পেস বোলিংয়ের পুনরুত্থানে তীব্র প্রতিযোগিতার মুখে পেসাররা

বাসস
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১২:৪৩ আপডেট: : ১৭ আগস্ট ২০২৫, ১৩:৪৩

ঢাকা, ১৭ আগস্ট ২০২৫ (বাসস) : পেস বোলিংয়ের পুনরুত্থান, বাংলাদেশের পেসারদের জন্য একটি অম্লমধুর পরিস্থিতি তৈরি করেছে। 

কোন পেসার ফর্মে না থাকলে দলে নিজের জায়গা পাকা করার জন্য অন্য বোলারদের মধ্যে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক পরিবেশ সৃষ্টি হয়।  

শুধুমাত্র টেস্ট খেলেন সৈয়দ খালেদ আহমেদ। তাই টেস্ট বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তিনি। ক্যারিয়ারে এখন পর্যন্ত মাত্র একটি টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলেছেন খালেদ।

একটি মাত্র টি-টোয়েন্টি থেকে দেখা যায় এই ফরম্যাটের দক্ষতা রপ্ত করতে পারেননি এই ডান-হাতি পেসার। 

কিন্তু বিষয়টি ঠিক তেমন নয়। গত বিপিএল এবং গ্লোবাল সুপার লিগে (জিএসএল) রংপুর রাইডার্সের হয়ে ভালো খেলেছেন খালেদ। সম্প্রতি বিভিন্ন দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটের সেরা দলগুলোর বিপক্ষে জিএসএল চার ম্যাচ খেলে ৭.৮২ গড়ে ১১ উইকেট নিয়েছেন তিনি। 

কিন্তু বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি দলে নেই খালেদ। কারণ অন্যান্য বোলাররা ধারাবাহিকভাবে ভালো করছে। নিজের ভাগ্যকে মেনে নিয়ে খালেদ বলেন, ‘অবশ্যই, প্রতিযোগিতা থাকা ভালো। এটা যেকোন দেশের জন্য ইতিবাচক বিষয়।’

জাতীয় দলের দায়িত্ব পালনের জন্য নিজেকে সবসময় প্রস্তুত রাখার অঙ্গীকার করেন খালেদ। তিনি বলেন, ‘যখন প্রতিযোগিতার মধ্যে থাকি, তখন কঠোর পরিশ্রম করার আগ্রহ অনেকখানি বেড়ে যায়। আমি সবসময় নিজেকে প্রস্তুত রাখার চেষ্টা করছি।’

বাংলাদেশে এখন অন্তত ১০ জন পেসার আছে, যারা যেকোন ফরম্যাটে খেলতে পারে। বোলারদের ফিট এবং সতেজ রাখতে তাদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে খেলানোর চেষ্টা করে টিম ম্যানেজমেন্ট।

পেসারদের ফিটনেস ব্যবস্থাও পরিবর্তিত হয়েছে। বাংলাদেশের পেস বোলিং পুনরুত্থানে ফিটনেস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।

ফিটনেসের বিষয়টি তুলে ধরে খালেদ বলেন, ‘আমার ক্ষেত্রে আমি বলতে পারি, আমি আমার ফিটনেস উন্নত করার চেষ্টা করছি যাতে অন্যদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে পারি।

এটি আমাকে অনুপ্রাণিত করে। যদি আমি পিছিয়ে পড়ি, তাহলে অনেক বেশী পিছিয়ে যাব। আমি অন্যদের থেকে এগিয়ে থাকার চেষ্টা করি।’

ফিটনেস ধরে রাখার পথ দেখিয়েছেন আরেক পেসার তাসকিন আহমেদ। প্রায়ই ইনজুরি আক্রান্ত এবং ক্যারিয়ারের শুরুতে বেশিরভাগ সময় অনিয়মিত থাকতেন তিনি।

কোভিড-১৯ এর সময় নিজেকে পুরোপুরিভাবে বদলে ফেলেন এই পেসার। ফিটনেস এবং নিয়মিত জিম করে নিজেকে ফিট করে তুলেন তাসকিন। বাংলাদেশের পেস বোলিং পুনরুত্থানে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাসকিনই।

ফিটনেসকে সবচেয়ে বেশি অগ্রাধিকার দিচ্ছেন শরিফুল ইসলাম, মুস্তাফিজুর রহমান, তানজিম হাসান সাকিবের মতো খেলোয়াড়রা। গত দুই বছরে খুব কম সময় অফ-ফর্মের মুখোমুখি হয়েছেন এই বোলাররা।

