শিরোনাম
টাঙ্গাইল, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৫ (বাসস) : জেলার ঘাটাইল উপজেলায় পাহাড়ী অঞ্চলে মাটিখেকো ব্যবসয়ীরা রাতের অন্ধকারে ফসলি জমি ও পাহাড়ের লাল মাটি কাটছে। ফলে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে পাহাড় ও ফসলি জমি।
জানা গেছে, টাঙ্গাইলের ঘাটাইল উপজেলার পুর্বে এক তৃতীয়াংশ জুড়ে রয়েছে বিশাল পাহাড়ি বনাঞ্চল। এ সব এলাকায় প্রতিদিন রাতের অন্ধকারে মাটি খেকোরা এক্সকাভেটর (বেকু) দিয়ে পাহাড়ি লাল মাটি ও ফসলি জমি কেটে বাড়ি ঘর নির্মাণ থেকে শুরু করে ইট ভাটায় ব্যবহৃত হচ্ছে এ মাটি।
প্রশাসনের নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে প্রভাবশালীদের ছত্র ছায়ায় কিছু অসাধু মাটি খেকো ব্যবসায়ীরা ভেকু দিয়ে সন্ধানপুর ইউনিয়নে ফকিরবাড়ি, গিলাবড়ি, ধলাপাড়া বড় মেধা গ্রাম, হরিনাচালা, রসুলপুর ইউনিয়নে ঘোড়ার টেকি, দেওপাড়া ইউনিয়নের, সংগ্রামপুর ইউনিয়নে কাউটেনগর, কামারচার, বোয়ালীচালাসহ বিভিন্ন পয়েন্টে প্রায় প্রতিরাতেই চলছে এ তান্ডব।
মাটি খেকোরা ১০-১৫ ফুট গর্ত করে মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে, ট্রাক দিয়ে মাটি নেওয়ার সময় গ্রামীণ জনপথ এবং পাকা রাস্তা ভেঙ্গে যাচ্ছে, রাস্তার ধুলায় পাশে থাকা ফসলের মধ্যে প্রলেপ পড়ে যায়, শুধু তাই নয় ধুলা ঢুকে যাচ্ছে দোকান পাট বসত বাড়ির ঘরের ভেতর। ফলে রাস্তা ঘাটে খানা খন্দের সৃষ্টি হয় চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়ছে গ্রামীণ রাস্তা। যার কারনে দুর্ভোগ প্রহাতে হচ্ছে এলাকাবাসীর।
এলাকাবাসীর তথ্য মতে, উপজেলার ঝড়কা থেকে বিভিন্ন গ্রাম হয়ে টিলার কোল ঘেঁষে প্রায় ১০ কিলোমিটার পাকা সড়ক চলে গেছে দেওপাড়া বাজার পর্যন্ত। এ রাস্তার পাশেই ছিল ৫০ থেকে ৬০ ফুট উঁচু বেশ কিছু টিলা। গত দুই-তিন বছরে এ সব টিলা কেটে ন্যাড়া করে ফেলা হয়েছে। আর গত তিন বছরে উপজেলার দেওপাড়া, চেচুয়াপাড়া, ঘোড়ামারা, সিংহেরচালা, খাগড়াটা, বারইপাড়া, নলমা, কুশারিয়া, চেড়াভাঙ্গা, বগা, কাজলা, শালিয়াবহ, সরাবাড়ী ও বগা এলাকার টিলা কেটে ধ্বংস করা হয়েছে।
স্থানীয় এলাকাবাসী আরো জানান, এ উপজেলায় শতাধিক মাটি ব্যবসায়ী রয়েছেন। তারা দীর্ঘদিন যাবত পাহাড়ি এলাকার মাটি কেটে বিভিন্ন ইটভাটায় বিক্রি করছেন।
এ ব্যাপারে রসুলপুর ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. মর্তুজ আলী জানান, পাহাড়ের লাল মাটি ও ফসলি জমির মাটি কাটা সম্পূর্ণ অবৈধ। আইনে আছে কোনোভাবেই পাহাড়ের লাল মাটি কাটা যাবে না। লাল মাটি ও ফসলি জমি কাটা বন্ধে আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা কামনা করছি।
ঘাটাইল ধলাপাড়া বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা ওয়াদুদুর রহমান জানান, কেউ বন বিভাগের জমি থেকে লাল মাটি কাটলে আমরা অবগত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। মাটি খেকোদের বিরুদ্ধে এ অভিযান অব্যহত থাকবে।
ঘাটাইল উপজেলার সহকারি কমিশনার (ভুমি) সাবরিন আক্তার বাসস কে জানান, ইতোমধ্যে মাটি কাটার অপরাধে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বেশ কয়েকটি অভিযান পরিচালনা করে ৫টি বেকু থেকে ১০টি ব্যাটারি জব্দ করা হয়েছে।
অভিযোগ বা তথ্য পেলে অভিযান পরিচালনা করে মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।