ঢাকা, ২৩ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক ও বিদেশি গণমাধ্যম নীতিমালা-২০২৫ জারি করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।
আজ বুধবার ইসি সচিবালয়ের পরিচালক (জনসংযোগ) ও তথ্য প্রদানকারী কর্মকর্তা মো. শরিফুল আলম বাসসকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, নতুন এই নীতিমালা জারি হওয়ায় ২০২৩ সালের নীতিমালাটি বাতিল করা হয়েছে।
নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের ভোটগ্রহণের তারিখ থেকে ৩০ দিনের মধ্যে ইসি সচিবের কাছে ই-মেইল বা হার্ড কপির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদন জমা দিতে হবে। প্রতিবেদনগুলো প্রাক-ভোট, ভোটগ্রহণের দিন এবং ভোট-পরবর্তী পর্যবেক্ষণের তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করতে হবে।
প্রত্যেক নির্বাচন পর্যবেক্ষক অথবা সংস্থা পর্যবেক্ষণের সময় নির্বাচনী অনিয়ম যদি থাকে সে সম্পর্কিত সুপারিশসহ কমিশনের কাছে প্রতিবেদন জমা দিতে পারবে ।
আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা নিশ্চিত করবেন যে, তাদের পর্যবেক্ষণ এবং প্রতিবেদন নিরপেক্ষতার সাথে বস্তুনিষ্ঠ ও নির্ভুলতার সর্বোচ্চ মান প্রতিফলন করেই তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিটি পর্যবেক্ষক সংস্থা ভোট গণনা বা ফলাফল একত্রীকরণের সময় কেবল একজনকে মনোনীত করতে পারবে।
কোনও নির্বাচন পর্যবেক্ষক নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় কোনও অবৈধ বা দুর্নীতিগ্রস্ত কার্যকলাপে জড়িত হবেন না। আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা এমন কোনও কার্যকলাপ পরিচালনা বা অংশগ্রহণ করবেন না যা কোনও রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর পক্ষে বা বিরোধিতার ধারণা তৈরি করতে পারে।
আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষকরা নির্বাচন-পূর্ব, নির্বাচনের দিন এবং নির্বাচন-পরবর্তী কোনও প্রক্রিয়ায় প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে বাধা দেবেন না।
স্থানীয় নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য প্রযোজ্য নীতিমালা আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং পর্যবেক্ষক সংস্থার জন্যও প্রযোজ্য হবে।
নির্বাচন পরিচালনায় সহায়তা করতে সংবিধান, নির্বাচন-সম্পর্কিত আইন ও বিধিমালা মেনে চলবেন পর্যবেক্ষকরা। তারা নির্বাচন-সম্পর্কিত কর্মকর্তাদের কাজে কোনরূপ হস্তক্ষেপ করা থেকে বিরত থাকবেন।
পর্যবেক্ষণের সময় সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে। পর্যবেক্ষকরা এমন কোনও আচরণ প্রদর্শন করবেন না, যেন তাদের আচরণকে কোনও রাজনৈতিক দল বা প্রার্থীর সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করে। কোনও রাজনৈতিক দল, প্রার্থী বা তাদের এজেন্ট, নির্বাচনের সাথে জড়িত কোনও সংস্থা বা ব্যক্তির কাছ থেকে কোনরূপ উপহার গ্রহণ থেকে বিরত থাকতে হবে। নির্বাচনের সময় পর্যবেক্ষকরা গণমাধ্যমের কাছে এমন কোনও মন্তব্য করবেন না, যা নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ব্যাহত বা প্রভাবিত করতে পারে।
নির্বাচনের সময় বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের অধিকার থাকবে। তারা সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার কর্তৃক আরোপিত যেকোনো বিধিনিষেধ মেনে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবেন। তবে, তারা বেশিক্ষণ ভোটকেন্দ্রের ভেতরে থাকতে পারবেন না।
নীতিমালা অনুযায়ী, বিদেশি পর্যবেক্ষকদের জন্য ৩০ দিনের সময় দিয়ে আবেদন আহ্বান করবে ইসি। এক্ষেত্রে ব্যক্তি বা সংগঠন হিসেবে পর্যবেক্ষক হতে হলে সুশাসন, নির্বাচন, গণতন্ত্র, শান্তি প্রতিষ্ঠা এবং মানবাধিকার নিয়ে কাজের অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
বিদেশি গণমাধ্যম: আন্তর্জাতিক নির্বাচন পর্যবেক্ষক এবং বিদেশি সাংবাদিকদের অভ্যর্থনা এবং সহায়তার জন্য ভোটগ্রহণের তারিখের ১০ দিন আগে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে একটি সহায়তা ডেস্ক স্থাপন করবে। যে সব বিদেশি সাংবাদিক ও পর্যবেক্ষক নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য কোন জেলা বা নির্বাচনী এলাকায় যেতে চাইলে তাদেরকে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানাবে ইসি সচিবালয়। রিটার্নিং অফিসারদের কাছেও প্রয়োজনীয় সহায়তার নির্দেশ দেয়া হবে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক এবং পুলিশ সুপারিনটেনডেন্টদের এ বিষয়ে অবহিত করবেন।