জুলাই অভ্যুত্থান স্বৈরাচার সরকার পতনে সম্মিলিত প্রচেষ্টার প্রতিফলন: তৌহিদ সিয়াম

বাসস
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ১৫:২৯
তৌহিদ সিয়াম। ফাইল ছবি

প্রতিবেদক: ওসমান গণি রাসেল

ঢাকা, ৩ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানে স্বৈরাচার আওয়ামী সরকারের বিরুদ্ধে এদেশের আপামর ছাত্র-জনতা নিজেদের জীবন বাজি রেখে লড়াই করেছিলো। সেই সময়ে আন্দোলন আর সংগ্রামে উত্তাল হয়ে উঠেছিল সারাদেশ। উত্তাল ছিল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ও।

দেশের যে কোন অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে আন্দোলনের মাঠে সবসময় সরব থাকেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরই ধারাবাহিকতায় কোটা সংস্কার আন্দোলন ও পরবর্তীকালে স্বৈরাচার বিরোধী গণঅভ্যুত্থানেও নিজেদের জীবন বাজি রেখে সংগ্রাম করেছেন এ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।

এদের সাহসী ও সংগ্রামী কার্যক্রম স্বৈরাচারের পতনকে আরো ত্বরান্বিত করেছিল।

সেই সময় হাজারো শিক্ষার্থীকে সংগঠিত করে আন্দোলন পরিচালনায় যারা সম্মুখ সারিতে নেতৃত্ব দিতেন তাদের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ৪৯তম ব্যাচের তৌহিদ সিয়াম ছিলেন অন্যতম।

শেরপুর জেলার সদর উপজেলার জহির রায়হান জুয়েল ও সোনিয়া লিলি দম্পতির সন্তান তৌহিদ সিয়াম। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের আবাসিক শিক্ষার্থী।

তৌহিদ সিয়াম বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তী সময়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিব, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের কেন্দ্রীয় যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সর্বশেষ বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সদস্য সচিবের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি বাসসের সাথে সাক্ষাৎকারে জুলাই গণঅভ্যুত্থান কালের স্মৃতি তুলে ধরেছেন।

সাক্ষাৎকারটি গ্রহণ করেছেন বাসসের প্রতিবেদক ওসমান গণি রাসেল।

বাসস: জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রায় এক বছর পূর্ণ হতে চলেছে। জুলাইয়ের সেই সংগ্রামী সময়ের স্মৃতি এখনো কি অনুভব করতে পারেন?

সিয়াম: জুলাইয়ের স্মৃতি ও অনুভূতি আমার মাঝে এখনো তরতাজা। এই স্মৃতি চাইলেও ভোলা যাবে না। আমি সে সময়গুলোকে ভুলতেও চাই না। জুলাই বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। সেই সময়ের দৃশ্যগুলো এখনো আমাদেরকে তাড়িত করে। সংগ্রামী জুলাইয়ের অনুভূতিকে সর্বদা ধারণ করে আমরা এগিয়ে যেতে চাই।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছিল?

সিয়াম: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় যুক্তিসংগত যেকোনো আন্দোলনে সবসময় অগ্রগামী থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় কোটা সংস্কার আন্দোলনেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে। ২০১৮ সালে কোটা সংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষিতে গৃহীত সরকারের সিদ্ধান্ত বাতিল করে ২০২৪ সালে আবারো এই ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হলে সারাদেশের শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ মুখর হয়ে ওঠে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও সে প্রতিবাদ ছড়িয়ে পড়ে। এরই প্রেক্ষিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন প্ল্যাটফর্মের যাত্রা শুরু হয়। সরকারি বাহিনী ও আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগের দমন পীড়নে তা ধীরে ধীরে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়।

আপনারা কি শুরুতে জানতেন যে এই আন্দোলন স্বৈরাচার পতনের আন্দোলনে রূপ নেবে?

সিয়াম: এই আন্দোলন শুরু হয়েছিল কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে। তবে নানা ঘটনা পরিক্রমায় আন্দোলনটি সরকার বিরোধী আন্দোলনে রূপ নেয়। প্রকৃতপক্ষে আওয়ামী লীগ সরকারের বিগত ১৬ বছরের শাসনামলে জনগণ অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তাই সরাসরি সরকার পতন লক্ষ্য না হলেও স্বৈরাচার বিরোধী শক্তিগুলো দেশকে স্বৈরাচারমুক্ত করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ছিল। মানুষ ধীরে ধীরে সেই মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছে।

কোটা সংস্কার আন্দোলনে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কেমন ছিল?