বাংলাদেশের জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছেন হাসান মাহমুদের মত পেসার। বল হাতে দু’দিকেই সুইংয়ে পারদর্শী তিনি। দলের বোলিং আক্রমণে বৈচিত্র্য আনতে ভূমিকা রাখেন হাসান। 

দীর্ঘদিন ইনজুরির কারণে অনুপস্থিত থাকার পর সম্প্রতি ক্রিকেটে ফিরেছেন পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে বিবেচিত মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। তার অন্তর্ভুক্তি পেস বোলিং আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করেছে।

খালেদ জানতেন দলে নিজের জায়গা এই মুহূর্তে শক্তিশালী করা সহজ হবে না।

তিনি বলেন, ‘আমি যা করতে পারি তা হল নিয়মিত পারফর্ম করা। সবসময়ই লক্ষ্য থাকে, ভালো পারফরমেন্স করা।’

দেশের বাইরে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেট খেলার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে খালেদ বলেন, ‘এটি খুবই ভাল সুযোগ ছিল। যেহেতু এটি একটি বিশ্বব্যাপী টুর্নামেন্ট ছিল, তাই এখানে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন দলও খেলতে এসেছিল।’

তিনি আরও বলেন, ‘টুর্নামেন্টে পাঁচ দেশের ফ্র্যাঞ্চাইজি অংশ নেয়। আমরা সব দলের সাথেই খেলেছি। সবাই আমার খেলা দেখছে, এটা ভালো লেগেছে। আমি ভাল পারফর্ম করার চেষ্টা করেছি। কারণ যদি এখানে ভালো করি তাহলে আমি একটা স্বীকৃতি পাব এবং সবাই দেখবে যে আমি ভালো খেলছি।’

বাংলাদেশের পেস বোলিং আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করতে বিশ্ব মানের পেস বোলিং কোচ নিয়োগের মাধ্যমে নিজেদের ভূমিকা পালন করেছে বিসিবি। এছাড়াও বিশ্ব মানের বোলিং কোচ নিয়োগের মাধ্যমে অবদান রেখেছে বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো।

জিএসএল চলাকালীন খালেদকে কাছ থেকে দেখেছেন অস্ট্রেলিয়ার সাবেক স্পিডস্টার শন টেইট।

খালেদ বলেন, ‘আমি শন টেইটের সাথে কথা বলেছিলাম। একটি কথা বলেছিলেন তিনি, যা আমি বিপিএলের সময়ও বলেছিলাম। আমাকে সহজভাবে খেলার পরমার্শ দেন এবং বিভ্রান্ত না হতে বলেন। কারণ বিভ্রান্ত হলে অনেক কিছু এলোমেলো হয়ে যায়। যতটা সম্ভব সহজ এবং শান্ত থাকতে বলেছিলেন তিনি।’

স্থানীয় পেস বোলিং কোচদের কথাও উল্লেখ করেন খালেদ। বাংলাদেশের পেস বোলিংয়ের উন্নতিতে তাদেরও অবদান আছে বলে মনে করেন তিনি, ‘আমি আমাদের স্থানীয় কোচদের সাথে কথা বলেছি। বিশেষ করে নাজমুল ভাই এবং তালহা ভাইয়ের সাথে। খেলার আগের দিন আমি নাজমুল ভাইয়ের সাথেও কথা বলেছি, ম্যাচে কি করা উচিত।

স্থানীয় কোচরাও আমাদের উন্নতির জন্য তাদের টিপস দিয়েছেন।’

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
কক্সবাজার বিমানবন্দরে ইয়াবাসহ দুই কারবারি আটক
আত্রাই নদীর পানি বিপৎসীমার ওপরে হলেও কমতে শুরু করেছে পানি
ইয়েমেনে হুথিদের ‘জ্বালানি অবকাঠামো’তে হামলার দাবি ইসরাইলের
পেঁয়াজে আইপি নীতি পুনর্বিবেচনার দাবি
ট্রাম্প-পুতিনের আলাস্কা বৈঠক: পরবর্তী পদক্ষেপে ইউরোপীয় নেতৃবৃন্দ
কুয়াকাটায় সোনালী স্বপ্ন রোপণে ব্যস্ত কৃষকেরা
খাগড়াছড়িতে সাংবাদিকদের সঙ্গে জেলা পরিষদের মতবিনিময় সভা
ট্রাম্পের সঙ্গে ইউক্রেন শান্তি আলোচনা সুষ্ঠুভাবেই হয়েছে: পুতিন
দেশীয় সংস্কৃতির দিকে মনোনিবেশ সৌদি আরবের
রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে জুলাই সনদের পূর্ণাঙ্গ খসড়া প্রেরণ
১০