ঢাকা, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : পাঁচ সংস্কার কমিশনের দেয়া সংস্কার প্রস্তাবনা ও সুপারিশমালা নিয়ে আলোচনা করতে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের মধ্যে বৈঠক হয়েছে।
আজ ঢাকায় সংসদ ভবনের এল.ডি হলে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সাথে ২১তম রাজনৈতিক দল হিসেবে আলোচনায় যোগ দেয় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি ।
সভায় সভাপতিত্ব করেন কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। এ সময় কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. বদিউল আলম মজুমদার, সফর রাজ হোসেন এবং প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকের নেতৃত্বে ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি প্রতিনিধিদল এ আলোচনায় অংশ নেয়। এতে দলটির রাজনৈতিক পরিষদের সদস্য বহ্নিশিখা জামালী, আকবর খান, আবু হাসান টিপু, আনছার আলী দুলাল, মীর মোফাজ্জল হোসেন মুশতাক, মাহমুদ হোসেন ছাড়াও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রাশিদা বেগম, সাইফুল ইসলাম ও শেখ মোহাম্মদ শিমুল উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনায় জানানো হয়, যা ইচ্ছে তাই করতে পারবে না-এমন একটি সরকার ও রাষ্ট্র ব্যবস্থা চায় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, আমরা এমন একটি রাষ্ট্র, সমাজ ও সংবিধান চাই যেখানে ধর্মীয় ও সামাজিক বিশ্বাসের কারণে কোনো মানুষ বঞ্চিত হবে না।
একইসঙ্গে, দলের পক্ষ থেকে জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষার পাশাপাশি ছাত্র-জনতার গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলনের যথাযথ ফলাফল নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি।
সূচনা বক্তব্যে কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, কমিশন একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা তৈরি করতে চায়। জুলাই আগস্টে যে গণতন্ত্রের জন্য মানুষ লড়াই করেছে সেই গণতন্ত্র তৈরির একটি রূপরেখা এবং বৈষম্যবিরোধী একটি সামাজিক ও সাংবিধানিক কাঠামো তৈরি তৈরি করতে চায় কমিশন।
উল্লেখ্য, গত ২৭ মার্চ জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দেয়া স্প্রেডশিটে বিভিন্ন সংস্কার কমিশনের ১৬৬ টি সুপারিশের মধ্যে ১২২ টির সাথে একমত হয় বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি।
বাদবাকি ২১ টি আংশিক একমত ও ২৩ টি দ্বিমতের বিষয় নিয়ে আজ আলোচনা হয়। আলোচনার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিষয়গুলো ছিল- সরকার, রাষ্ট্রপ্রধান ও সংসদের মেয়াদ ৫ না ৪ বছর হবে, সরকারপ্রধান, দলীয়প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী একই ব্যক্তি হবেন কি না, দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট সংসদ, সংসদ সদস্য হওয়ার জন্য প্রার্থীর বয়স, নির্বাচন সংস্কার ব্যবস্থা ইত্যাদি।
উল্লেখ্য, প্রথম পর্যায়ে গঠিত সংস্কার কমিশনগুলোর মধ্যে সংবিধান সংস্কার কমিশন, জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন, নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশন, বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশন এবং দুর্নীতি দমন কমিশন সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনে উল্লেখিত গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশগুলোর ওপর রাজনৈতিক দলের সুনির্দিষ্ট মতামত জানাতে অনুরোধ করে সুপারিশগুলোর স্প্রেডশিট আকারে ৩৯টি রাজনৈতিক দলের কাছে পাঠানো হয়। ইতোমধ্যে সংস্কার বিষয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন ৩৫টি দলের কাছ থেকে মতামত পেয়েছে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টিসহ এ পর্যন্ত ২১টি রাজনৈতিক দল কমিশনের সাথে আলোচনায় অংশ নিয়েছে।