সিয়াম: কোটা সংস্কার আন্দোলন ২০১৮ সালে একবার হয়েছিল। তখনও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছিলো। ২০২৪-এ পুনরায় কোটা ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনলে সারাদেশের মতো জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও এ ব্যবস্থার ন্যায্য সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলো। সরকারি চাকরি শিক্ষার্থীদের অন্যতম চাওয়া। কিন্তু অযৌক্তিক কোটা ব্যবস্থা চাপিয়ে দেয়ার মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের স্বপ্নকে চুরমার করে দেয়া হয়েছিলো। তাই নিজেদের ন্যায্য দাবি আদায়ে শিক্ষার্থীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে এ আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেছিলো।

ক্যাম্পাসে অহিংস কোটা সংস্কার আন্দোলন সহিংসতায় রূপ নিলো কীভাবে?

সিয়াম: শুরুতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা সংস্কারের দাবিতে নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলন চলমান ছিল। মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল এসব ছিল নিয়মিত আন্দোলনের অংশ।  তখন কোন সহিংসতা শুরু হয়নি। তবে ১৪ জুলাই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আন্দোলনকারীদের রাজাকার উপাধি দিলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। তারা ‘আমি কে, তুমি কে, রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান দিতে থাকেন। এরই প্রেক্ষিতে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলের একজন আন্দোলনকারীকে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা মারধর করে।

মারধরের প্রতিবাদে আমরা ছাত্রলীগের বিচার দাবি করে হলের সামনে মিছিল নিয়ে যাই। সেখানেও ছাত্রলীগ সহিংস আচরণ শুরু করে। হামলার সিসিটিভি ফুটেজ না দেখানোয় হলের প্রভোস্ট পদত্যাগে বাধ্য হয়।

পরের দিন, ১৫ জুলাই পুনরায় আমাদের মিছিলে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা দেশীয় অস্ত্রসহ হামলা করে। সেদিন  রাতে আমরা ভিসি বাস ভবনে আশ্রয় নিলে ছাত্রলীগ বহিরাগত সন্ত্রাসীদের এনে পুনরায় নৃশংস হামলা চালায়। এভাবে তারা একটি শান্তিপূর্ণ আন্দোলনকে সহিংসতার দিকে নিয়ে যায়।

আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলা সাধারণ শিক্ষার্থীদের কীভাবে প্রভাবিত করেছিল?

সিয়াম: আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলা আন্দোলনকে আরো বেগবান করেছিলো। ১৫ জুলাই রাতে উপাচার্য ভবনে আশ্রয় নেয়া আন্দোলনকারীদের ওপর ছাত্রলীগের নৃশংস হামলার ভিডিও  সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছিলো। সেদিন রাতে জাহাঙ্গীরনগরের হাজার হাজার সাধারণ শিক্ষার্থী সরাসরি আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়ে পড়েছিলো। তাই বলা যায় ছাত্রলীগের হামলা শিক্ষার্থীদের আরো বেশি একতাবদ্ধ করেছিলো।

আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কেমন ছিল?

সিয়াম: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের ব্যাপক অংশগ্রহণ থাকে। তবে শুরুতে কোটা সংস্কার আন্দোলনে নারী শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ কম ছিল। আমরা মেয়েদের হলে হলে গণসংযোগও শুরু করেছিলাম। তবে ১৫ জুলাই আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী বিশেষ করে কিছু নারী শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের হামলার পর তারা পুরোদমে আন্দোলনে যুক্ত হয়ে পড়ে। এরপর থেকে স্বৈরাচার পতন অবধি নারী শিক্ষার্থীদের সক্রিয় ভূমিকা ছিল।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪ এর গণঅভ্যুত্থান-স্বৈরাচার পতন আন্দোলনের ধারাবাহিকতা কীভাবে চলমান ছিল?

