ঢাকা, ৪ জুলাই, ২০২৫ (বাসস) : পাকিস্তানের লাহোরে এক পোষা সিংহ মালিকের বাসা থেকে পালিয়ে এক নারী ও দুই শিশুকে রাস্তায় তাড়া করে হামলা চালিয়েছে বলে শুক্রবার জানিয়েছে পুলিশ। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বিশাল আকৃতির প্রাণীটি দেয়াল টপকে রাস্তায় নেমে তাদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে।
পাকিস্তানের লাহোর থেকে এএফপি জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে ধারণ করা এক ভিডিওতে দেখা যায়, এক নারী বাজারের ব্যাগ হাতে হেঁটে যাওয়ার সময় সিংহটি তার পেছনে ছুটে আসে। একপর্যায়ে সিংহটি তার পিঠে লাফিয়ে পড়ে এবং তাকে মাটিতে ফেলে দেয়।
পুলিশি প্রতিবেদনে বলা হয়, আক্রান্ত নারীর স্বামীর ভাষ্য অনুযায়ী, সিংহটি পরে তাদের পাঁচ ও সাত বছর বয়সী দুই সন্তানের ওপর হামলা চালায় এবং তাদের মুখ ও হাতে আঁচড় দেয়। তিনজনকেই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে, তবে কেউ আশঙ্কাজনক অবস্থায় নেই বলে জানানো হয়েছে।
ওই ব্যক্তি অভিযোগ করেন, সিংহটির মালিকরা ঘটনাস্থলে ছুটে এলেও তারা ‘আনন্দিত হয়ে’ তাদের সিংহকে পথচারীদের আক্রমণ করতে দেখে হাসছিলেন।
পুলিশ জানায়, শুক্রবার ঘটনার সঙ্গে জড়িত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। লাহোর মহানগর পুলিশের উপ-মহাপরিদর্শক (অপারেশনস) কার্যালয় এএফপিকে জানায়, ‘ঘটনার পর অভিযুক্তরা সিংহটি নিয়ে পালিয়ে যায়। তবে ঘটনার ১২ ঘণ্টার মধ্যে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে।’
পুলিশ ১১ মাস বয়সী এ পুরুষ সিংহটি জব্দ করে একটি বন্যপ্রাণী উদ্যানে পাঠিয়েছে। সেখানকার কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, প্রাণীটি সুস্থ রয়েছে।
পাকিস্তানের পাঞ্জাব প্রদেশে বহুদিন ধরেই বিলাসিতা ও ক্ষমতার প্রতীক হিসেবে বড় বন্য প্রাণী, বিশেষ করে সিংহ ও বাঘ পোষার রীতি প্রচলিত।
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে লাহোরের আরেকটি এলাকায় একটি প্রাপ্তবয়স্ক সিংহ খাঁচা থেকে পালিয়ে গিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছিল। এক নিরাপত্তারক্ষী পরে সেটিকে গুলি করে হত্যা করে।
ওই ঘটনার পর প্রাদেশিক সরকার বড় বিড়াল প্রজাতির প্রাণীর বিক্রয়, পালন ও মালিকানা নিয়ন্ত্রণে নতুন আইন প্রণয়ন করে।
নতুন আইনে এসব প্রাণী রাখার জন্য লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে এবং আবাসিক এলাকায় রাখায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে।
প্রজনন খামার পরিচালনার জন্য রেজিস্ট্রেশনে বড় অঙ্কের ফি ধার্য করা হয়েছে এবং খামারের ন্যূনতম আকার হতে হবে ১০ একর।