
ঢাকা, ২ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট আহমেদ আল-শারা চলতি মাসের শেষের দিকে ওয়াশিংটনে প্রথমবারের মতো আনুষ্ঠানিক সফর করবেন। দেশটির ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার, পুনর্গঠন এবং সন্ত্রাসবিরোধী কার্যক্রমসহ বিভিন্ন বিষয়ে এ সময় আলোচনা করবেন তিনি।
বাহরাইনের মানামা থেকে বার্তা সংস্থা এএফপি জানায়, রোববার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদ আল-শাইবানি এ তথ্য জানিয়েছেন।
আসাদ আল-শাইবানি বাহরাইনের মানামা ডায়ালগে এক প্যানেল আলোচনায় বলেন, আহমেদ আল-শারা নভেম্বরের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটনে যাবেন। এই সফর নিঃসন্দেহে ঐতিহাসিক।
শাইবানি আরও বলেন, অনেক বিষয়ে আলোচনা হবে, শুরু হবে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার দিয়ে। বর্তমানে আমরা ইসলামিক স্টেটের (আইএস) বিরুদ্ধে লড়াই করছি। এই বিষয়ে যেকোনো প্রচেষ্টার জন্য আন্তর্জাতিক সহায়তা প্রয়োজন। এক দশকেরও বেশি সময় ধরে চলা যুদ্ধের পর পুনর্গঠন নিয়েও আলোচনা হবে।
সিরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এটি হবে কোনো সিরীয় প্রেসিডেন্টের হোয়াইট হাউসে প্রথম সফর।
গতকাল শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের সিরিয়া বিষয়ক দূত টম ব্যারাক বলেন, শারা ওয়াশিংটনে যাচ্ছেন। আশা করা হচ্ছে, তিনি মার্কিন নেতৃত্বাধীন আইএস বিরোধী আন্তর্জাতিক জোটে যোগদানের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করবেন।
শারা প্রথম ওয়াশিংটন সফর করলেও এটি তার দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্র সফর। এর আগে সেপ্টেম্বর মাসে জাতিসংঘে এক ঐতিহাসিক সফরে তিনি নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে প্রথম সিরীয় প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভাষণ দেন।
সিরিয়ার দীর্ঘদিনের শাসক বাশার আল-আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর গত মে মাসে অন্তর্বর্তীকালীন এই নেতা রিয়াদে এক ঐতিহাসিক সফরে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে প্রথমবার সাক্ষাৎ করেন। ওই সফরে ট্রাম্প সিরিয়ার ওপর অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রতিশ্রুতি দেন।
সিরিয়া ও ইসরাইল এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে যুদ্ধে রয়েছে। তবে, গত ডিসেম্বরে ইসলামপন্থী নেতৃত্বাধীন জোট আসাদকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর তারা সরাসরি আলোচনা শুরু করেছে।
ট্রাম্প আশা প্রকাশ করেন, সিরিয়া অন্যান্য আরব দেশের মতো ইসরাইলের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার জন্য আব্রাহাম চুক্তিতে যোগ দেবে।
তবে শাইবানি বলেন, ‘সিরিয়া ও আব্রাহাম চুক্তি নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি এবং এটি বিবেচনাধীন নয়।’
সিরিয়ার একজন কর্মকর্তা এএফপিকে এ বছরের শুরুর দিকে বলেছিলেন, সিরিয়া ২০২৫ সালের মধ্যে ইসরাইলের সঙ্গে নিরাপত্তা ও সামরিক চুক্তি চূড়ান্ত করতে চায়। গত ডিসেম্বর থেকে ইসরাইল জাতিসংঘ-নিয়ন্ত্রিত একটি বাফার জোনে সেনা মোতায়েন করেছে।
শাইবানি বলেন, ‘আমরা চাই না সিরিয়া নতুন কোনো যুদ্ধে জড়াক এবং সিরিয়া বর্তমানে কোনো পক্ষের জন্য এমনকি ইসরাইলের জন্যও হুমকি নয়।’
তিনি বলেন, ‘চলমান আলোচনা একটি নিরাপত্তা চুক্তিতে পৌঁছানোর ওপর কেন্দ্রীভূত, যা ১৯৭৪ সালের চুক্তিকে (যা ইসরাইলের সঙ্গে যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করেছিল) ক্ষুণ্ন করবে না এবং ইসরাইল দক্ষিণে নতুন কোনো বাস্তবতা চাপিয়ে দিতে চাইলে তার বৈধতা দেবে না।’