সিয়াম: ২০২৪ এর ৫ জুন হাইকোর্ট কর্তৃক কোটা ব্যবস্থা পুনর্বহাল করা হয়। এতে সারাদেশের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা তখন সবেমাত্র একটি নিপীড়নবিরোধী বড় আন্দোলন শেষ করেছি। সে আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রলীগ নেতা, আওয়ামীপন্থী একজন যৌন নিপীড়ক শিক্ষককে শাস্তির দাবিতে নানা কর্মসূচি পালন করেছিলাম। সর্বশেষ আমরা সফল হয়েছিলাম।

এরই মধ্যে পুনরায় কোটা সংস্কার আন্দোলনের যাত্রা শুরু হয়। ৬ জুন আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরিতে একটি মিটিং আহ্বান করি। যেহেতু লাইব্রেরিতে চাকরি প্রত্যাশী শিক্ষার্থীরা সবসময় পড়াশোনায় যুক্ত থাকে। এটা চাকরি সম্পর্কিত একটি বিষয়। সেখানে আমরা সকল শিক্ষার্থীর অভূতপূর্ব সাড়া পাই।

কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আমরাই সর্বপ্রথম ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করি। এরই মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঈদুল আযহার ছুটি শুরু হয়। তখন শিক্ষার্থীরা বাড়ি চলে গেলে আন্দোলন থেমে যায়। ঈদের ছুটি শেষ করে এসে পুনরায় আমরা আন্দোলন শুরু করি।

৩০ জুন এই আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই সর্বপ্রথম ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ এর ব্যানারে কর্মসূচি পালন করি। পরবর্তী সময়ে কেন্দ্রীয়ভাবে এই প্ল্যাটফর্মটি প্রতিষ্ঠা লাভ করে। তবে জাহাঙ্গীরনগরেই সর্বপ্রথম এই প্লাটফর্ম যাত্রা শুরু করেছিলো। অবস্থানগত কারণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক ইতিহাস জাতির সামনে উপস্থাপিত হয়নি।

তখন আমরা চিরাচরিত হরতাল অবরোধ এসব কর্মসূচি না দিয়ে নতুন নতুন ধরনের কর্মসূচি ঘোষণা করি। যেমন বাংলা ব্লকেডসহ আরো ক্রিয়েটিভ নাম দিয়ে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।

কোটা ব্যবস্থার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে ১ জুলাই থেকে ১৪ জুলাই আমরা নিয়মিত কর্মসূচি পালন করতে থাকি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতিদিন আমরা কিছু সময়ের জন্য ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ করতাম। এই কর্মসূচি আমাদের আন্দোলনকে জাতীয় পর্যায়ে আরো বেশি প্রভাবিত করতো।

সর্বশেষ ১৪ জুলাই গণভবনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ‘রাজাকার’ বলে অভিহিত করলে ছাত্র সমাজ আরো বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ দেশের নানা জায়গায় শিক্ষার্থীরা ‘তুমি কে আমি কে, রাজাকার রাজাকার’ বলে স্লোগান দিতে থাকে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরাও শেখ হাসিনার বক্তব্যের প্রতিবাদে মিছিল বের করে। এরই মধ্যে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হলে আন্দোলনকারী এক শিক্ষার্থীর ওপর ছাত্রলীগের কর্মীরা হামলা করে। এরই প্রতিবাদে আমরা মিছিল সহকারে সেই হলে যাই এবং ছাত্রলীগকর্মীদের বিচার দাবি করি। পাশাপাশি নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় হলের প্রভোস্টের পদত্যাগ দাবি করি। সে রাতেই হল প্রভোস্ট পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়। সেখানে ছাত্রলীগের সাথে আমাদের একধরনের উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হয়।

পরের দিন (১৫ জুলাই) ছাত্রলীগ মারমুখী হয়ে ওঠে। তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা ভাবে হুমকি দিতে থাকে আন্দোলনকারীদের। তবে আমরা সে হুমকিতে ভয় পাইনি। সেদিন বিকেলে আমরা আবারো বিক্ষোভ মিছিল বের করি।  এদিকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও সড়ক প্রদক্ষিণ করছিলো মিছিলের মাধ্যমে। এক পর্যায়ে আমাদের মিছিল শেখ মুজিবুর রহমান হলের সামনে এলে ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা শুরু করে। তারা লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। সেখানে আমাদের নারী শিক্ষার্থীসহ অনেক আন্দোলনকারী মারাত্মকভাবে আহত হয়।

