ঢাকা, ১৮ মে, ২০২৫ (বাসস) : মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মিসৌরি, কেনটাকি ও ভার্জিনিয়া রাজ্যে প্রচণ্ড ঝড়ে কমপক্ষে ২৭ জনের প্রাণিহানি হয়েছে। এতে স্থানীয় সম্প্রদায় মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ২ লাখ লোক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। কর্তৃপক্ষ শনিবার এ তথ্য জানায়।
কেনটাকির গভর্নর অ্যান্ডি বেশিয়ারের উদ্ধৃতি দিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লন্ডন শহর থেকে এএফপি জানায়, শুক্রবার রাতে ঝড়ে কমপক্ষে ১৮ জন মারা গেছেন।
অন্যদিকে মিসৌরির স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, সেখানে আরও সাত জন মারা গেছেন।
স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে, ভার্জিনিয়ায় গাছ ভেঙে দুইজনের মৃত্যু হয়েছে।
ঝড়টি এলাকার ১শ’ থেকে ২শ’ ঘর ধ্বংস করে দেয়।
কেনটাকির লন্ডন শহরের একটি বাড়িতে স্বামী ও ছেলের সঙ্গে বসবাসকারী ৩৮ বছর বয়সী জেমি বার্নসকে তার বোনের ইটের তৈরি বাড়ির বেসমেন্টে আশ্রয় নিতে হয়। বার্নস এএফপিকে ফোনে সাক্ষাৎকারে বলেন, এখানে ৩০ বছরেরও বেশি সময় ধরে, যা ছিল সেগুলো এখন একেবারেই সমান হয়ে মিশে গেছে।
বার্নস বলেন, ‘এটা ছিল প্রচণ্ড, কারণ আপনি একটি এলাকার যে দিকে তাকাবেন দেখবেন ভেঙে ভেঙে একেবারে সমান হয়ে গেছে, যেন সেখানে আর কিছুই নেই।’
স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ড্রোন ফুটেজে লন্ডনে ধ্বংসযজ্ঞের দৃশ্যে দেখা গেছে, ঘরবাড়ি ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে এবং ডালপালাবিহীন গাছের গুঁড়ি খালি দাঁড়িয়ে আছে।’
বেশিয়ার আরও বলেন, রাজ্যে লক্ষাধিক মানুষ বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে এবং পাঁচটি কাউন্টি জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে।
স্টেট হাইওয়ে পেট্রোল এএফপিকে দেওয়া এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মিসৌরির প্রধান শহর সেন্ট লুইসে পাঁচজন ও স্কট কাউন্টিতে দুজন নিহত হয়েছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ৮০ হাজারেরও বেশি মানুষ বিদ্যুৎবিহীন হয়ে পড়েছে। ওই অঞ্চলে তিনটি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। রোববার রাত ও সোমবারে আরো তীব্র আবহাওয়ার পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
শনিবার একজন প্রতিবেদকের এক প্রশ্নের জবাবে, মেয়র কারা স্পেন্সার, এটিকে সেন্ট লুইসে আঘাত হানা সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড় বলে উল্লেখ করেন।
তিনি বলেন, ‘আমি অবশ্যই এটিকে সবচেয়ে ভয়াবহ ঝড়গুলোর মধ্যে একটি বলব। এর ধ্বংসযজ্ঞ সত্যিই হৃদয়বিদারক।’
দেশের সবচেয়ে দরিদ্র অঞ্চলগুলোর অন্যতম পূর্ব কেনটাকি ঐতিহাসিকভাবে কয়লা খনির জন্য প্রসিদ্ধ।
বার্নস বলেন, ‘আমাদের অনেকেই এমন বাড়িতে বাস করি যা টর্নেডো আবহাওয়ার জন্য নিরাপদ নয়।’
তিনি বলেন, শহরের ৩৮ জন আহত হয়েছেন এবং প্রায় ৫ হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিবিএস-এর ফুটেজে দেখা গেছে, সেন্ট লুইসের একটি পাড়ায় একটি গির্জা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং শনিবার সকালে উদ্ধারকর্মীরা ভবনের কাছে ক্ষতিগ্রস্তদের চিকিৎসা চালিয়ে যাচ্ছেন।