ঢাকা, ১০ জুলাই, ২০২৫ (বাসস): প্রতারণার মাধ্যমে জনগণের কাছ থেকে অর্থ আদায়কারী একটি সাইবার গ্রুপের সাথে যুক্ত থাকার সন্দেহে আটক নাইজেরিয়ান নাগরিক ফ্রাঙ্ক কোকোকে তার জন্মভূমিতে ফেরত পাঠানোর উদ্যোগ নিয়েছে র্যাব।
র্যাব-১ এর মেজর মো. আহনাফ আজ বাসসকে বলেন, ‘নাইজেরিয়ান নাগরিক ফ্রাঙ্ক কোকো দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে অপরাধের সাথে জড়িত। তাকে তার নিজের দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে আমরা বুধবার বিশেষ শাখা (এসবি) কে একটি চিঠি পাঠিয়েছি।’
তিনি বলেন, বাংলাদেশে অবস্থানকালে অপরাধের সাথে তার জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া যায় এমন কেস ডকেট এবং ইংরেজি দৈনিকগুলোতে প্রকাশিত সংবাদের লিঙ্কসহ প্রয়োজনীয় নথিপত্রও চিঠির সাথে সংযুক্ত করা হয়েছে।
সোমবার ও মঙ্গলবার রাজধানীর পল্লবী ও মিরপুর এলাকায় পৃথক অভিযান চালিয়ে র্যাব-১-এর একটি দল ফ্র্যাঙ্ক কোকো (৩৬), আরেক নাইজেরিয়ান নাগরিক ইমানুয়েল (৩৫) এবং বাংলাদেশি নারী সুইটি আক্তারকে (২৭) গ্রেপ্তার করে।
তাদের কাছ থেকে দুটি ল্যাপটপ, চারটি আইফোন, তিনটি স্মার্ট মোবাইল ফোন, তিনটি বোতামযুক্ত মোবাইল ফোন, একটি ট্যাব এবং একটি ওরিকো ব্র্যান্ডের হার্ড ড্রাইভ জব্দ করা হয়েছে বলেও জানানো হয়েছে।
আরেক নাইজেরিয়ান নাগরিক ইমানুয়েলকে বহিষ্কারের ব্যবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে র্যাব কর্মকর্তা বলেন, তিনি কীভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন তা এখনও নিশ্চিত করতে পারেননি।
তিনি বলেন, যদি ইমানুয়েল অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন, তাহলে তাকে আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বহিষ্কার করা হবে। ইমানুয়েল পর্যটন ভিসা নিয়ে নাকি অবৈধভাবে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন তা যাচাই করে এসবি সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে।
মেজর আহনাফ বলেন, বাংলাদেশে নাইজেরিয়ার কোনও দূতাবাস নেই, আটক কোকো ভারত হয়ে পর্যটন ভিসা নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছিলেন। কারণ আফ্রিকান দেশটির ভারতে দূতাবাস রয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা স্বীকার করেছেন যে তারা দীর্ঘদিন ধরে জালিয়াতির সাথে রয়েছেন।
গ্রেপ্তারকৃত নাইজেরিয়ান কোকো এবং ইমানুয়েল প্রায় দুই বছর ধরে এই জালিয়াতির সাথে জড়িত। তাদের সহযোগী সুইটি আক্তার গত তিন মাস ধরে তাদের সাথে যুক্ত হয়েছে।
কোকোকে দুই বছর আগে র্যাব-১০ গ্রেপ্তার করেছিল এবং জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর আবারও এই অপকর্মে লিপ্ত হয়েছে।
মেজর আহনাফ বলেন, সাম্প্রতিক অভিযানে, র্যাব সদস্যরা তাদের নগদ এবং বিকাশ অ্যাকাউন্টে প্রায় ১৮ লাখ টাকা পেয়েছে, যেখানে বিভিন্ন স্থান থেকে আগে পাঠানো বার্তার ভিত্তিতে এখনও টাকা জমা হচ্ছে।
গ্রেপ্তারকৃত মহিলা সদস্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশে স্থানীয় সমন্বয়কারীর দেওয়া বিভিন্ন বাংলাদেশির নম্বরে যোগাযোগ করছিলেন এবং ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে প্রলোভন দেখিয়ে টাকা আদায় করছিলেন।
সমন্বয়কারী জালিয়াতির মাধ্যমে প্রাপ্ত অর্থের ১০ শতাংশ থেকে ১৫ শতাংশ ভাগ পান।