
ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : একসময়ের বিলাসবহুল ‘আরাফাত ভিলা’ই এখন গাজার বাস্তুচ্যুত কয়েকটি পরিবারের মাথা গোছার ঠাঁই। যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাটিতে অন্যান্য ভবনের মতই ধ্বংসপ্রায় অবস্থায় দাঁড়িয়ে আছে প্রয়াত ফিলিস্তিনি নেতা ইয়াসির আরাফাতের এই বাসভবন।
ক্ষতিগ্রস্থ দেয়াল, পুড়ে যাওয়া জিনিসপত্র, এমনকি ধুলোবালিতেও আজও সেখানে ইয়াসির আরাফাতের সঙ্গে জড়িত ইতিহাসের ছাপ বহন করছে। এখন সেই ধ্বংসস্তূপের মধ্যেই কিছু মানুষ নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে।
গাজা সিটি থেকে এএফপি এ খবর জানায়।
২০০৪ সালে আরাফাতের মৃত্যুর পর বাড়িটি জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়েছিল। এএফপি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, সেখানে তার স্মৃতি রক্ষার্থে তৈরি করা ম্যুরালের আশেপাশেও ধ্বংসস্তূপ পড়ে আছে।
এটি গাজা সিটির রিমাল এলাকায় অবস্থিত এবং দু’বছর ধরে চলা যুদ্ধে ইসরাইলি বিমান হামলায় ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের আকস্মিক হামলার পর এই যুদ্ধ শুরু হয়।
আশরাফ নাফেথ আবু সালেম নামে এক বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপকসহ আরও কয়েকটি পরিবার ওই বাসভবনে আশ্রয় নিয়েছেন।
সালেম জানান, তিনি বাড়িটির আঙিনার ধ্বংসস্তূপ সরানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, যেগুলোর বেশিরভাগই পুড়ে গেছে।
ভিলার সামনের ধাতব দরজাটি রাস্তার দিকে মুখ করা। সেখানে এখনও আরাফাতের পোস্টার লাগানো রয়েছে। সেই পোস্টারেও তার অতি পরিচিত কেফিয়ে আর চশমা পরিহিতি ছবি দেখা যাচ্ছে।
সেটির ঠিক পেছনে ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের বর্তমান প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাসের ছোট একটি ছবিও চোখে পড়ে।
পাশেই পড়েছিল হলদেটে প্রচ্ছদের পুরোনো একটা বই। সেটি হাতে নিয়ে উল্টেপাল্টে দেখছিলেন আবু সালেম। বইটিতেওে আরাফাতের ছবি আছে।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রথম ইন্তিফাদা (১৯৮৭) প্রজন্মের। আমরা বড় হয়েছি পাথর ছুড়ে প্রতিরোধ করার মধ্য দিয়ে। রাষ্ট্রপতি আবু আম্মার আমাদের জন্য ফিলিস্তিন জাতীয় সংগ্রামের মডেল ও প্রতীক ছিলেন।’
ইন্তিফাদা আরবি শব্দ, যার অর্থ ‘জাগরণ’ বা ‘প্রতিরোধের আন্দোলন।’ এটি সাধারণত ব্যবহৃত হয় ফিলিস্তিনিদের দ্বারা ইসরাইলি দখল বিরোধী গণ-প্রতিবাদ বা বিদ্রোহ বোঝাতে।
জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, দুই বছরের যুদ্ধে গাজা ভূখণ্ডের তিন-চতুর্থাংশ ভবন ধ্বংস হয়েছে। ফলে তৈরি হয়েছে ৬১ মিলিয়ন টনের বেশি ধ্বংসাবশেষ।