পরবর্তী সময়ে আমরা এই হামলার বিচার চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থান নিয়েছিলাম। আমরা উপাচার্যকে বেশ কিছু দাবি জানিয়েছিলাম। তবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের দাবি মানেনি। তাই আমরা সেখানেই অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলাম।

এরই মধ্যে আমরা জানতে পারি ছাত্রলীগ বাইরের সন্ত্রাসীদের ক্যাম্পাসে এনেছে আমাদের ওপর পুনরায় হামলার জন্য। তারা আগ্নেয়াস্ত্রসহ নানা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আমাদের হামলা করতে আসে। আমরা নিজেদের জীবনের নিরাপত্তার জন্য উপাচার্য ভবনের ভেতরে অবস্থান নেই। কিন্তু উপাচার্য আমাদের কোনো নিরাপত্তা দেননি।

সেদিন মধ্যরাতে ছাত্রলীগ উপাচার্য ভবনে আশ্রয় নেয়া ক্লান্তশ্রান্ত আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর নারকীয় হামলা শুরু করে। অসংখ্য শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। এক পর্যায়ে হামলার খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশে ছড়িয়ে পড়লে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে। সেদিন মধ্যরাতে হলে অবস্থান করা হাজার হাজার সাধারণ শিক্ষার্থী ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামে।

মিছিল সহকারে তারা ভিসিভবনে আটকে পড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধার করতে যায়। সেখানে অবস্থানরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। আন্দোলনকারীদের ভিসি বাসভবন থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয় । মূলত সেদিনই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের সলিল সমাধি রচিত হয়। সারাদেশের ক্যাম্পাসগুলোর মধ্যে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ই সর্বপ্রথম ছাত্রলীগ মুক্ত ঘোষণা করা হয়।

১৫ জুলাই রাতের ঘটনার পর আন্দোলন আরো বেগবান হয়। ১৬ জুলাই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আশেপাশের বিভিন্ন স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এবং স্থানীয় সাধারণ মানুষও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে সম্পৃক্ত হয়।

এ অবস্থায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করে হল ভ্যাকেন্ট করে দেয়। আন্দোলন দমাতে প্রশাসনের কারসাজি বুঝতে পেরে শিক্ষার্থীরা হল ভ্যাকেন্টের সিদ্ধান্ত অমান্য করে হলে অবস্থানের ঘোষণা দেয়। পরে ১৭ জুলাই ক্যাম্পাসে শতশত পুলিশ প্রবেশ করানো হয়। তারা শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা শুরু করে। সংঘর্ষে বহু শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়। এরপরও শিক্ষার্থীরা পিছপা হয়নি।

এরই মধ্যে সরকার সারাদেশে কারফিউ জারি করে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাই সর্বপ্রথম কারফিউ ভেঙে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছিলো। যা সারাদেশে ব্যাপকভাবে প্রচারিত হয় এবং আন্দোলনকারীদের সাহস জোগায়।

এরই মধ্যে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন আন্দোলনকারীদের ধড়পাকড় শুরু করে। তখন আমরা অনেক সমন্বয়ক আত্মগোপন চলে যাই। দিনের বেলা ক্যাম্পাসে এসে আন্দোলন করে রাতে গোপনে অবস্থান নিয়ে কাটাতাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক আরিফ সোহেল ভাইকে গুম করা হয়। আমরা তারপরও আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকি।

সর্বশেষ ৩ আগস্ট এক দফা আন্দোলনের ঘোষণা আসে। আমরা পরিপূর্ণভাবে একদফা আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকি। ৫ আগস্ট সেনাপ্রধান ভাষণ দেয়ার কথা জানালে আমরা কিছু একটা হচ্ছে বলে ধারণা করি। অবশেষে স্বৈরাচার হাসিনার বিদায়ের খবর আসে।

