আমার শহরে জুলাই অভ্যুত্থান

সিলেটে মার্চ ফর জাস্টিস র‌্যালিতে পুলিশের হামলা

বাসস
প্রকাশ: ৩১ জুলাই ২০২৫, ২২:২১
ছবি : বাসস

সিলেট, ৩১ জুলাই ২০২৫ (বাসস) : জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে ২০২৪ সালের ৩১ তারিখে ছাত্র হত্যা, গণগ্রেপ্তার, হামলা, মামলা গুম-খুনের প্রতিবাদে ও জাতিসংঘের অধীনে তদন্ত ও বিচারের দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন দেশব্যাপী মার্চ ফর জাস্টিস কর্মসূচি পালন করে। সিলেটে এই কর্মসূচি পালনকালে র‌্যালিতে হামলা চালায় পুলিশ। সেদিন বিকেলে পুলিশের নির্বিচারে গুলি ও গণহত্যার প্রতিবাদে সিলেটে গণমিছিল করেন সংস্কৃতিকর্মী ও সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ। এর আগে দুপুরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংহতি জানিয়ে র‌্যালি ও সমাবেশ করেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) শিক্ষকবৃন্দ। 

এদিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে শাবিপ্রবির শিক্ষকদের একাংশ ‘নিপীড়ন বিরোধী শিক্ষকবৃন্দ’ ব্যানারে ক্যাম্পাসের চেতনা একাত্তরের সামনে সমবেত হয়ে মিছিল নিয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রধান ফটকে পৌঁছান। র‌্যালিতে অন্তত ৫০ জন শিক্ষক অংশ নেন।

সেখানে র‌্যালি পরবর্তী সমাবেশে রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ রেজাউল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক হিসেবে আমি লজ্জিত, আমার মনে হচ্ছে যে, শিক্ষার্থীরা মারা গেছে, তাদের মৃত্যুর সংবাদ শোনার আগে আমার কেন মৃত্যু হলো না।’

সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন, রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক আবু হাসনাত, গণিত বিভাগের অধ্যাপক সাজেদুল করিম, পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক নজরুল ইসলাম, ইংরেজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক রাজইক মিয়া।

 

আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা জানান, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ পালনে ৩১ জুলাই সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক শহীদ রুদ্র তোরণের সামনে জড়ো হতে থাকেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এই সময় পুলিশ আটকে দেওয়ার চেষ্টা করলে বাঁধা উপেক্ষা করে তারা প্রধান ফটকে অবস্থান নেন।

দুপুর গড়ানোর আগেই  ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ এ অংশ নিতে শিক্ষার্থীদের ভিড় ক্রমেই বাড়তে থাকে। বিশ্ববিদ্যালয় ফটক থেকে নগরের বন্দরবাজার কোর্ট পয়েন্ট অভিমুখে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। উদ্দেশ্য ছিল নগরবাসীকে ছাত্রদের দাবির সাথে সম্পৃক্ত করা।

দুপুর ১২টার দিকে শিক্ষার্থীরা পদযাত্রা নিয়ে সিলেট নগর অভিমুখে ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ র‌্যালি শুরু করেন। শতাধিক শিক্ষার্থীর এই মিছিল বিশ্ববিদ্যালয় গেট থেকে পাঠানটুলা এলাকা অতিক্রম করার আগেই কয়েকশত বিক্ষোভকারীর বিশাল মিছিলে পরিণত হয়।

মিছিলটি সুবিদবাজার মোড়ে পৌঁছালে পুলিশ রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে বাঁধা দেয়। এই নিয়ে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের বাকবিতণ্ডা হয়। এক পর্যায়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে পদযাত্রাটি সামনে অগ্রসর হতে থাকে। ঠিক তখন পেছন থেকে সাউন্ড গ্রেনেড ও কাঁদানো গ্যাস ছুড়ে পুলিশ। এতে ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় শিক্ষার্থীরা, আহত হন কমপক্ষে ৩০ জন।

ওই দিন বিকেলে নির্বিচারে হত্যার প্রতিবাদে নগরে গণমিছিল অনুষ্ঠিত হয়। সিলেটের নাট্যসংগঠন নগরনাট, দুষ্কাল প্রতিরোধে আমরা ও সংক্ষুব্ধ নাগরিক আন্দোলন। বিকেল চারটায় নগরের চৌহাট্টাস্থ কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণ থেকে গণমিছিল শুরু হয়ে নগরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে প্রতিবাদী গান ও স্লোগানের মধ্য দিয়ে ফের শহীদ মিনারে পৌঁছায়।

পরে, শহীদ মিনারে সমাবেশে বক্তব্য দেন সিলেট জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এমাদুল্লাহ শহীদুল ইসলামসহ শিক্ষক, চিকিৎসক, রাজনীতিক, সংস্কৃতিকর্মী, সাংবাদিক, আইনজীবী ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা বক্তব্য দেন। তারা দেশব্যাপী গণহারে গুলি করে মানুষ হত্যা বন্ধের দাবি জানান।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
ট্রাম্পের শুল্কনীতি: কী পরিবর্তন, কারা ক্ষতিগ্রস্ত
ভারতের শিশু হোমে আটক থাকা দুই কিশোর দেশে ফিরেছে
শহীদের আত্মত্যাগ আগামী দিনের দেশ গড়ার প্রেরণা : ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু
নাটোরে পাঁচ দিনব্যাপী ভ্রাম্যমাণ বইমেলা শুরু
পিআর পদ্ধতির দাবি নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্র: সালাউদ্দিন টুকু
পটুয়াখালীতে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু
যুক্তরাষ্ট্রের ১৯ শতাংশ শুল্ককে ‘সর্বোত্তম সুখবর’ বললেন কম্বোডিয়ার প্রধানমন্ত্রী
সাতক্ষীরায় মাটির সুরক্ষা ও সুষম সার বিষয়ে কৃষক সমাবেশ 
জুলাই শহীদদের স্মরণে শাবিপ্রবিতে ‘রেইজ ফর জাস্টিস’ ম্যারাথন 
হাটহাজারী মাদ্রাসা পরিদর্শন করলেন বিএনপি নেতা নজরুল ও সালাহউদ্দিন
১০