শেখ হাসিনার বক্তব্যে সিলেটে ক্ষোভ-উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে, শাবিতে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা করে ছাত্রলীগ

বাসস
প্রকাশ: ১৪ জুলাই ২০২৫, ২১:০৯ আপডেট: : ১৪ জুলাই ২০২৫, ২২:০০
১৪ জুলাই ২০২৪, দিবাগত রাত ১টার দিকে শাবিপ্রবিতে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীরা বিক্ষোভ করেন। ছবি: বাসস

সিলেট, ১৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): গত বছরের জুলাইয়ের মাঝামাঝিতে সিলেটে কোটা সংস্কার আন্দোলন তীব্র গতি পায়। বিশেষ করে ১৪ জুলাই চীন থেকে ফিরে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের নাতিপুতি’ আখ্যা দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মাঝে ক্ষোভ ও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

রাত ১১টার দিকে হঠাৎ সৈয়দ মুজতবা আলী হল থেকে শুরু হয় ‘তুমি কে, আমি কে  রাজাকার, রাজাকার’ স্লোগান। মাত্র কয়েকজন শিক্ষার্থীর শুরু করা প্রতিবাদ মিছিল ছড়িয়ে পড়ে বঙ্গবন্ধু হল, শাহপরাণ হলসহ অন্যান্য আবাসিক হলে।

সে সময় আন্দোলনকারী শাবির লোক প্রশাসনের শিক্ষার্থী আলতাফুর রহমান তাসনিম জানান, মুজতবা আলী হল থেকে ছাত্রদের মিছিল বের হলে শাহপরাণ হলে অবস্থান নেওয়া ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা তা প্রতিরোধে নামে। এই সময় স্লোগান দেওয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর ওপর চড়াও হয় তারা। খবর পেয়ে ঘটনার ১৫ মিনিট পর প্রধান ফটক থেকে আন্দোলনকারী অন্য শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে। তারা ছাত্রীদের হলের সামনে গিয়ে স্লোগান দিলে শতাধিক ছাত্রী মধ্যরাতে হল থেকে বের হয়ে প্রতিবাদ মিছিলে অংশ নেয়। মিছিলে নারী শিক্ষার্থীদের সরব উপস্থিতি আন্দোলনকারীদের মনোবল আরও দৃঢ় করে তোলে।

একপর্যায়ে ক্যাম্পাসে প্রবল বৃষ্টির মধ্যেও মিছিলকারীরা কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে গিয়ে সমবেত হয়। এই সময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ফের মিছিলে হামলা চালালে দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে আন্দোলনকারী বেশ কয়েক জন আহত হন।
এরপরই আন্দোলনকারীরা ছাত্রলীগের বাধা ভেঙে এগিয়ে যায় এবং ‘ভাই তুমি বেরিয়ে পড়ো, নিজ অধিকার আদায় করো’—এই স্লোগান দিয়ে ছাত্রদের হল থেকে মিছিলে আহ্বান জানাতে থাকে। ছাত্রী হল থেকেও শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণ দেখে সাহস পায় আন্দোলনকারীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে গত এক দশকে ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে এমন সম্মিলিত প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলার ঘটনা ছিল নজিরবিহীন।

পরদিন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগের হামলার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন এবং হামলাকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।

১৪ জুলাই শাবি ক্যাম্পাস ছাড়াও সিলেট শহরে আন্দোলনে নতুন মাত্রা যোগ হয়। দুপুরে সিলেট জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির বরাবর স্মারকলিপি দেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। স্মারকলিপিতে সরকারি চাকরিতে ৯৫ শতাংশ মেধার ভিত্তিতে নিয়োগ নিশ্চিত এবং সর্বোচ্চ ৫ শতাংশ অনগ্রসর ও প্রতিবন্ধীদের জন্য কোটা সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়।

সন্ধ্যার পর সিলেট নগরের চৌহাট্টার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার থেকে মশাল মিছিল বের করা হয়। যার ফলে ক্যাম্পাস কেন্দ্রিক আন্দোলন সারা শহরে ছড়িয়ে যায়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
দুই হাজার ড্রোনের প্রদর্শনীতে শেষ হলো ১৪ জুলাই উইমেন্স ডে
ঢাকা জেলা পরিষদের বাস্তবায়নাধীন ভবনের নথি গায়েব : দুদকের অভিযান
‘আমরা জুলাই বিক্রি করি না, কাউকে বিক্রি করতেও দেবো না’
নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে অর্থমন্ত্রীর নাম প্রস্তাব করলেন জেলেনস্কি
বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে মিশরীয় উদ্যোক্তাদের আমন্ত্রণ জানালেন উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসান
মানিলন্ডারিং মামলায় বিএসবি গ্লোবালের কর্ণধার খায়রুল বাশার গ্রেফতার
বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরো জোরদারে আগ্রহী সৌদি আরব  
জয় ও পুতুলের নথি চেয়ে এনবিআরকে চিঠি দিল দুদক
সবুজ জ্বালানিতে চীনের সঙ্গে ‘ন্যায্য প্রতিযোগিতা’ চায় ইউরোপীয় ইউনিয়ন
এইচপি ও ডেভলপমেন্ট কর্মকর্তাদের সাথে আলোচনা করেছেন বিসিবি সভাপতি
১০