শিরোনাম
ঢাকা, ১৯ মে, ২০২৫ (বাসস) : চলতি সপ্তাহে ওয়াশিংটন সফরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট সিরিল রামাফোসার বৈঠকে দেশটির মূল লক্ষ্য থাকবে দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক টিকিয়ে রাখা। সোমবার এ কথা জানিয়েছেন সফরসঙ্গী এক মন্ত্রী।
‘অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ’ এই সফরে রামাফোসার সঙ্গে চারজন মন্ত্রিসভার সদস্য রয়েছেন এবং বুধবার হোয়াইট হাউসে ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁর বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে।
জোহানেসবাগ থেকে এএফপি জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারিতে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রিটোরিয়া ও ওয়াশিংটনের সম্পর্ক দ্রুত অবনতি ঘটেছে। এই সফরকে দুই দেশের মধ্যকার সম্পর্কোন্নয়নের প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষিমন্ত্রী জন স্টেনহুইসেন বলেন, ‘চাকরি রক্ষা, অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারণের স্বার্থে বাণিজ্য সম্পর্ক বজায় রাখা এখন সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার।’
যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার, শীর্ষে রয়েছে চীন।
গত এপ্রিল মাসে ট্রাম্পের ঘোষিত নতুন বাণিজ্য শুল্ক—যা পরবর্তী ৯০ দিনের জন্য স্থগিত করা হয়েছে, এর আওতায় দক্ষিণ আফ্রিকান পণ্যের ওপর ৩১ শতাংশ পর্যন্ত শুল্ক ধার্য করা হয়। এতে কিছু খাতে ব্যাপক কর্মহানীর আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
স্টেনহুইসেন আরও বলেন, আফ্রিকান দেশগুলোর জন্য যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার দেওয়া ‘আফ্রিকান গ্রোথ অ্যান্ড অপরচুনিটি অ্যাক্ট’ (এজিওএ) নিয়ে তাদের বিশেষ উদ্বেগ রয়েছে।
আগামী সেপ্টেম্বর মাসে নবায়নের মেয়াদ থাকা এই বাণিজ্য সুবিধা বাতিল করতে পারে ট্রাম্প প্রশাসন, এমন আশঙ্কা রয়েছে।
তিনি বলেন, ‘এজিওএ’র মতো বাণিজ্যিক সুবিধা আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। এই সুবিধা হারালে কৃষক, কৃষি শ্রমিক এবং সামগ্রিক অর্থনীতি ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে।’’
দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্তমানে বেকারত্বের হার প্রায় ৩২ শতাংশ, ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি রামাফোসা সরকারের অন্যতম অগ্রাধিকার।
সফরের আরেকটি উদ্দেশ্য হলো দক্ষিণ আফ্রিকায় তথাকথিত ‘শ্বেত গণহত্যা’ নিয়ে ছড়ানো ষড়যন্ত্রমূলক বক্তব্য খণ্ডন করা। প্রেসিডেন্টের মুখপাত্র ভিনসেন্ট মাগবেন্য বলেন, ‘এই ধরনের অভিযোগ পুরোপুরি মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
গত সপ্তাহে ট্রাম্প প্রশাসন দক্ষিণ আফ্রিকার সংখ্যালঘু আফ্রিকানার (শ্বেত) সম্প্রদায়ের অন্তত ৫০ জনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তারা দাবি করে, সংখ্যাগরিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গদের হাতে শ্বেতদের অস্তিত্ব হুমকির মুখে।
স্টেনহুইসেন, যিনি প্রো-বিজনেস ডেমোক্র্যাটিক অ্যালায়েন্স (ডিএ) দলের নেতা, গত বছরের নির্বাচনের পর রামাফোসার গঠিত জাতীয় ঐক্য সরকারে যোগ দিয়েছেন।
সফরে রামাফোসা নভেম্বর মাসে জোহানেসবার্গে অনুষ্ঠেয় জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে ট্রাম্পের অংশগ্রহণ নিশ্চিতে উদ্যোগী হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। ওই সম্মেলনে যোগ না দেওয়ার হুমকি দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
