পাবনা, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস): পুণ্য তালনবমী তিথিতে শ্রীশ্রীঠাকুর অনুকূলচন্দ্রের ১৩৮তম আবির্ভাব তিথি উপলক্ষে ভাগীরথী পদ্মায় দুই দিনব্যাপী পুণ্যস্নান মহোৎসব গতকাল শুরু হয়েছে।
প্রভাতে সমবেত প্রার্থনার মধ্য দিয়ে পাবনার হিমাইতপুর আশ্রম প্রাঙ্গণে গতকাল রবিবার (৩১ আগস্ট) এই উৎসবের শুভ সূচনা হয়। মহোৎসব উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে ভক্তবৃন্দ সমবেত হয়েছেন।
সন্ধ্যায় ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট পাবনা, সিরাজগঞ্জ ও বগুড়া জেলার ট্রাস্টি অ্যাডভোকেট ইন্দ্রজিৎ সাহা প্রদীপ প্রজ্বলনের মধ্য দিয়ে মহোৎসবের উদ্বোধন ঘোষণা করেন। পরে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পাবনা ইসলামীয়া মাদ্রাসা দারুল আমান ট্রাস্টের অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন।
সৎসঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি শ্রী প্রাণশঙ্কর দাস (স.প্র.ঋ.) এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন সৎসঙ্গ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক শ্রী তাপস চন্দ্র বর্মন (স.প্র.ঋ.)। ধর্মসভায় আলোচ্য বিষয় ছিল, ‘ইষ্ট-জীবন অনুকূল চেতনায়’।
ধর্মীয় আলোচ্য বিষয়ের উপর বক্তব্য রাখেন ঋত্বিক পরিষদ সচিব নিরঞ্জন দেবনাথ (স.প্র.ঋ), সদস্য অধ্যাপক মোহিত বিশ্বাস (স.প্র.ঋ), সুমন ঘোষ বাদসা প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কেন্দ্রীয় সৎসঙ্গের প্রচার সম্পাদক হিরন্ময় ঘোষ।
অধ্যক্ষ ইকবাল হোসেন প্রধান অতিথির বক্তব্যে বলেন, অনুকূল ঠাকুরের আশ্রম থেকে স্পষ্ট বলতে চাই মসজিদে যেমন আজান দেওয়া হবে, নামাজ হবে, তেমনি হিন্দুদের মন্দিরে উলুধ্বনি ধ্বনিত হবে। হিন্দুরা নিরাপদে পূজা পার্বণ করতে পারবে। একজন মানুষ যদি ভালো হয়, সে যদি তার ধর্ম ঠিকমতো পালন করে সেটা আমাদের দেশের জন্যই মঙ্গল। আমাদের দেশে সংখ্যালঘু আর সংখ্যাগুরু বলে কোনো কথা নেই।
এর আগে দুপুরে যুব সম্মেলনে সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশিষ্ট সমাজ সেবক মোসাব্বির হোসেন সঞ্জু, রাশেদুল রহমান রানা বিশ্বাস, ইঞ্জিনিয়ার শ্যামল ঘোষ প্রমুখ।
সকাল থেকে ভক্তিমূলক সংগীত, রামায়নগানসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। আয়োজকরা জানান, দুই দিনব্যাপী মহোৎসবের অনুষ্ঠানমালায় থাকছে ধর্মসভার পাশাপাশি ঊষালগ্নে মাঙ্গলিকী, তারকব্রহ্ম নাম সংকীর্তন, সকাল-সন্ধ্যা বিরতিহীন নাম-ধ্যান, প্রভাতে এবং সন্ধ্যায় সমবেত প্রার্থনা, সদ্গ্রন্থাদি পাঠ, ভক্তি সংগীত, শুভ অধিবাস, বিশ্ব কল্যাণে বিশেষ প্রার্থনা, পুরুষোত্তমের শুভ সপ্তত্রিংশতী-উত্তর শততম জন্মলগ্নের স্মৃতিচারণ, (পুরুষোত্তমের দিব্য তনু স্মরণে ৮১ বার পুষ্পাঞ্জলি, প্রদীপ প্রজ্বলন, শঙ্খধ্বনি, পুরুষোত্তম প্রণাম ও অর্ঘ্যাঞ্জলি নিবেদন, জাতীয় সঙ্গীত সহযোগে জাতীয় পতাকা ও মাতৃবন্দনা সহযোগে সৎসঙ্গ পতাকা উত্তোলন), শ্রী অনুকূল নবমী তিথি (তালনবমী) যোগে পুণ্যতোয়া ভাগীরথী পদ্মার তীর্থ-সলিলে স্নান-মহোৎসব, শ্রীশ্রীঠাকুরের জন্মস্থান প্রদক্ষিণ, ঋত্বিক পরিষদ সভা, যুব সম্মেলন, ঋত্বিক সম্মেলন, কিশোর মেলা, মাতৃসম্মেলন, কর্মী সম্মেলন, আন্দোবাজারে মহাপ্রসাদ বিতরণ ও রাতে লোকরঞ্জন অনুষ্ঠান।
আয়োজকরা জানান, আজ রাতে লোকরঞ্জন অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে এ উৎসব শেষ হবে।