বরগুনার লালদিয়া চর হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র

বাসস
প্রকাশ: ২৭ নভেম্বর ২০২৫, ১৫:২৩
পূর্বদিকে বিষখালী নদী এবং পশ্চিমে বলেশ্বর নদী ও সাগরের মোহনা লালদিয়া চরকে আগলে রেখেছে। ছবি : বাসস

।। হাফিজুর রহমান।।

বরগুনা, ২৭ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় জেলা বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলায় অবস্থিত লালদিয়া চর হতে পারে আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র। পুরো লালদিয়া চরটি ঝাউগাছ দিয়ে বেষ্টিত থাকায় এ চরটি লালদিয়া বন নামেও পরিচিত। বনের পূর্বদিকে বিষখালী নদী, পশ্চিমে বলেশ্বর নদী ও সাগরের মোহনা এ লালদিয়া চরকে আগলে রেখেছে।

বনের পূর্বপ্রান্তে সমুদ্র সৈকত। সৈকতটি আকারে ক্ষুদ্র হলেও পুরো লালদিয়া চরটি ঝাউগাছ বেষ্টিত হওয়ায় পর্যটকরা এর অপরুপ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যায়। চরটি সুন্দরবনেরই একটি অংশ। তাই পর্যটকরা সহজেই সুন্দরবনের সৌন্দর্যকে উপভোগ করতে পারবেন। লাল কাকড়া এ চরের সৌন্দর্যকে আরো কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

বরগুনা থেকে লালদিয়ার দূরত্ব প্রায় ৪০ কিলোমিটার। বরগুনা জেলা শহর থেকে পাথরঘাটায় যেতে সময় লাগে দেড় ঘন্টা। সেখান থেকে হরিণঘাটা হয়ে ট্রলারে লালদিয়া যেতে একঘন্টা সময় লাগে। হরিণঘাটা বনে নির্মিত ৯৫০ মিটার ফুট ট্রেইল ব্রীজটি (কাঠের পথ) সম্প্রসারিত করে লালদিয়া সমুদ্র সৈকত পর্যন্ত নেয়া হয়েছে। ব্রিজ পাড় হয়ে বনের ভিতর দিয়ে হেঁটে যেতে ৩০ মিনিট সময় লাগবে লালদিয়া সৈকতে পৌঁছাতে। আবার ব্রীজ থেকে ট্রলারে করে ২০ মিনিট সময় লাগে লালদিয়া ঘাটে পৌছতে। 

লালদিয়া বনে বিভিন্ন ধরনের পাখির কল-কাকলী, সৈকতের বালুতে লাল কাকড়া, ঝিনুক এবং সৈকত থেকে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখা যায়, যা পর্যটকদের দারুনভাবে মুগ্ধ করে। 
এছাড়া লালদিয়া সৈকতের পাশেই রয়েছে একটি শুঁটকি পল্লী। সৈকত ঘেড়া লালদিয়ার চরে বছরের কার্তিক মাস থেকে শুরু করে ফাল্গুন মাস পর্যন্ত চলে শুটকি উৎপাদন। চরের বালুতে কিছুক্ষন দাড়িয়ে থাকলেই গর্ত থেকে বেড়িয়ে আসে লাল কাকড়ার দল, টের পেলেই আবার গর্তের ভিতর ঢুকে পড়ে। এ এক নান্দনিক দৃশ্য। সবমিলিয়ে লালদিয়া হতে পারে একটি আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্র।

সরেজমিনে লালদিয়া এলাকার ট্রলার মাঝি আলতাফ হোসেনের সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আমি ১৫ বছর ধরে এই এলাকায় ট্রলার চালাই। এখানে ৮/৯ টি ট্রলার আছে। দেশের বিভিন্ন জেলার লোকজন এখানে এসে ট্রলারে করে ঘুরে বেড়ান। এখানের ঝাউবনে ইচ্ছে করলে পিকনিক করা যায়। সরকারের পক্ষ থেকে এখানে পর্যটকদের জন্য একটি রেষ্ট হাউজ এবং নদীর তীরে কিছু ছাতা ও বসার ব্যবস্থা করা হলে পর্যটকদের জন্য ভালো হতো। 

এ বিষয়ে পাথরঘাটা বনবিভাগের ফরেষ্টার নারায়ণ চন্দ্র বলেন, সামনে একটি ট্রেইল ব্রীজ আছে, এখান থেকে বনে যাওয়া যায় এবং লালদিয়া সৈকত পর্যন্ত পায়ে হেঁটে অথবা ট্রলারে করে পৌঁছানো যায়। বনের ভিতরে পর্যটকদের নিরাপত্তার কোন সমস্যা নেই। শীতকালে পর্যটক বেশি আসেন। 

তিনি বলেন, বনের পাশে টুরিষ্ট পুলিশের একটি ক্যাম্প থাকলে পর্যটকদের নিরাপত্তা জোড়দার হবে। আমাদেরকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নানাভাবে সহযোগিতা করছেন।

পাথরঘাটার ড. সৈয়দা ফিরোজা বেগম বালিকা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান বলেন, লালদিয়া চরটি সবুজে ঘেড়া ঝাউগাছ বেষ্টিত মনোরম পরিবেশে গড়ে উঠেছে। শীত মৌসুমে লালদিয়া চরে  বিভিন্ন এলাকা থেকে পর্যটকরা ঘুড়তে আসেন। দূর দূরান্ত থেকে আসা দর্শনার্থীদের এখানে থাকার সুব্যস্থা নেই। এখানে সরকারের পক্ষ থেকে বসার স্থান, ছাতার ব্যবস্থা করা হলে পর্যটকরা এখানে ঘুরতে আসবে।

এ বিষয়ে পাথরঘাটা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মিজানুর রহমান বাসসকে বলেন, লালদিয়ায় একটি বিশ্রামাগার, একটি টুরিষ্ট পুলিশ ক্যাম্প, টয়লেট এবং খালের উপরে একটি ব্রীজ করার পরিকল্পনা রয়েছে যাতে পর্যটকরা দুইদিকের চরে যেতে পারে।

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
বরিশালে আইনকানুন কৌশল ও করণীয় বিষয়ক প্রশিক্ষণ
দু’দিন ও ৮৪৭ বলে শেষ হওয়া পিচকে ‘খুব ভাল’ রেটিং আইসিসির
ডেঙ্গুতে দেশে আরও ৭ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৫৬৭
দিল্লিতে বাংলাদেশ হাইকমিশনে সশস্ত্র বাহিনী দিবস উদযাপিত
লালমনিরহাটে সীমান্ত সুরক্ষা জোরদারে নতুন বিওপি ক্যাম্প
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অনার্স ১ম বর্ষ ব্যবহারিক পরীক্ষা গ্রহণের সময় বৃদ্ধি
অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জয়ের স্বপ্ন দেখেন জহির
চুয়াডাঙ্গায় সরকারি নির্দেশনা না মেনে বীজ বিক্রি করায় দুই ব্যবসায়ীকে জরিমানা
চার অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন
খুলনায় ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ
১০