হ্যান্ডবল মাঠে মায়েদের অন্য রকম অনুপ্রেরণা

বাসস
প্রকাশ: ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৭:০৪

ঢাকা, ৫ নভেম্বর ২০২৫ (বাসস) : কোনও প্রতিযোগিতা চলার সময়ে পল্টনের শহীদ (ক্যাপ্টেন) এম. মনসুর আলী জাতীয় হ্যান্ডবল স্টেডিয়ামে ঢুকলে দৃশ্যটা যে কারও চোখে পড়বে। মাঠে খেলছে মেয়েরা। মাঠের পাশে চেয়ারে বসে আছেন মায়েরা। মেয়েদের পড়াশোনায় সাফল্য পেতে এই মায়েদের পরিশ্রমের শেষ থাকে না। মেয়েকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া। আবার স্কুল থেকে বাড়ি। এরপর কোচিংয়ে যাতায়াত। যেন এতটুকু দম ফেলার ফুরসত থাকে না মায়েদের।

সেই মায়েরাই আবার খুব ভোরে ঘুম থেকে ওঠেন। যখন ঢাকা শহর আড়মোড়া ভেঙে জেগে ওঠেনা। কিন্তু মায়েরা ওঠেন মেয়েদের প্রস্তুত করতে। যে মেয়েরা শুধু স্কুলে যাওয়ার জন্য নয়, হ্যান্ডবলের অনুশীলনে যাওয়ার জন্যও প্রস্তুত হন।    

এমন কিছু গুণী মায়েদের জন্যই নতুন এক প্রজন্ম ইদানিং হ্যান্ডবল মাঠে ছুটে আসছে। এই মায়েদের কেউ গৃহিণী, কেউ চিকিৎসক, কেউ বা নারী উদ্যোক্তা। তবে হ্যান্ডবল মাঠে সবারই একটি পরিচয় তারা হ্যান্ডবল খেলোয়াড়ের মা।

গত ৩০ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়েছে স্কুল হ্যান্ডবলের লিগ ভিত্তিক সুপার সিক্সের শেষ ম্যাচ। যেখানে মেয়েদের বিভাগে সর্বোচ্চ পয়েন্ট পেয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সানিডেল স্কুল। 

প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড় ইসরাত মেহজাবিন রাহা পড়েন অষ্টম শ্রেণীতে। তিনি হয়েছেন সেরা খেলোয়াড়। তার বাবা যুগ্ম সচিব কিবরিয়া মজুমদার। মা গৃহিনী। মায়ের সমর্থনেই তিনি এতদূর এসেছেন বলে জানালেন, “আমার মা সব সময় আমাকে সমর্থন দেন। উনি ব্যস্ত থাকলে মাঠে না এলেও ফেসবুকে আমার খেলা দেখেন। মায়ের সহযোগিতায় হ্যান্ডবল খেলায় এসেছি আমি।” 

সানিডেলের অধিনায়ক মুজদালিফা খালিদ বলেন, “মাকে ট্রফিটা হাতে নিয়ে দেখাতে পেরে খুব খুশি। মুজদালিফা যখন ট্রফি হাতে উচ্ছ্বসিত, মা তখন আনন্দে আত্মহারা। এবার সবার পরিশ্রম ছিল। আমাদের পরিবার থেকে অনেক সমর্থন পাই। সকাল সাড়ে ছয়টায় বাবা ওঠেন। মা ওঠেন। উঠে স্কুলের বাস ধরতে নিয়ে যান। তাদের জন্যই এখানে আসা আমাদের।”

মুজদালিফার মা শায়লা শাহরিন বলেন, “অনেক দিন ধরে ওরা টুর্নামেন্ট খেলছে। প্রতিটা ম্যাচ দেখেছি। খুব ভালো লেগেছে। আসলে ঢাকায় বাচ্চাদের খেলার জন্য খুব একটা জায়গা নেই। খেলার মধ্যে থাকলে ভালো হয়। সব স্কুলে এমন সুযোগ থাকলে ভালো হয়। আর তাছাড়া মেয়ে যখন খেলা শেষে বাসায় ফেরে তখন সে খুব আনন্দে থাকে। মন প্রফুল্ল থাকে। এটা একটা ভালো দিক।” 

সানিডেলের আরেক খেলোয়াড় আমানার মা কায়েছমা জামান নিয়মিত মেয়ের খেলা দেখতে মাঠে আসেন। তিনি সফল নারী উদ্যোক্তা। ব্যস্ততার মাঝেও মেয়েকে সময় দেন তিনি, ‘আমাদের মেয়েদের অনুশীলন শুরু হয় ক্লাসের আগে। ৬টায় যেতে হয়, তখন অনুশীলন শুরু হয়। এরপর স্কুল শেষ করে বিকেল পাঁচটায় বাসায় আসে। ওদের জন্য আমাদের আরও সকালে উঠতে হয়। যেহেতু ওদের একটা ভালো টিফিন দিতে হয়। সেগুলো নিজে তৈরি করি।’

এটা সত্যি যে কোনও সন্তানের স্বপ্নপূরণে মায়ের সমর্থন সবচেয়ে বড় শক্তি। মায়েদের এই অদম্য আত্মত্যাগ ও উৎসাহই হয়তো আগামী প্রজন্মের জন্য গড়ে তুলবে সেরা নারী হ্যান্ডবল খেলোয়াড়।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
নবম শ্রেণির ভোকেশনাল সমাপনী পরীক্ষা নিয়ে ডিএমপির জরুরি নির্দেশনা
মুন্সীগঞ্জে অটোচালক হত্যায় ৫ আসামি গ্রেপ্তার
সিলেটে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল ২ জনের
রাজশাহীতে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করার অঙ্গীকার মহানগর বিএনপির
ওসি ও ডিআইজি পরিচয়ে ১৫ লাখ হাতিয়ে নেওয়া প্রতারক গ্রেফতার
মির্জা ফখরুলের সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূতের সাক্ষাৎ
বিএনপির ৩১ দফা বাস্তবায়নে টাঙ্গাইলে গণমিছিল 
ঢাবি ভাস্কর্য বিভাগে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী
গ্রাহকদের জন্য মানসম্পন্ন সংযোগ ও তরঙ্গের সুষম বণ্টন জরুরি: তৈয়্যব
বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগে পাঁচ ব্যাংকের একীভূতকরণ প্রক্রিয়া শুরু
১০