
ঢাকা, ৪ নভেম্বর, ২০২৫ (বাসস) : চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াং ই জার্মানির ‘মাইক্রোফোন কূটনীতি’র সমালোচনা করে দেশটিকে সতর্ক করে বলেছেন, তারা যেন ‘মাইক্রোফোন কূটনীতি’ না করে।
অর্থাৎ, গণমাধ্যমে প্রকাশ্যে মন্তব্য না করে, দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে সরাসরি আলোচনা করে।
জার্মান পররাষ্ট্রমন্ত্রী জোহান ওয়াডেফুলের চীন সফর বাতিল হওয়ার পরপরই এমন মন্তব্য এসেছে।
গত অক্টোবরে বার্লিন জানায়, বৈঠকের সময়সূচি ঠিক না হওয়ায়, সফরটি স্থগিত করা হয়েছে।
খবর বার্তা সংস্থা এএফপি’র।
জার্মান পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র বলেন, ‘চীন শুধু পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করতে পেরেছিল। অন্য কোনো বৈঠকের সময় ঠিক করা যায়নি।’
ওয়াডেফুলের সফরে চীনের বাণিজ্যিক বিধিনিষেধ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা ছিল। বিশেষ করে দুর্লভ খনিজ ও সেমিকন্ডাক্টর রপ্তানির বিষয়টি নিয়ে।
সোমবার ওয়াং ওয়াডেফুলের সঙ্গে ফোনে কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘জার্মানি যেন অবাস্তব ও ভিত্তিহীন অভিযোগ না তোলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বার্লিনকে ‘মাইক্রোফোন কূটনীতি’ থেকে বিরত থাকতে হবে।’
ওয়াং বলেন, ‘চীন ও জার্মানির উচিত এমন একটি স্থিতিশীল ও টেকসই নীতি কাঠামো গড়ে তোলা, যাতে দুই দেশের সম্পর্ক সব সময় সঠিক পথে থাকে।’
চীন ও জার্মানি বিশ্বের দ্বিতীয় ও তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি। তারা দীর্ঘদিন ধরে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রেখেছে, বিশেষ করে ব্যবসা-বাণিজ্যে।
তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নানা বিষয়ে দুই দেশের সম্পর্কে টানাপোড়েন দেখা দিয়েছে।
এর মধ্যে রয়েছে চীনের বিরুদ্ধে বাণিজ্য অনিয়মের অভিযোগ ও মানবাধিকার ইস্যু।
একদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্ক নীতির কারণে জার্মান রপ্তানিকারকরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। অন্যদিকে চীনের রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ, বিশেষ করে দুর্লভ খনিজ ও মাইক্রোচিপের ওপর বিধিনিষেধও তাদের ভোগান্তি বাড়িয়েছে।
গত বৃহস্পতিবার ট্রাম্প ও চীনের প্রেসিডেন্ট সি চিনপিংয়ের বৈঠকের পর শুক্রবার ও শনিবার ব্রাসেলসে চীন ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কর্মকর্তারা রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আলোচনা করেন বলে জানিয়েছে সিনহুয়া।
ওয়াং আরও বলেন, ‘ওয়ান-চায়না’ নীতি চীন-জার্মানি সম্পর্কের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি।
ওয়াং বলেন, ‘চীন একসময় জার্মানির পুনঃএকত্রীকরণে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়েছিল।’
তিনি আরো বলেন, আমরা আশা করি, বিভক্তির যন্ত্রণা যারা এক সময় অনুভব করেছে, সেই জার্মানি এখন চীনের সার্বভৌমত্ব ও ভৌগোলিক অখণ্ডতা রক্ষার প্রচেষ্টাকে বুঝবে ও সমর্থন দেবে।