সারাদেশে বিজয় মিছিল শুরু হলেও আমরা তখনও বিজয় লাভ করিনি। সাভার এলাকায় তখনো নারকীয় হত্যাযজ্ঞ চলতে থাকে। গণভবন অভিমুখী মিছিলে সাভার এলাকায় পুলিশ গুলি চালালে আমাদের অনেক সহযোদ্ধা আহত ও কয়েকজন নিহত হয়। তখনো আমাদের যুদ্ধ চলমান ছিল। সেখানে আলিফ আহমেদ সিয়াম ও শ্রাবণ গাজীকে শহীদ করা হয়। সর্বশেষ আমরা গণভবনে পৌঁছাই। যুক্ত হই বহুল কাঙ্ক্ষিত স্বৈরাচার পতনের ইতিহাসে।

আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কেমন ভূমিকা ছিল?

সিয়াম: স্বৈরাচার বিরোধী শিক্ষকরা আমাদের আন্দোলনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলেন। তারা আমাদের সাথে মাঠ পর্যায়ে আন্দোলন করেছেন। আমাদের আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে নানাভাবে সহযোগিতা করেন। আমরা যখন গ্রেফতার আতঙ্কে রাতে হলে অবস্থান করতে পারতাম না তখন অনেক শিক্ষক আমাদের তাদের বাসায় আশ্রয় দিয়েছে। তারা প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে মুখে লাল কাপড় বেঁধে পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করেন।

আমাদের বাংলা বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শামীমা সুলতানা তখনকার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছবি তার অফিস থেকে নামিয়ে ফেলেন। এটি সারাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করে। সর্বশেষ ৫ আগস্ট গণভবন অভিমুখী পদযাত্রায়ও শিক্ষকরা জীবনের ঝুঁকি নিয়ে আমাদের মিছিলের সামনে অবস্থান করেছিলেন। এভাবে শিক্ষকরা আমাদের আন্দোলনের অন্যতম অংশীদার হয়েছিলেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ভূমিকা কেমন ছিল?

সিয়াম: যদিও স্বৈরাচার বিরোধী শিক্ষকের সংখ্যা ছিল খুবই কম। তবুও তারা সর্বোতভাবে আমাদের পাশে ছিলেন। তবে বিগত ১৫ বছরে নিয়োগপ্রাপ্ত অধিকাংশ শিক্ষকই স্বৈরাচারের দোসর ছিলেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে এরকম শিক্ষকের সংখ্যাই বেশি ছিল। তারা বলতে গেলে আমাদের আন্দোলনের বিপক্ষেই অবস্থান নিয়েছিলেন। তৎকালীন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরোটাই গঠিত হয়েছিলো আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের নিয়ে। তারা আমাদের আন্দোলন দমন করতে নানা পদক্ষেপ নিয়েছিলেন। তারা শিক্ষকতার বাইরে গিয়ে দলীয় কর্মীর মত আচরণ করেছিলেন। সর্বশেষ আমাদের ওপর ছাত্রলীগ নেতাকর্মী ও পুলিশ কর্তৃক হামলায় এ শিক্ষকরাই মদদ দিয়েছিলেন।

তবে আমরা এখনো সেসব শিক্ষকের বিরুদ্ধে তেমন কোন ব্যবস্থা নিতে দেখিনি। তারা ক্লাসে শিক্ষাদান কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। যদিও তারা শিক্ষক হিসেবে তাদের গ্রহণযোগ্যতা হারিয়েছেন। আমরা গণঅভ্যুত্থানের সময় ছাত্রদের ওপর নিপীড়নে জড়িত সকল আওয়ামী শিক্ষকদের যথাযথ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানাই।

আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকদের ভূমিকা কেমন ছিল?

সিয়াম: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের সাংবাদিকরা গণঅভ্যুত্থানের অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। তারা পেশাদারিত্বের ঊর্ধ্বে গিয়ে অ্যাক্টিভিস্ট হিসেবে ভূমিকা পালন করতো। আমরা তাদের মাধ্যমেই সকল খবর পেতাম। আমাদের বিরোধী শক্তির অবস্থান, গতি প্রকৃতি এসব আমরা সাংবাদিকদের মাধ্যমে জানতাম। এমনকি যখন সারাদেশে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেওয়া হলো, তখন ফোনে এসএমএসের মাধ্যমে সাংবাদিকরা আমাদের সকল তথ্য পাঠাতেন। আমরা সে অনুযায়ী আন্দোলনের পরিকল্পনা ঠিক করতাম। তারা নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়েই আন্দোলনে সর্বোতভাবে সহযোগিতা করেছিলো।

আন্দোলনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকা কেমন ছিল?

