ঢাকা, ১৮ মে, ২০২৫ (বাসস) : স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ শনিবার ইসরাইলের ‘গাজায় গণহত্যা’ বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মাদ্রিদ ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে সাহায্য প্রবেশাধিকারের বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদালতের রায়ের জন্য জাতিসংঘের একটি প্রস্তাব গ্রহণের পরিকল্পনা করছে।
বাগদাদ থেকে এএফপি এই খবর জানায়।
বাগদাদে আরব লীগের এক শীর্ষ সম্মেলনে সানচেজ বলেছেন, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ওপর ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী হামাসের হামলার ফলে সৃষ্ট যুদ্ধে গাজায় ‘প্রায় ৫৩ হাজার মানুষ হত্যা, অবকাঠামো ধ্বংস, লক্ষ লক্ষ লোককে’ ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। ইসরাইলের এই অমানবিক যা সর্বোচ্চ ‘মানবাধিকার’ লঙ্ঘন।
সানচেজ বলেছেন, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় যে অত্যন্ত গুরুতর মানবিক সংকট চলছে, তাতে ৫৩ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত, ১ লক্ষ আহত এবং ২০ লক্ষ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছে।’ তিনি প্রথম থেকেই ইসরাইলি আক্রমণের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
বিশ্ব নেতাদের ‘গাজায় গণহত্যা বন্ধ করার জন্য ইসরাইলের ওপর আমাদের চাপ বৃদ্ধি করা উচিত, বিশেষ করে আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা আমাদের প্রদত্ত চ্যানেলের মাধ্যমে।’
সমাজতান্ত্রিক প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্পেন ‘জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি প্রস্তাব জমা দেবে যাতে আন্তর্জাতিক আদালতকে গাজায় মানবিক সহায়তা প্রবেশাধিকারের আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা মেনে চলার বিষয়ে রায় দিতে বলা হয়’। কারণ, গত ২ মার্চ থেকে গাজায় সাহায্য প্রবেশে ইসরাইল সম্পূর্ণভাবে অবরোধ আরোপ করেছে।
সানচেজ বলেছেন, স্পেন জাতিসংঘের আরেকটি খসড়া প্রস্তাবকেও সমর্থন করবে, যেখানে ইসরাইলকে ‘মানবিক অবরোধের অবসান’ এবং গাজায় ‘মানবিক সহায়তার পূর্ণ এবং অবাধ প্রবেশাধিকার’ নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।
গত ৭ মে, সানচেজ স্প্যানিশ পার্লামেন্টকে বলেছেন, মাদ্রিদ জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে একটি খসড়া প্রস্তাব পেশ করবে যার লক্ষ্য ‘গাজায় নিরীহ বেসামরিক নাগরিকদের হত্যা বন্ধে জরুরি ব্যবস্থা গ্রহণ এবং মানবিক সহায়তা প্রবেশ নিশ্চিত করা।’
শনিবার বাগদাদে ভাষণ দেওয়ার সময় তিনি বলেছেন, সংঘাতের ‘রাজনৈতিক সমাধান’ প্রচার করা একটি অগ্রাধিকার।
‘এই অঞ্চলে শান্তির একমাত্র পথ’ হল ইসরাইলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের ‘দুই-রাষ্ট্রীয় সমাধান বাস্তবায়ন’।
‘আমি আবারও অন্যান্য দেশগুলোকে ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আহ্বান জানাতে চাই।’
তিনি জুনে সৌদি আরবে দুই রাষ্ট্র সমাধানের ওপর একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের অগ্রগতির আশা প্রকাশ করেছেন, যা ‘একটি ঐতিহাসিক সুযোগ।’
কিন্তু সানচেজ বলেছেন, ‘এটি কেবল তখনই সফল হবে যদি সমগ্র আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় পদক্ষেপের দিকে পরিচালিত করে বিস্তৃত আরব এবং ইউরোপীয় ঐকমত্য থাকে।’
- ইউরোভিশনে বার্তা -
স্পেনের সরকারি সম্প্রচার কর্তৃপক্ষ শনিবার ইউরোভিশন গানের প্রতিযোগিতার আয়োজকদের অমান্য করে, গাজার আক্রমণাত্মক ঘটনা এড়াতে বা নিষেধাজ্ঞার ঝুঁকি নিতে সতর্ক করা সত্ত্বেও অনুষ্ঠানের কভারেজের আগে ফিলিস্তিনিদের সমর্থনে একটি বার্তা প্রচার করে।
‘মানবাধিকারের ক্ষেত্রে, নীরবতা কোনো বিকল্প নয়। ফিলিস্তিনের জন্য শান্তি এবং ন্যায়বিচার, ‘রেডিও এবং টেলিভিশন গ্রুপ ‘আরটিভিই’ গানের প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিক শুরুর কয়েক সেকেন্ড আগে কালো পটভূমিতে সাদা রঙে লিখেছিল।
ইউরোপীয় সম্প্রচার ইউনিয়ন (ইবিইউ) ‘আরটিভিই’কে শনিবার রাতের সম্প্রচারের সময় গাজা যুদ্ধের উল্লেখ না করার জন্য সতর্ক করেছিল, অন্যথায় শাস্তিমূলক ব্যবস্থার মুখোমুখি হতে হবে।
চিঠিতে ইবিইউ বলেছে, ‘প্রতিযোগিতার নিরপেক্ষতা ক্ষুণ্ন করতে পারে এমন রাজনৈতিক বক্তব্য নিষিদ্ধ, ‘এটি ‘মৌলিক’ যে প্রতিযোগিতা সম্প্রচারকারী সমস্ত দেশেই ভাষ্যকাররা ‘ব্যতিক্রম ছাড়াই এই নিয়মগুলোকে সম্মান করেন।’