রংপুর, ১৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫ (বাসস): একটি সচেতনতামূলক প্রচারণার কর্মসূচি থেকে পরিবেশকর্মীরা বাংলাদেশে ভবিষ্যতের টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্য অর্জনের জন্য জ্বালানি নীতিমালা সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন।
শনিবার বিকেলে রংপুর মহানগরীর পার্কের মোড় এলাকায় পরিবেশ সুরক্ষার জন্য ভবিষ্যতের টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি লক্ষ্য অর্জনের ক্ষেত্রে বিদ্যমান বাধা দূর করার জন্য একটি রূপান্তরমূলক উদ্যোগ হিসেবে এই প্রচারণার আয়োজন করা হয়।
বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ডেভেলপমেন্ট অফ পুওর সোসাইটি (ডিওপিএস), কোস্টাল লাইভলিহুড অ্যান্ড এনভায়রনমেন্টাল অ্যাকশন নেটওয়ার্ক (ক্লীন) এবং বাংলাদেশ ওয়ার্কিং গ্রুপ অন ইকোলজি অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (বিডব্লিউজিইডি) এই প্রচারণার আয়োজন করে।
ডিওপিএস-এর নির্বাহী পরিচালক উজ্জ্বল চক্রবর্তী এবং সমন্বয়কারী সুবল চন্দ্র, ইকোলজি এন্ড ডেভলপমেন্ট ফোরামের পরিচালক হাসান মেহেদী, নারী সমাজকর্মী আনোয়ারা বেগম, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও পরিবেশকর্মী আতিক শাহরিয়ার এবং মিজানুর রহমান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা নবায়নযোগ্য পরিচ্ছন্ন জ্বালানির বৃহৎ পরিসরে গ্রহণযোগ্যতার ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টিকারী চ্যালেঞ্জগুলো নিয়ে আলোচনা করেন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মধ্যেই টেকসই জ্বালানি রূপান্তর ত্বরান্বিত করার জন্য নীতিগত সংস্কারের উপর জোর দেন।
তারা বলেন, বাংলাদেশ নবায়নযোগ্য জ্বালানির দিকে অগ্রসর হওয়ার জরুরি প্রয়োজনের মুখোমুখি হলেও ধীর প্রকল্প অনুমোদন প্রক্রিয়া, সীমিত অর্থায়ন, পুরানো অবকাঠামো এবং অপর্যাপ্ত নীতি কাঠামোর মতো বাধাগুলি কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতিকে বাধাগ্রস্ত করছে।
বিদ্যমান শুল্ক কাঠামোও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগকে বাধাগ্রস্ত করে অনেক প্রকল্পকে আর্থিকভাবে অগ্রহনযোযোগ্য করে তোলে। নবায়নযোগ্য জ্বালানিকে আরও সহজলভ্য এবং সাশ্রয়ী করার জন্য কার্যকর এবং বাস্তবসম্মত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানি প্রকল্পের অনুমোদন প্রক্রিয়া দ্রুততর করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় প্ল্যাটফর্ম তৈরির দাবি জানান যা প্রশাসনিক জটিলতা কমাবে এবং দ্রুত বাস্তবায়ন নিশ্চিত করবে।
তারা স্মার্ট গ্রিড এবং নেট এনার্জি মিটারিং (এনইএম) প্রযুক্তির একীকরণের উপর জোর দিয়েছেন, যাতে সৌর ও বায়ু বিদ্যুতের মতো নবায়নযোগ্য উৎসগুলোকে জাতীয় গ্রিডে সহজেই একীভূত করা যায়।
তারা পুনঃনবায়নযোগ্য জ্বালানিতে স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্য একটি অনুকূল পরিবেশ তৈরির পরামর্শ দিয়েছেন, যাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য অর্থায়ন সহজতর হয়।
ডিওপিএস-এর পরিচালক উজ্জ্বল চক্রবর্তী বলেন, এই প্রচারণার লক্ষ্য জনসচেতনতা বৃদ্ধি, নীতিনির্ধারকদের সম্পৃক্ত করা এবং সবুজ ও টেকসই নবায়নযোগ্য জ্বালানি ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজনীয় সংস্কারের জন্য শক্তিশালী সমর্থন তৈরি করা।
তিনি আরও বলেন, ‘এই উদ্যোগটি কেবল একটি পরিচ্ছন্ন জ্বালানি ভবিষ্যত নিশ্চিত করার জন্য নয় বরং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াই করার সময় একটি শক্তিশালী এবং স্থিতিশীল অর্থনীতি গড়ে তোলার জন্যও উদ্যোগটি কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।’
ইকোলজি এন্ড ডেভলপমেন্ট ফোরামের পরিচালক হাসান মেহেদী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে রংপুর অঞ্চল এবং বাংলাদেশের অন্যান্য গ্রামীণ অঞ্চল জ্বালানি খাতে বড় ধরনের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘এই প্রচারণা কার্যক্রম নবায়নযোগ্য জ্বালানি সমাধানগুলো রংপুর এবং দেশের অন্যান্য অঞ্চলের জন্য কার্যকর ভূমিকা পালন করতে পারে এবং জলবায়ু ও জ্বালানি সহনশীল সম্প্রদায় গড়ে তুলতে সহায়তা করতে পারে।’