/ শাহজাহান নবীন /
ঝিনাইদহ, ৪ আগস্ট ২০২৫ (বাসস) : ২০২৪' এর ৪ আগস্ট এক দফা ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। কারফিউ ভেঙে দেশজুড়ে বিক্ষোভের ঘোষণা আসে।
অসহযোগ আন্দোলনের ঘোষণার মধ্য দিয়ে ছাত্র জনতার কোটা সংস্কার আন্দোলন পরিণত হয় গণ-অভ্যুত্থানে। নির্বিচারে ছাত্র জনতার ওপর লাগাতার হত্যাকাণ্ড ও পুলিশি নির্যাতনের প্রতিবাদে ২৪ এর ৪ আগস্ট বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে ওঠে ঝিনাইদহ শহর।
এদিন সকাল থেকে শহরে বিপুল সংখ্যক পুলিশ ও বিজিবি মোতায়েন করে তৎকালীন আওয়ামী প্রশাসন। ঝিনাইদহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে বৃদ্ধি করা হয় গোয়েন্দা নজরদারি। শহরের মেস, ছাত্রাবাস, পাড়া মহল্লায় আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা তল্লাশি শুরু করে।
আন্দোলনকারী ছাত্র-জনতাও সংঘবদ্ধ হয়ে ৪ আগস্ট সকালে ঝিনাইদহ শহরের বাস টার্মিনাল থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে। আরেকটি মিছিল বের হয় ঝিনাইদহ সিদ্দিকীয়া আলিয়া মাদ্রাসার সামনে থেকে। ছাত্র-জনতার দীর্ঘ ওই মিছিলে পুলিশ ও ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মীরা হামলা চালায়। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে তুমুল সংঘর্ষ বাধে।
এতে আহত হন অন্তত ৬ জন।
একই দিন দুপুরে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বর দখলে নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে ছাত্র জনতা। সেখানেও পুলিশ ও ছাত্রলীগ হামলা চালায়। পুলিশের রাবার বুলেটে গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ১৪ জন শিক্ষার্থী। পরে তারা ছত্রভঙ্গ হয়ে কর্মসূচি শেষ করে।
বিকাল ৫টার দিকে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের কর্মীরা শহরজুড়ে সশস্ত্র মহড়া দেয়। এক পর্যায়ে জেলা বিএনপি কার্যালয়ে আগুন দেয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। এসময় জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এমএ মজিদের বাসভবনেও হামলা চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দেয় তারা। এতে শহর ও জেলা জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের হাতে আটক হন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের বেশ কয়েকজন নেতাকর্মী।
আন্দোলনকারীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত বছরের ৪ আগস্ট আওয়ামী লীগের সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা মরণকামড় দিতে মাঠে নামে। সারাদেশেই বর্বরোচিত হামলা চালায় আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। বিএনপিসহ সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের বাসা বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও ক্ষয়ক্ষতি করে আওয়ামী লীগের কর্মীরা।