।। শরিফুল ইসলাম।।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ, ৪ আগস্ট, ২০২৫ (বাসস): শেখ হাসিনার সরকারের পদত্যাগের ১ দফা দাবিতে চব্বিশের ৪ আগস্ট মিছিল আর স্লোগানে উত্তাল ছিল চাঁপাইনবাবগঞ্জের রাজপথ। সেদিন জেলা জুড়ে বিক্ষোভ মিছিল করেছিলেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে অনেক অভিভাবক যোগ দিয়েছিলেন সেদিন। তাদের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠেছিল জেলা শহরসহ পাঁচ উপজেলা শহর।
৪ আগস্ট রোববার সকাল থেকেই খণ্ড খণ্ড মিছিল বের হতে দেখা যায় জেলাজুড়ে। সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে আন্দোলনকারীদের উপস্থিতি। দুপুরের পর জনস্রোতে রূপ নেয় মিছিলগুলো। এ সময় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের জেলা ও উপজেলার সমন্বয়করা উপস্থিত ছিলেন।
রাজপথে তারা স্লোগান দিতে থাকেন। এতে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা একাত্মতা ঘোষণা করেন এবং তাদের নেতা-কর্মীদেরও রাজপথে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল।
শিক্ষার্থীদের কোটা সংস্কারের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা করে হত্যার প্রতিবাদে ১ দফা দাবিতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সেদিন বিক্ষোভ মিছিল হয়। মিছিল শেষে জেলার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশ করেন আন্দোলনে অংশগ্রহণ করা ছাত্র-জনতা।
‘আমার ভাই কবরে, খুনি কেন বাহিরে,’ ‘জাস্টিস জাস্টিস উই ওয়ান্ট জাস্টিস,’ ‘দিয়েছি তো রক্ত, আরও দেবো রক্ত’, ‘স্বৈরাচারের গদিতে আগুন জ্বালো একসাথে,’ ‘জ্বালোরে জ্বালো, আগুন জ্বালো,’ ‘বুকের ভেতর অনেক ঝড়, বুক পেতেছি গুলি কর,’ ‘লেগেছেরে লেগেছে রক্তে আগুন লেগেছে’ ইত্যাদি স্লোগান দেওয়া হয় প্রতিবাদ সমাবেশেও।
এদিকে মোড়ে মোড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে ছিল সেদিন। তবে আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা রাজপথে থাকার ঘোষণা দিলেও তাদের মাঠে দেখা যায়নি।
৪ আগস্টের বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীরা বলেছিলেন, কোটা সংস্কারের দাবিতে শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করছিলেন তারা। কিন্তু সেখানে কোনো প্রকার উস্কানি ছাড়াই হামলা চালায় ছাত্রলীগ। পরে হাসিনার নির্দেশে পুলিশ তাদের আন্দোলন দমানোর জন্য গুলি চালিয়ে নির্বিচারভাবে হত্যা করে অসংখ্য সাধারণ শিক্ষার্থী ও মানুষকে।
বিক্ষোভে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, কী দোষ ছিল আমার ভাই সাঈদের, কী দোষ ছিল মুগ্ধের। কী-ই বা দোষে এতগুলো শিশু ও নিরীহ মানুষ মরলো! কেন নির্মমভাবে তাদের হত্যা করা হলো। আমরা এই প্রতিটি হত্যার বিচার চাই এবং এই ফ্যাসিস্ট সরকারে পদত্যাগ চাই।