ঢাকা, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : দেশে এমন কিছু শক্তির উত্থান ঘটছে যা গণতন্ত্রের চর্চা, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্রের জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী এমন অভিযোগ করেছেন।
তিনি বলেন, যে শক্তিগুলোর উত্থান আমরা দেখছি, সেটা দেশের গণতন্ত্র, গণতন্ত্রের চর্চা এবং মানুষের ধর্মীয় চেতনার জন্য বিপদজনক।
রোববার দুপুরে রাজধানীর ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ডিইএবি) আয়োজিত বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার শারীরিক অসুস্থতা মুক্তি কামনায় আয়োজিত দোয়া মাহফিল এবং বিএনপি'র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ১৮তম কারামুক্তি দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনায় এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, এখানে মানুষ পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে, আবার টেলিভিশনে নাটক দেখে, গান শোনে-এটাই আমাদের সাংস্কৃতিক বাস্তবতা। কিন্তু আপনি যখন সবকিছু একপাক্ষিক করবেন, তখন ফ্যাসিবাদের উত্থান হবে।
আর ফ্যাসিবাদের চূড়ান্ত রূপ হল উগ্র সাম্প্রদায়িকতা ও উগ্র ধর্মীয় রাজনীতির বিকাশ।
বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ছাত্রসংসদ নির্বাচন প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আঁতাতে জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নির্মূলের কোন গভীর নীল নকশা তৈরি হচ্ছে কি না—এটা মানুষের ভাবনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বিএনপির এই নেতা আরও অভিযোগ করেন, ডাকসু ও জাকসু নির্বাচনে ব্যালট পেপার ছাপানো হয়েছে একটি ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান থেকে। ওই প্রতিষ্ঠানের মালিকের সঙ্গে একটি বিশেষ রাজনৈতিক দলের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে।
'এটা কি অনিয়ম নয়?' বলেও প্রশ্ন রাখেন বিএনপির এই সিনিয়র নেতা।
বিএনপির মুখপাত্র বলেন, সরকারি কোন প্রেসের মাধ্যমে ব্যালট পেপার ছাপানো যেত। কিন্তু তা না করে ব্যক্তিগত প্রেসে ছাপানো হয়েছে। এমন অনিয়ম দেখে জাহাঙ্গীরনগরের শিক্ষকরা পর্যন্ত দায়িত্ব থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি সম্পর্কে রিজভী বলেন, ঢাবির উপাচার্য কোড অব কন্ডাক্ট তৈরি করেছেন, যেখানে বলা হয়েছে—সাবেকরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে পারবে না। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় মানেই সারাজীবনের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন। সাবেক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের আত্মিক সম্পর্ক থাকে। এটি বিচ্ছিন্ন কোন জায়গা নয়।
বিশ্ববিদ্যালয় নির্বাচনকে একচেটিয়া করতে সরকারপন্থী কিছু মানুষের সঙ্গে আঁতাত করে ভিসি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভূমিকা পালন করছেন বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, 'যারা অতীতে অভ্যুত্থানে ছিলেন, তাদের অনেকেই এখন নতুন একটি সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে চান।
তারা সাংস্কৃতিক আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করতে চাইছে।'
তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন, রাষ্ট্র ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ মিলে এমন এক মাস্টার প্ল্যান বাস্তবায়ন করতে চাইছে, যেখানে বলা হচ্ছে—আমরা আওয়ামী লীগকে তাড়িয়েছি, এবার বিএনপিকেও ঘায়েল করতে হবে। এটা কি তাদের গভীর নীল নকশার অংশ নয়?'
তিনি মনে করেন, একপাক্ষিক কিছু হলে সমাজে নতুন ধরনের ফ্যাসিবাদের জন্ম নেবে, যা জাতীয় চেতনাকে ধ্বংস করে দেবে।