ঢাকা, ১৭ এপ্রিল, ২০২৫ (বাসস) : জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আব্দুর রহমান খান বৃহস্পতিবার স্পষ্টভাবে বলেছেন, সরকার স্থানীয় উৎপাদকদের সুবিধার্থে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।
তিনি বলেছেন, ‘আমরা বলেছি নীতিগতভাবে আমাদের নির্মাতারা এবং বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের মধ্যে শুল্ক ব্যবধান থাকবে।’
রাজধানীর রাজস্ব ভবনের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত প্রাক-বাজেট সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
রাজস্ব বোর্ডের প্রধান বলেন, সৎ ও অনুগত ব্যবসায়ীদের পথ থেকে সকল বাধা দূর করতে হবে এনবিআরকে।
তিনি সতর্ক করে বলেছেন, ‘কিন্তু শুধু একটা কথা মনে রাখবেন, যদি কেউ কোনো সুযোগ-সুবিধার অপব্যবহার করে, তাহলে সেই ব্যক্তিকে আর বাংলাদেশে ব্যবসা করতে দেওয়া হবে না।’
এনবিআর চেয়ারম্যান আরো উল্লেখ করেছেন, দেশে অধিক রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য তার সংস্থা সবকিছু করতে প্রস্তুত।
দেশে মূল্য সংযোজন কর নিবন্ধনের সংখ্যা কম থাকায় অসন্তোষ প্রকাশ করে আবদুর রহমান খান বলেছেন, ছয় লাখের নিচে ভ্যাট নিবন্ধিত নম্বর থাকার কোনো কারণ নেই।
তিনি বলেছেন, ‘এই সংখ্যাটি অনেক দিন আগেই এক কোটি ছাড়িয়ে যাওয়ার কথা ছিল।’
এই প্রসঙ্গে রহমান বলেছেন, ভ্যাট-নিবন্ধিত ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য এনবিআর নিজস্ব একটি ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) স্থাপন করেছে এবং পরে চিত্তাকর্ষক ফলাফল পাওয়ার পর এটি তৃতীয় পক্ষকে দিয়েছে।
খান বলেছেন, ‘কিন্তু সেটাও ভালোভাবে করতে ব্যর্থ হয়েছে। আমরা এখন বিভিন্ন ধরনের বিকল্প নিয়ে কাজ করছি। আপনি দ্রুত ফলাফল দেখতে পাবেন।’
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, দেশের কর-জিডিপি অনুপাত খুবই কম হওয়ায় তিনি উন্নয়ন অংশীদারদের চাপের মধ্যে রয়েছেন।
এনবিআর প্রধান বলেছেন, ‘সকাল ও সন্ধ্যায় উন্নয়ন অংশীদাররা আমাকে এই খুব কম অনুপাতের জন্য চাপ দিচ্ছে। বাস্তবতা খুবই সত্য, বিশ্বের কোনো দেশ এত কম রাজস্ব আদায় করে না।’
বাংলাদেশের কর-জিডিপি অনুপাত ৭ দশমিক ৩ শতাংশ যা ভারত (১২%), নেপাল (১৭.৫%), ভুটান (১২.৩%) এবং পাকিস্তান (৭.৫%) এর মতো প্রতিবেশী দেশগুলোর তুলনায় উল্লেখযোগ্যভাবে কম। এই নিম্ন অনুপাত স্বাস্থ্য, শিক্ষা এবং সামাজিক সুরক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ খাতে সরকারের বিনিয়োগের ক্ষমতাকে বাধাগ্রস্ত করে। যার ফলে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি প্রভাবিত এবং দারিদ্র্য ও বৈষম্য স্থায়ী হয়।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড কর ফাঁকি লক্ষ্য করে এবং সম্মতি বৃদ্ধি করে এই অনুপাত উন্নত করার জন্য সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। বর্তমানে, প্রায় ১ কোটি ১৪ লক্ষ করদাতা শনাক্তকরণ নম্বর (টিআইএন) ধারকদের মধ্যে মাত্র ৪০ লাখ তাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিয়েছেন।
ঘাটতি পূরণ এবং রাজস্ব আদায় বাড়ানোর প্রচেষ্টা চলছে।