ঢাকা, ১ জুন ২০২৫ (বাসস): শিশুর মানসিক বিকাশ ঘটানো, শতভাগ ভর্তি নিশ্চিতকরণ, শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টির লক্ষ্যে ঢাকা মহানগরীতে আরো পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের দৃষ্টিনন্দন বহুতল ভবন উদ্বোধন করা হয়েছে।
রোববার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ডা. বিধান রঞ্জন রায় পোদ্দার উত্তরার আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে এসব ভবন উদ্বোধন করেন।
নান্দনিকভাবে নির্মিত পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনগুলো হলো- উত্তরার ‘আজমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন’, মিরপুর এক নম্বর সেকশনের ‘ওয়াক আপ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন’, মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের ‘খলিলুর রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন’, উত্তরার ‘ডিয়াবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন’ এবং গেন্ডারিয়ার ধুপখোলা মাঠ সংলগ্ন ‘কোব্বাদ সরদার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন’।
এ পাঁচটি ভবন নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ২৪ কোটি ৯৬ লাখ আট হাজার টাকা। পাঁচটি ভবনের মধ্যে ছয়তলা ভিতবিশিষ্ট চারটি চারতলা ভবন এবং একটি তিনতলা ভবন। এতে শ্রেণিকক্ষ ও শিক্ষক কক্ষ মিলে ৭৫টি কক্ষ রয়েছে। ওয়াস ব্লক রয়েছে ৮৯টি। বিদ্যালয়গুলোর নতুন ভবনে ছাত্র-ছাত্রীর মোট ধারণ ক্ষমতা ২ হাজার ৬৯৬ জন।
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আবু নূর মো. শামসুজ্জামানের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মো. মাসুদ রানা, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মাসুদ আক্তার খান, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রধান প্রকৌশলী মো. আব্দুর রশিদ ও প্রকল্প পরিচালক মো. সাইফুর রহমান।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা এর আগে ২০২৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর দৃষ্টিনন্দনভাবে নির্মিত আরও পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনের উদ্বোধন করেন। ভবনগুলো হলো- মিরপুর এক নম্বর সেকশনের মাজার রোড সংলগ্ন ‘লালকুঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন’, মিরপুর সাত নম্বর সেকশনের ‘আনন্দ নিকেতন সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন’, ঢাকার বাড্ডার আলাতুনন্নেসা হাই স্কুল সংলগ্ন ‘ভোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন’, ডেমরার কোনাপাড়া রোডের ‘পাড়াডগার মান্নান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন এবং গুলশানের মাস্টারবাড়ী বাজার-আটিপাড়া রোড সংলগ্ন ‘মুন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন’।
প্রাথমিক ও গণশিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, আমাদের সমাজের সন্তানদের শিক্ষা দেওয়ার জন্য প্রাথমিক স্কুল নির্মিত হচ্ছে। শিশুদের শিক্ষার জন্য শিক্ষক, অভিভাবক ও কমিউনিটির নেতৃবৃন্দের সক্রিয় অংশগ্রহণ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুরা শুধু বই পড়ে শেখে না, তারা স্কুলের পরিবেশ ও কর্মসূচি থেকেও শেখে। সবচেয়ে বেশি শেখে তারা অভিভাবকদের কাছ থেকে, কারণ তারা তাদের সঙ্গেই বেশি সময় কাটায়। তাই শিক্ষার মান উন্নয়নে শুধু ভালো ভবন হলেই হবে না, শিক্ষক ও অভিভাবকদের সক্রিয় সহযোগিতা প্রয়োজন।
তিনি বলেন, প্রাথমিক পাশ করার পর একজন শিশু সাবলীলভাবে মাতৃভাষায় পড়তে, বুঝতে ও লিখতে পারবে। যোগ, বিয়োগ, গুণ, ভাগ করতে পারবে-এটুকুই। এ লক্ষ্যে সকলকে একসাথে কাজ করার আহ্বান জানান।
উল্লেখ্য, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর ‘ঢাকা মহানগরী ও পূর্বাচলে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় স্থাপন ও অবকাঠামো উন্নয়নসহ দৃষ্টিনন্দনকরণ (১ম সংশোধিত)’ প্রকল্পের আওতায় ঢাকা মহানগরীর ১২টি থানায় ১৩২টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবন পুনঃনির্মাণ, ১০টি মেরামত এবং ১৪টি নতুন বিদ্যালয় ভবন (উত্তরাতে তিনটি ও পূর্বাচলে ১১টি) স্থাপন করা হবে। প্রকল্পের মেয়াদ জানুয়ারি ২০২০ হতে জুন ২০২৭ পর্যন্ত। এ প্রকল্পের মোট বরাদ্দ ১,৩৭২ কোটি ৮২ লাখ ৫৩ হাজার টাকা।
প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর এবং নির্মাণকারী সংস্থা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর।