদ্ধের পর লেবাননের একমাত্র সংগঠন হিসেবে হিজবুল্লাহ নিরস্ত্রীকরণে অস্বীকৃতি জানায়। তারা প্রথমে দাবি করে, ইসরাইল অধিকৃত ভূখণ্ড মুক্ত করার ক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব রয়েছে। পরে তারা দেশটির প্রতিরক্ষার দায়িত্ব পালনের কথা বলে।
বৃহস্পতিবার লেবাননের জনগণ ও নেতাদের উদ্দেশে এক খোলা চিঠিতে হিজবুল্লাহ জানায়, তারা লেবানন ও ইসরাইলের মধ্যে যেকোনো রাজনৈতিক আলোচনা প্রত্যাখ্যান করছে এবং এমন আলোচনা ‘জাতীয় স্বার্থে সহায়ক নয়’।
ইরান-সমর্থিত হিজবুল্লাহ এ বছর ইসরাইলের বিরুদ্ধে নিজস্ব যুদ্ধও পরিচালনা করেছে।
হিজবুল্লাহ আরও ঘোষণা দেয়, যারা আমাদের দেশে যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় এবং হামলা বন্ধ করছে না, তাদের বিরুদ্ধে আমাদের আত্মরক্ষার অধিকার পুনর্ব্যক্ত করছি।
সংগঠনটি জানায়, তারা গত বছর ইসরাইলের সঙ্গে যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি করেছে, তার প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ রয়েছে।
গত সপ্তাহে ইসরাইল হুঁশিয়ারি দিয়েছে, তারা লেবাননে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করতে পারে। এদিকে, প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু অভিযোগ করেছেন, হিজবুল্লাহ আবারও অস্ত্র সংগ্রহের চেষ্টা করছে।
লেবানন সরকার বৃহস্পতিবার এক বৈঠকে বসা কথা রয়েছে। এতে তারা হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণের প্রচেষ্টার অগ্রগতি পর্যালোচনা করবে।
২০২৪ সালের নভেম্বরের যুদ্ধবিরতি চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের অবসান ঘটলেও ইসরাইল এখনও দক্ষিণ লেবাননের পাঁচটি এলাকায় সেনা মোতায়েন করে রেখেছে এবং হামলা চালিয়ে যাচ্ছে।
যুদ্ধবিরতির পর থেকে যুক্তরাষ্ট্র লেবানন কর্তৃপক্ষের ওপর হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণের জন্য চাপ দিয়ে যাচ্ছে। তবে হিজবুল্লাহ ও তাদের মিত্ররা এর বিরোধিতা করছে।