আল-আমিন শাহরিয়ার
ভোলা, ২১ মে, ২০২৫ (বাসস) : কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে জেলার খামারিরা তাদের গরু পরিচর্যা ও মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছে। প্রাকৃতিক উপায়ে সবুজ ঘাস, খৈল, কুটা, দানাদার খাদ্য ও দেশীয় স্বাস্থ্য সম্মত খাবারের মাধ্যমে গরুগুলোকে হৃষ্টপুষ্ট করার কাজে সার্বক্ষণিক নিয়োজিত থাকতে হচ্ছে তাদের।
জেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তরের দেয়া তথ্যমতে, জেলার ৭ উপজেলায় কোরবানির জন্য এবার ১লাখ ২ হাজার ৭ শ ৬৯ টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। জেলায় গরুর চাহিদা আছে ৯০ হাজার ২ শ ৬৩ টি গরু। তথ্য অনুযায়ী স্থানীয় চাহিদা মিটিয়েও উদ্বৃত্ত থাকবে ১২ হাজার ৫ শত ৬ টি গরু।
এদিকে গরুর খামারিরা জানিয়েছেন, অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গোখাদ্যের দাম অনেক বেশি। তাই গরু মোটাতাজাকরণে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। তবুও ভালো মূল্যে গরু বিক্রি করতে পারলে লোকসান কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে মনে করেন তারা। কিন্তু ভারতীয় গরুগুলো যদি বাজার দখলে নেয় তাহলে এবার কোরবানিতে এখানকার খামারিদের মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হবে।
ভোলা সদরের আলীনগর এলাকার খামারি টিমন মিয়া জানান,তার খামারে এবার কোরবানির জন্য অর্ধশত গরু প্রস্তুত রাখা হয়েছে। দুই একটি বিক্রি হলেও এখনো ক্রেতাদের সারা মিলছেনা। তিনি জানান, বাজারে ভারতীয় গরু ঢুকলে তাদের দেশীয় জাতের গরুগুলো বিক্রি হবেনা। লোকসানের ঘানি টানতে হবে।
সদর উপজেলার চর আনন্দ গ্রামের আক্তার ডেইরি ফার্মের মালিক আক্তার হোসেন জানান, তার খামারে এবার দেশীয় জাতের শতাধিক গরু প্রস্তুত রয়েছে। অনেক ক্রেতা আসলেও এখনো একটি গরুও বিক্রি করতে পারেননি। তবে অসাধু চক্র ভারতীয় গরু ও বিষাক্ত কেমিক্যাল দ্বারা মোটাতাজা করে গরুগুলো বাজারে আনলে তাদের বিপাকে পড়তে হবে। কেননা প্রতারক চক্রের ভেল্কীবাজিতে ক্রেতারা দেশীয় পুষ্ট গরু ও বিষাক্ত কেমিক্যালযুক্ত গরু চিনে উঠতে পারেন না।
প্রাণী সম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, ভোলার সাত উপজেলায় ছোটবড় মিলিয়ে প্রায় বিশ হাজার গরুর খামার আছে। প্রতিটি খামারেই পর্যাপ্ত পরিমাণ দেশীয় গরু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে। কেমিক্যাল ব্যবহারের মাধ্যমে গরু মোটাতাজাকরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে মাঠে রয়েছে প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তরের একাধিক টিম। এ টিমের সদস্যরা জেলার প্রান্তিক পর্যায়ে মনিটরিং করছে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।
ভোলা জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম খাঁন বাসসকে জানান, এবার জেলায় ১লাখ ২ হাজার ৭ শত ৬৯ টি গরু প্রস্তুত রয়েছে, যা চাহিদার তুলনায় বেশি। বাস্তবে গরুর চাহিদা রয়েছে, ৯০ হাজার ২ শত ৬৩ টি। তিনি বলেন, জেলার প্রতিটি গরুর হাটে আমাদের বেশ কয়েকটি মনিটরিং টিম কাজ করবে। পাশাপাশি পশু চিকিৎসা ও কেমিক্যাল দ্বারা মোটাতাজা করা গরু চিহ্নিত করতে ভেটেরেনারি চিকিৎসক দল নিয়োজিত থাকবে।