ঢাকা, ৪ জুলাই, ২০২৫ (এএফপি) : গাজা মানবিক ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)-এর ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্র ও কনভয় ঘিরে গত ২৬ মে থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত সময়ে অন্তত ৬১৩ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তর। এর মধ্যে ৫০৯ জন নিহত হয়েছেন মার্কিন ও ইসরাইল-সমর্থিত জিএইচএফ-এর বিতরণস্থলগুলোর আশপাশে।
ইসরাইল গাজায় দুই মাসের বেশি সময় ধরে সরবরাহ বন্ধ রাখার পর ২৬ মে থেকে ‘জিএইচএফ’ কার্যক্রম শুরু করে, যা একটি ‘বেসরকারি’ উদ্যোগ বলে দাবি করা হলেও এর কার্যক্রমে অরাজকতা, গুলিবর্ষণ ও মৃত্যু নিত্যদিনের ঘটনা হয়ে দাঁড়ায়।
জেনেভা থেকে এএফপি জানায়, জাতিসংঘের মানবাধিকার দপ্তরের মুখপাত্র রবিনা শামদাসানি শুক্রবার জেনেভায় জানান, ‘জিএইচএফ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে ২৭ জুন দুপুর পর্যন্ত আমরা মোট ৬১৩ জন নিহত হওয়ার ঘটনা নথিভুক্ত করেছি। এর মধ্যে ৫০৯ জন জিএইচএফ-এর ত্রাণ বিতরণস্থলের আশেপাশে নিহত হয়েছেন।’
বাকি নিহতরা জাতিসংঘ ও অন্যান্য সংস্থার কনভয় এলাকায় নিহত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
শামদাসানি আরও বলেন, নতুন করে অনেক মৃত্যুর খবর পাওয়া যাচ্ছে যা যাচাই করা হচ্ছে। ‘আমরা হয়তো কখনোই পুরো চিত্র জানতে পারব না, কারণ আমাদের সেখানে প্রবেশাধিকার নেই।’
তিনি বলেন, ‘ইসরাইলি সেনাবাহিনী ত্রাণ সংগ্রহের চেষ্টা করা ফিলিস্তিনিদের লক্ষ্য করে গোলা ও গুলিবর্ষণ করেছে, এটি এখন স্পষ্ট। তবে কতজন নিহত হয়েছেন, কে দায়ী, তা জানতে তদন্ত দরকার। আমাদের সেখানে যেতে দিতে হবে। একটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন দরকার, এবং এসব হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ীদের জবাবদিহির আওতায় আনতে হবে।’
জিএইচএফ-কে ঘিরে বিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। জাতিসংঘ ও বড় মানবিক সংস্থাগুলো জিএইচএফ-এর সঙ্গে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তাদের মতে, জিএইচএফ ইসরাইলি সামরিক লক্ষ্য পূরণে গঠিত এবং এটি মানবিক নীতিমালার লঙ্ঘন করছে।
জিএইচএফ-এর প্রধান জনি মুর একজন ইভানজেলিক খিস্টান নেতা। তিনি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত।
জিএইচএফ জানিয়েছে, তারা গাজায় ১০ লাখের বেশি খাদ্যবক্স বিতরণ করেছে। ব্রাসেলসে এক সংবাদ সম্মেলনে জনি মুর দাবি করেন, ‘আমাদের বিতরণকেন্দ্রে কোনো সহিংসতা ঘটেনি, এমনকি তার আশপাশেও না।’
তবে জাতিসংঘের হিসাব এবং মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতা তার এই বক্তব্যের বিপরীত চিত্রই তুলে ধরছে।