সাবেক মেয়রের প্ররোচণা: বাহিরচাপড়া গ্রামের নাম এখন ময়লাকান্দা

বাসস
প্রকাশ: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১৯:২৮
নেত্রকোনা পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাহিরচাপড়া গ্রামে ময়লার স্তুপ। ছবি: বাসস

// তানভীর হায়াত খান //

নেত্রকোনা, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): সাবেক পৌর মেয়র আওয়ামীলীগ নেতা নজরুল ইসলাম খানের মিথ্যাচারে জেলার পৌর এলাকার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের শান্ত সুনিবিড় বাহিরচাপড়া গ্রামটি এখন ময়লাকান্দা নামে পরিচিতি পেয়েছে।

এই গ্রামে ২০১৯ সালে শুরু হয় স্যানিটারি ল্যান্ড ফিলের কাজ। কিন্তু নির্মাণকাজ শেষ না করেই এর উদ্বোধন করেন সাবেক পৌর মেয়র। মূলত নিজ বাসার পাশে রেল মন্ত্রণালয়ের জায়গায় ছিল পৌর শহরের ময়লা আবর্জনা রাখার স্থান। তবে  নিজ বাসার পাশ থেকে ময়লা আবর্জনার জঞ্জাল দূর করতে সেখানে নামেমাত্র একটি শিশুপার্ক তৈরি করেন সাবেক ওই মেয়র। আর মিথ্যা আশ্বাস দিয়ে ময়লা রাখার জন্য নতুন স্থান নির্ধারন করেন বাহিরচাপড়া গ্রামকে।

আবর্জনা প্রক্রিয়াজাতকরণের প্রয়োজনীয় যন্ত্রাংশ স্থাপন না করেই সেখানে উদ্বোধন করা হয় স্যানিটারি ল্যান্ড ফিল। এতে আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে ল্যান্ড ফিলটির আশপাশ।  

যা এখন এলাকাবাসীর দূর্ভোগের প্রধান কারণে পরিণত হয়েছে। দুর্গন্ধ আর আবর্জনা পোড়ানোর ধোঁয়ায় সৃষ্ট বায়ুদূষণে অতিষ্ঠ এলাকাবাসী।  যদিও পৌর কর্তৃপক্ষ বলছে, ল্যান্ড ফিলটিকে কার্যকরী করতে যোগাযোগ করা হচ্ছে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের  সঙ্গে।

জানা গেছে , জেলার সকল বর্জ্য একস্থানে নিয়ে প্রক্রিয়াজাতকরণের মাধ্যমে সার উৎপাদন করার কথা জানিয়েছিলেন তৎকালীন পৌর মেয়র নজরুল ইসলাম। এতে আবর্জনা থেকে উৎপন্ন সার বিক্রি করে অর্থ আয়ের আশ্বাস দিয়েছিলেন তিনি।

তবে এখন দেখা যাচ্ছে এর উল্টোচিত্র। আবর্জনা ফেলা হচ্ছে ল্যান্ড ফিলটির আশপাশের ফসলি জমি ও লোকালয়ে। ফলে বায়ুদূষণ আর দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। মশা, মাছিতে ভনভন করছে পুরো এলাকা। ইতোমধ্যে আবর্জনায় ভরাট হয়ে গেছে স্যানিটারি ল্যান্ড ফিলটির আশপাশের প্রায় সব জমি।        

সাবেক মেয়রের ঘোষণা অনুযায়ী বাহিরচাপড়া এলাকার তিন দশমিক শূন্য পাঁচ একর জায়গায় ৬ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ে ল্যান্ড ফিলটির অবকাঠামো নির্মাণের কথা ছিল পৌরসভার। কিন্তু প্রকল্পের কাজ শেষ না করেই ২০২৪ সালের এপ্রিলে অনেকটা ঢাকঢোল পিটিয়েই স্যানিটারী ল্যান্ড ফিলটি উদ্বোধন করেন নজরুল ইসলাম।

স্থানীয়রা জানায়, তাদের কোন আত্মীয়স্বজন এখানে আসতে চায় না। একসময় জমির ভালো দাম থাকলেও আবর্জনা ফেলার পর থেকে জায়গাটির নাম হয়ে গেছে ময়লাকান্দা, তাই কেউ জমি কিনতে আসেন না। বাচ্চাদের পড়াশোনা করানোর জন্যে ভালো গৃহশিক্ষক এই এলাকায় আসতে চান না। শিশু থেকে বৃদ্ধ সকলের শ্বাসকষ্ট জনিত নানা রোগে আক্রান্ত। স্থানীয় বাসিন্দাদের মাঝে দেখা দিয়েছে চর্মরোগের প্রাদুর্ভাব।  

শুরুতেই এলাকাবাসী এটির বিরোধীতা করেছিল। কিন্তু নানা ধরনের সুবিধার কথা বলে ল্যান্ডফিলটি স্থাপন করেন তৎকালণীন পৌরমেয়র।  শেষ পর্যন্ত স্থানীয়দের ধোকা দিয়ে, বোকা বানিয়ে প্রকল্পের টাকা আত্মসাৎ করেছেন নজরুল ইসলাম।

স্যানিটারি ল্যান্ড ফিলটিতে আবর্জনা প্রক্রিয়াজাতকরণের যন্ত্রপাতি না থাকার বিষয়টি স্বীকার করে পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হুমায়ূন কবির জানিয়েছেন, তারাও এখন অসহায়। তারপরও স্থাপনাটি কার্যকরী করতে ঊর্ধতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
কুমিল্লায় মাদকসহ কারবারি আটক
যুক্তরাষ্ট্রে জাপানি গাড়ির শুল্ক কমিয়ে ১৫ শতাংশে আনলেন ট্রাম্প
জাতীয় নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য দেড় লাখ পুলিশকে বিশেষ প্রশিক্ষণ
হিজবুল্লাহকে নিরস্ত্রীকরণে সেনাবাহিনীর পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা করবে লেবানন
ফেনীতে তথ্য কর্মকর্তাদের উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত
আফগানিস্তানে জরুরি ত্রাণ সহায়তা পাঠাল বাংলাদেশ সরকার
সুন্দরবনে কুমির নিয়ে গবেষণা 
ঈদ-ই-মিলাদুন্নবী শান্তিপূর্ণ উদযাপনে ব্যাপক নিরাপত্তা পরিকল্পনা
নাটোরে জুলাই শহীদ স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণকাজ সমাপ্ত
সারাদেশে দিন-রাতের তাপমাত্রা অপরিবর্তিত থাকার সম্ভাবনা 
১০