চট্টগ্রাম, ১৭ মার্চ, ২০২৫ (বাসস): বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাস কাণ্ডে চট্টগ্রামের আদালত প্রাঙ্গণের অদূরে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে হত্যার ঘটনায় হওয়া মামলায় গ্রেফতারকৃত দুই আসামিকে একদিন জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি পেয়েছে পুলিশ।
সোমবার (১৭ মার্চ) সকালে চট্টগ্রামের ৪র্থ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালতের বিচারক মোহাম্মদ মোস্তফা শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
দুই আসামি হলেন- চন্দন দাশ ও রাজিব ভট্টাচার্য্য।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর রায়হানুল ওয়াজেদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, দুই আসামি গ্রেফতারের পর গত বছরের ৯ ডিসেম্বর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর মধ্যে আসামি চন্দন দাশ জবানবন্দিতে শিবা নামে একজন আসামির নাম প্রকাশ করে এবং আসামি রাজিব ভট্টাচার্য জবানবন্দিতে ওমবাই নামে আরেক আসামির নাম প্রকাশ করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মাহফুজুর রহমান জবানবন্দিতে প্রকাশিত দুই আসামি নাম-ঠিকানা নিশ্চিত হতে আসামি চন্দন দাশ ও রাজিব ভট্টাচার্যকে জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে আদালতে উল্লেখ করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার দুই আসামির উপস্থিতিতে আদালতে শুনানি হয়। শুনানি শেষে আদালত জেলগেটে একদিন জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশকে অনুমতি দেন।
গত বছরের ২৫ নভেম্বর চট্টগ্রামে ফেরার পথে রাজধানীর শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে বহিষ্কৃত ইসকন নেতা চিন্ময় ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরদিন তাকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে চট্টগ্রামের কোতোয়ালী থানায় হওয়া একটি রাষ্ট্রদ্রোহ মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে তোলা হলে জামিন নামঞ্জুর করেন আদালত।
ওইদিন দুপুরে তাকে কারাগারে পাঠানোর জন্য প্রিজনভ্যানে তোলা হয়। তখন চিন্ময়ের অনুসারীরা প্রিজনভ্যান আটকে দেন। তারা এ সময় প্রায় তিন ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন। একপর্যায়ে পুলিশ, বিজিবি লাঠিপেটা করে এবং সাউন্ড গ্রেনেড ছুড়ে বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের অনুসারীদের সংঘর্ষ হয়। পরে চট্টগ্রাম আদালত ভবনে প্রবেশপথের বিপরীতে রঙ্গম সিনেমা হল গলিতে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়।
এ ঘটনায় তার বাবা বাদী হয়ে ৩১জনের নাম উল্লেখ করে নগরের কোতোয়ালী থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। এছাড়া আলিফের বড়ভাই ১১৬ জনের নাম উল্লেখ করে বিস্ফোরণ আইনে আরেকটি মামলা দায়ের করেন।