ঢাকা, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস): ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংক (ইউসিবি) পিএলসি থেকে মিথ্যা তথ্য দিয়ে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ২০ কোটি টাকার ঋণ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী ও তার স্ত্রী রুকমীলা জামানসহ ২৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
আজ দুদকের উপ-পরিচালক মো. মাহফুজ ইকবাল বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। দুদকের নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে মহাপরিচালক আক্তার হোসেন এ তথ্য জানিয়েছেন।
অভিযোগে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে ‘ইমিনেন্ট ট্রেডার্স’ নামের একটি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পরিকল্পিতভাবে ২০ কোটি টাকার ঋণ গ্রহণ করা হয়। পরে সেই অর্থ ‘ইম্পেরিয়াল ট্রেডিং’, ‘ক্লাসিক ট্রেডিং’ ও ‘মডেল ট্রেডিং’ নামে আরও তিনটি কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঘুরিয়ে ‘আরামিট সিমেন্ট লিমিটেড’-এর ঋণ পরিশোধে ব্যবহৃত হয়।
দুদকের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে, ইউসিবি’র সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা যথাযথ যাচাই-বাছাই না করেই ঋণটি অনুমোদন করেন। কর্পোরেট ব্যাংকিং ডিভিশনের আপত্তি উপেক্ষা করে ব্যাংকের বোর্ড অব ডিরেক্টরস ঋণ অনুমোদন দেন। ২০২০ সালের ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারি ২৩টি পে-অর্ডারের মাধ্যমে এ অর্থ ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেডে জমা দেওয়া হয়।
বর্তমানে মূলধন ও সুদ মিলিয়ে মোট ৩২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা বকেয়া রয়েছে, যা আত্মসাৎ বা বিদেশে পাচারের অভিযোগ উঠেছে।
মামলার অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন—সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী, তার স্ত্রী ইউসিবি’র সাবেক চেয়ারম্যান রুকমীলা জামান, ইউসিবি’র সাবেক পরিচালক শাহ আলম, বজল আহমেদ বাবুল, রোকসানা জামান চৌধুরী, শওকত জামিলসহ আরও অনেকে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট কাগুজে প্রতিষ্ঠানের মালিক ও ইউসিবি’র খাতুনগঞ্জ শাখার কর্মকর্তাদেরও মামলায় অভিযুক্ত করা হয়েছে।
মামলায় দণ্ডবিধির ৪০৯, ৪২০ ও ১০৯ ধারা, মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারা এবং দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন, ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারা প্রয়োগ করা হয়েছে।
দুদক জানিয়েছে, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থার প্রক্রিয়া চলমান। তদন্তকালে অন্য কারো সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরকেও আইন আমলে নেয়া হবে।