ঢাকা, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : ভিয়েতনাম ও যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপক্ষীয় অর্থনৈতিক ও বাণিজ্য বিষয়ক আলোচনা শুরু করেছে বলে জানিয়েছে হ্যানয়। এই আলোচনা শুরু হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য শুল্ক আরোপের হুমকির প্রেক্ষাপটে।
হ্যানয় থেকে এএফপি জানায়, চলতি মাসে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ভিয়েতনামের ওপর ৪৬ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক আরোপের হুমকি দেন। ওয়াশিংটনের অভিযোগ, চীনা পণ্য রপ্তানিতে সহায়তা করে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর আরোপিত শুল্ক এড়াতে বেইজিংকে সুযোগ দিচ্ছে ভিয়েতনাম।
বুধবার রাতে ভিয়েতনামের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী গুয়েন হোং দিয়েন যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি জেমিসন গ্রিয়ারের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বৈঠক-পরবর্তী বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, :আলোচনার নীতিগত দিক, পরিসর ও রূপরেখা নির্ধারণে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক।'
চলতি বছরের প্রথম তিন মাসে যুক্তরাষ্ট্র ছিল ভিয়েতনামের সর্ববৃহৎ রপ্তানি বাজার।
এএফপির হাতে আসা একটি নথি অনুযায়ী, সম্ভাব্য নিষেধাজ্ঞা এড়াতে পণ্যের উৎস শনাক্তকরণে কঠোর নজরদারি চালাতে কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছে ভিয়েতনামের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
গত সপ্তাহে ভিয়েতনাম সফরের সময় চীনের প্রেসিডেন্ট শি চিনপিং এ অঞ্চলে মুক্ত বাণিজ্য রক্ষায় যৌথভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।
বেইজিং জানিয়েছে, তারা "কোনো তৃতীয় পক্ষের খরচে" যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য চুক্তি করার বিষয়ে অন্য দেশগুলোর বিরোধিতা করে এবং প্রয়োজনে "প্রতিশোধমূলক ব্যবস্থা" গ্রহণ করবে।
২০২৪ সালে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মধ্যে চীনা পণ্যের সর্বোচ্চ ক্রেতা ছিল ভিয়েতনাম; বছরে মোট আমদানির পরিমাণ ছিল ১৬১.৯ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী ফাম মিন চিন বলেছেন, এই আলোচনার লক্ষ্য কোনো তৃতীয় দেশের বাজারে বিরূপ প্রভাব ফেলা নয়।
টেলিফোনালাপে দিয়েন যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগের বিষয়গুলো আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে ভিয়েতনামের প্রস্তুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন এবং বলেন, 'পারস্পরিক স্বার্থের ভারসাম্য ও যৌথ ঝুঁকির চেতনায় যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌক্তিক সমাধানে পৌঁছাতে আমরা প্রস্তুত।'
বিবৃতিতে গ্রিয়ারের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়, তিনি বিশ্বাস করেন, দুই দেশ 'শিগগির একটি উপযুক্ত সমাধানে পৌঁছাতে পারবে, যা স্থিতিশীল ও পারস্পরিকভাবে লাভজনক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ককে উৎসাহিত করবে।'
ভিয়েতনাম দীর্ঘদিন ধরে চীন ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে চলার কৌশল হিসেবে 'বাঁশ কূটনীতি' অনুসরণ করে আসছে।