রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল দুজনই জীবন ঘনিষ্ঠ কবি ছিলেন : শিক্ষা উপদেষ্টা

বাসস
প্রকাশ: ০৩ জুলাই ২০২৫, ২০:৫২
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার। ফাইল ছবি

ঢাকা, ৩ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. সি আর আবরার বলেছেন, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল দুজনই জীবনঘনিষ্ঠ কবি ছিলেন। জীবনঘনিষ্ঠ বলেই তাঁরা মানুষের কল্যাণ ও মনুষ্যত্বের বিকাশের কথা বলেছেন।

আজ বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমি মিলনায়তনে রবীন্দ্র-নজরুল জয়ন্তী উদ্‌যাপন উপলক্ষ্যে দৈশিক ও বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল পাঠ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপদেষ্টা এসব কথা বলেন।

উপদেষ্টা বলেন, মধ্যবিত্ত পরিবারে ছোটকাল থেকে বড় হয়েছি, রবীন্দ্রনাথ-নজরুল দুজনেই সেখানে ছিল। প্রতিটি মানুষের জীবনে সুখ, দুঃখ, আনন্দ, উল্লাস, ভালোলাগা, ভালবাসা, সমস্যা থাকতে পারে। কারো জীবন সংগ্রামী কিংবা স্বাচ্ছন্দ্যের হতে পারে। সাহিত্য, কবিতা ও সঙ্গীত আমাদের জীবনের এ বিষয়গুলো লাঘব করতে সহায়তা করে।

তিনি বলেন, মধ্যযুগের কবি বলেছেন, "সবার উপরে মানুষ সত্য" নজরুলের কণ্ঠেও শুনেছি, "মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই নহে কিছু মহীয়ান", রবীন্দ্রনাথ বঙ্গজননীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন, "মানুষ হইতে দাও তোমার সন্তানে"।

সি আর আবরার বলেন, বর্তমানে আমরা দৈশিক ও বৈশ্বিক পরিস্থিতির দিকে তাকালে দেখবো, মানুষ হিসেবে আমাদের যে কর্তব্য তা পালনে আমরা উদাসীন, নিষ্ক্রিয় ও ব্যর্থ।  একজনের প্রতি অন্যজনের মানবিক সহানুভূতি, সহমর্মিতা আজ বিলুপ্ত প্রায়। নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থে অপরকে নির্যাতিত ও নিপীড়িত করতে আমরা কুণ্ঠা বোধ করি না, দ্বিধান্বিত হই না। বিশ্বের চারিদিকে আজ রণ দামামা বেজে উঠেছে। এর ফলে লাঞ্ছিত হচ্ছে মানুষ, বিপন্ন হচ্ছে মানবতা। এই নৈরাজ্য  ও অমানবিক পরিবেশের বিরুদ্ধেই নজরুল রণ হুঙ্কার দিয়ে বলেছিলেন, "আমি সেই দিন হব শান্ত/যবে উৎপীড়িতের ক্রন্দন রোল আকাশে-বাতাসে ধ্বনিবে না"। রবীন্দ্রনাথ চরম বিপর্যয়ের মধ্যেও মানুষের কল্যাণ বোধের প্রতি আস্থা হারাতে চাননি; বলেছিলেন, "মানুষের ওপর বিশ্বাস হারানো পাপ "।

ড. আবরার বলেন, এই প্রসঙ্গে দার্শনিক উইল ডুরান্টের একটি কথা স্মরণ করি। জীবনের শেষ বয়সে তিনি বেশ কয়েক খণ্ডে লিখেছিলেন ‘দি স্টোরি অব সিভিলাইজেশন’। এই বইটি লেখার পর তিনি মানুষের ইতিহাস সম্পর্কে বলেছিলেন, "আমি যখনই মানুষের ইতিহাসের দিকে তাকিয়েছি, তখন মনে হয়েছে, এ যেন রক্তবাহী এক নদী। মানুষ পরস্পরের প্রতি নিষ্ঠুরতায়, ভ্রাতৃঘাতী সংঘাতে যে রক্ত ঝরিয়েছে তাই বয়ে নিয়ে চলেছে এই ভয়াবহ নদীর স্রোত। তা দেখে আমি বেদনায় বিষণ্ন হয়েছি। কিন্তু আমি যখন এই নদীর দুই তীরের দিকে তাকিয়েছি, তখন দেখলাম, সেখানে মানুষ কবিতার ছন্দে, গানের  সুরে, সমুন্নত ভাস্কর্যে জীবনের জয়গাথা রচনা করে চলেছে "।

তিনি বলেন, রবীন্দ্রনাথ ও নজরুল এই ভয়াবহ পৃথিবীতে জীবনের জয়গান গাইবার অনুপ্রেরণা দিয়েছেন আমাদের। এইজন্যই এই দুই কবি আমাদের জন্য প্রাসঙ্গিক। তাঁদের রচনার মানবিক আবেদনে উদ্বুদ্ধ হওয়ার জন্য তাঁদের পাঠ -অধ্যয়ন আমাদের জন্য আবশ্যিক।

অনুষ্ঠানে সম্মানিত আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. মোরশেদ শফিউল হাসান, প্রাবন্ধিক ও গবেষক,  অধ্যাপক মোহাম্মদ আজম, মহাপরিচালক, বাংলা একাডেমি এবং কুদরত-এ-হুদা, প্রাবন্ধিক ও গবেষক, পরিচালক, মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিসিএস প্রশাসন একাডেমির রেক্টর ড. মো: ওমর ফারুক।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
জনগণের রায় নিয়ে সরকার গঠন করলে মিলে-মিশে দেশ পরিচালনা করবে বিএনপি : তারেক রহমান 
প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন কার্যক্রম উদ্বোধন করতে কানাডা যাচ্ছেন সিইসি
যুক্তরাষ্ট্রের পাল্টা শুল্ক ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে : বাণিজ্য উপদেষ্টা
গত এক বছরে দেশের অর্থনৈতিক পারফরম্যান্স সন্তোষজনক : সালেহউদ্দিন
জবির মার্কেটিং বিভাগে আত্ম-উন্নয়নমূলক সেমিনার অনুষ্ঠিত
আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক মিশন প্রেরণ নিয়ে সিইসি সাথে আনফ্রেলের প্রতিনিধিদলের সাক্ষাৎ
ডেঙ্গুতে আরও একজনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৩৮২
এক বছরে ১৭৪৩ জনের বিরুদ্ধে দুদকের ৪৫২ মামলা
৫ দফা দাবিতে জবি ছাত্রদলের স্মারকলিপি
কুয়ালালামপুরে বাংলাদেশ দূতাবাসের নৈশভোজে যোগদান প্রধান উপদেষ্টার
১০