সিয়াম: আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পুরোটাই ছিল আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের দখলে। তারা শিক্ষকতার চেয়ে দলীয় চাওয়াকেই বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। আমাদের ওপর ছাত্রলীগের হামলার কোন বিচার করেননি। ১৫ জুলাই রাতে আমরা হামলা থেকে বাঁচতে উপাচার্য ভবনে আশ্রয় নিলেও প্রশাসন আমাদের কোন নিরাপত্তা দেয়নি। উল্টো ছাত্রলীগ দিয়ে আমাদের ওপর হামলা করিয়েছে।

১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনই পুলিশ বাহিনী ডেকে এনে আমাদের ওপর হামলা চালায়। সে নৃশংস পুলিশি হামলায় আমাদের অনেক শিক্ষার্থী আহত হয়েছিল, যার ক্ষত এখনো বয়ে বেড়াতে হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আমাদের সাথে অভিভাবকসুলভ নয়, দলীয় কর্মীর মত আচরণ করেছে।

পুলিশ প্রশাসনও রাষ্ট্রীয় পেটুয়া বাহিনীর ভূমিকায় ছিল। ১৫ জুলাই রাতে যখন ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা করেছিল তখন পুলিশ সামনে দাঁড়ানো ছিল, তবুও তারা কোন পদক্ষেপ নেয়নি। তার পরেই যখন হাজার হাজার সাধারণ শিক্ষার্থী আমাদের রক্ষা করতে ছুটে এলো, পুলিশ তাদের ওপর গুলি চালিয়েছিল। পরবর্তী সময়েও পুলিশ আমাদের সকল আন্দোলনে নৃশংস হামলা চালাতো। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ দিয়ে প্রতিরোধের চেষ্টা করতাম।

ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ কর্মসূচি কীভাবে সফল করতেন?

সিয়াম: ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধ আমাদের কর্মসূচির অন্যতম অংশ ছিল। এই মহাসড়ক ঢাকা ও উত্তরবঙ্গের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম হওয়ায় এটি অবরোধ করলে কেন্দ্রীয়ভাবে সেটার প্রভাব পড়তো। তাই আমরা ঝুঁকি নিয়ে হলেও এটা করতাম।

এতে রাস্তায় চলাচলকারী সাধারণ মানুষের কিছুটা দুর্ভোগ হতো, তবে স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে প্রায় সকল মানুষই অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। তারা স্বৈরাচারের পতনকে ত্বরান্বিত করতে কিছুটা দুর্ভোগ হাসিমুখে মেনে নিতো। অবশ্য আমরা সবসময় একটা ইমার্জেন্সি লেন রাখতাম। রোগীর অ্যাম্বুলেন্স ও জরুরি চলাচলের জন্য ইমার্জেন্সি লেন ব্যবহার করাতাম।

স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনসমূহের নেতাকর্মীদের সাথে সংঘর্ষ হয়েছিল কি?

সিয়াম: আমাদের আন্দোলন ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক হওয়ায় মূল সংঘাতগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রলীগের সাথেই হয়েছিল। তবে আন্দোলন যেহেতু দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়েছিলো তখন এটা আর ক্যাম্পাসে সীমাবদ্ধ ছিল না। সাভার এলাকায় আন্দোলনে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের সন্ত্রাসীরা হামলা করতো। তখন আমরা ক্যাম্পাসে সামনে গিয়ে সেটা প্রতিরোধ করতাম। এরই মধ্যে একদিন সাভারের এমপি সাইফুল ইসলামের সন্ত্রাসী বাহিনীর সাথে ডেইরী গেইটে সরাসরি সংঘর্ষ হয়েছিলো। তারা সাভার এলাকায় আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করে ফিরে আসার সময় আমরা তাদের প্রতিরোধ করি। সেদিন অনেকে হতাহত হয়েছিলো। তবে আমরা তাদেরকে প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়েছিলাম।

আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আপনি কি ধরনের হুমকির সম্মুখীন হয়েছেন?

সিয়াম: শুধু আমি নই, আন্দোলন চলাকালীন সময়ে আন্দোলনে যুক্ত সকলেই নানাভাবে হুমকির মুখে পড়েছিল। অনেকের গ্রামের বাড়িতে পুলিশ অভিযান চালিয়েছিল। আমাদের ক্যাম্পাসের অন্যতম সমন্বয়ক আরিফ সোহেলকে ডিবি পুলিশ গুম করেছিল।

ব্যক্তিগতভাবে আমাকেও নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা নজরদারিতে রেখেছিল। আমার শেরপুরের বাসায় পুলিশ গিয়েছিল। স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকজন আমার পরিবারকে নানাভাবে হেয় করতো।

বিশ্ববিদ্যালয় ও রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে গণঅভ্যুত্থানের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষার বাস্তবায়ন হয়েছে কী?

সিয়াম: অনেক আশা প্রত্যাশা নিয়ে আমরা স্বৈরাচার মুক্ত বাংলাদেশ গড়তে লড়াই করেছিলাম। তবে এখনো আমরা পুরোপুরি সে আশার প্রতিফলন দেখতে পাইনি। বিশ্ববিদ্যালয়ে গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী নতুন প্রশাসন এসেছে। এখনো আমাদের ওপর হামলার বিচার পুরোপুরি সম্পন্ন হয়নি। আওয়ামী দোসর শিক্ষকদের বিরুদ্ধে স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তারপরেও আগে যে একটা স্বৈরাচারের শৃঙ্খল আমাদের পরানো হয়েছিলো সেটা থেকে আমরা মুক্তি পেয়েছি। এটাই অন্তত প্রশান্তির বিষয়।

রাষ্ট্রীয় প্রেক্ষাপটেও আমাদের আশা আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন পুরোটা হয়নি। রাজনৈতিক সংস্কৃতির তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। প্রায় এক বছর হয়ে গেলো, বিভিন্ন সেক্টরে প্রয়োজনীয় সংস্কার সম্ভব হয়নি। আমরা সংস্কারের দ্রুত বাস্তবায়ন চাই।

স্বৈরাচার পরবর্তী নতুন বাংলাদেশে আপনার প্রত্যাশা কী?

সিয়াম: আমাদের আন্দোলন শুরু হয়েছিল বৈষম্যের বিরুদ্ধে। যে বৈষম্যের বিরুদ্ধে আমরা আন্দোলন করেছিলাম সে বৈষম্যবিহীন বাংলাদেশ বিনির্মাণই আমার মূল প্রত্যাশা। আমি চাই এদেশের চিরাচরিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন আসবে। ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার যে প্রয়াস সেটা আর থাকবে না। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা একক জায়গায় সীমাবদ্ধ থাকবে না। আমরা সুশৃঙ্খল ও যথাযথ পদ্ধতিতে পরিচালিত জনমানুষের কল্যাণকর একটি রাষ্ট্র ব্যবস্থাই কামনা করি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জুলাই গণ-অভ্যুত্থান স্মরণে তরুণদের অংশগ্রহণে আইডিয়া প্রতিযোগিতা
অপারেশন ঈগল হান্ট মামলায় সাবেক এসপি আসাদ দুই দিনের রিমান্ডে
সাবেক গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রীর এপিএস রাশেদ গ্রেফতার
ট্রাম্পের বিতর্কিত ট্যাক্স বিল পাসে চূড়ান্ত ভোটাভুটি হতে যাচ্ছে
আইজিপির সাথে ইউনেস্কো প্রতিনিধির সাক্ষাৎ
ঢাকায় জাতিসংঘ মানবাধিকার অফিস স্থাপনের আলোচনা চলছে : তৌহিদ
জোতার মৃত্যুতে রোনালদো-নাদালের শোক
ঢাবিতে আন্তঃহল সাঁতার ও ওয়াটারপোলো প্রতিযোগিতা শুরু
‘এটা কোনো জীবন নয়’: গাজা সিটিতে স্কুল-আশ্রয়ে ইসরাইলি হামলা
বিয়ের ১০ দিন পর গাড়ি দুর্ঘটনায় নিহত জোতা
১০